অফিসে মাঝে মাঝে বসের সঙ্গে কাজের দায়িত্ব পড়ে যায়। বেশ ভালো কথা কিন্তু সেই বস যদি হয় অপছন্দের তাহলে তার সঙ্গে কাজ করাটা যেন বিরক্তকর হয়ে উঠে। এ সময় মেজাজও হয়ে যায় খিটখিটে। কিন্তু মেজাজ খিটখিটে করে লাভ কি? চাকরি হারাতে না চাইলে তার সঙ্গে কাজ করতেই হবে। তবে অপছন্দের বসকে সামলে রেখে ঠাণ্ডা মাথায় কাজ করা যায় এমন কিছু কৌশল অবলম্বন করাই নিজের জন্য শ্রেয়।
১) বসের সমালোচনা করার আগে নিজেকে প্রশ্ন করুন, আপনি কি নিজের সেরাটা দিচ্ছেন? কর্মস্থানে আপনি কি অপরিহার্য? জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই নিজের মূল্যায়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিজের দুর্বল জায়গাগুলি খুঁজে বের করতে পারলে কাজে আরও উন্নতি করা সম্ভব। যদি শুধুমাত্র আপনার সঙ্গেই সিনিয়রের সমস্যা হচ্ছে, তাহলে সহকর্মীদের থেকে পরামর্শ নিতেই পারেন। হয়তো নিজের ত্রুটিগুলি নিজেই খুঁজে পাবেন
২) বসের অগ্রাধিকারকেই নিজের অগ্রাধিকার মনে করুন্। আপনার কাজই হচ্ছে বসের কাজের চাহিদা পূরণ করা। মনে রাখবেন, কর্মক্ষেত্রে কাজ মানেই টিমওয়ার্ক আর টিমের প্রধান বস। তাই বস যেভাবে নির্ধারণ করেন, তা ঠাণ্ডা মাথায় সেভাবে সাজাতে হবে।
৩) সমস্যাই বেড়ে চলেছে, যার কোনও সমাধান নেই। এই ধারণা প্রথমে মন থেকে দূর করে দিন। বরং কোন কোন ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে তা নিয়ে সিনিয়রের সঙ্গে বসে আলোচনা করুন। কথোপকথনে নানা সমস্যা মেটে অনায়াসে। তবে কথা বলার সময় মাথা ঠান্ডা রাখুন। দরকার হলে অন্য সিনিয়রদেরও উপস্থিত থাকতে বলুন। আপনার কথাবার্তাই কিন্তু আপনার ভাবমূর্তি। তাই কর্মক্ষেত্রে তা নষ্ট হতে দেবেন না।
৪) যদি বুঝতে পারেন আপনার বস আপনার সঙ্গে ইচ্ছাকৃত খারাপ আচরণ করছেন, তাহলে বিষয়টি একটু স্মার্টলি সামলান। সিনিয়রের কাছ থেকে অফিসিয়াল কাজগুলি ই-মেল মারফত নিন। যা যা কাজ আপনাকে দেওয়া হচ্ছে এবং আপনি করছেন তা এক জায়গায় নথিভুক্ত রাখুন। নিজের কাজের বিস্তারিত তথ্য ম্যানেজারকে ই-মেল করুন। অতিরিক্ত কাজের চাপ অনুভব করলে সেটাও ই-মেলের মাধ্যমেই তাঁকে জানান। তাহলে কাজের ক্ষেত্রে সমস্ত তথ্য প্রমাণ যেমন আপনার কাছে থাকবে। তেমনই বসের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের প্রয়োজনীয়তাও কম হবে।
৫) একান্তই যদি কাজের পরিবেশে মানিয়ে নিতে সমস্যা হয়, তাহলে ভিতর ভিতর নতুন চাকরি খুঁজতে শুরু করে দিন। নতুন পরিবেশে নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করতেই পারেন। যদি সম্ভব হয় ওই কর্মস্থানেই অন্য কোনও পদের জন্যও আবেদন করতে পারেন। এতে অন্য গ্রুপের সঙ্গে কাজের সুযোগ পাবেন।
৬) মনে রাখবেন চাকরি জীবনে প্রত্যেকেরই কিছু সুবিধা-অসুবিধা থাকে। অন্যের অধীনে থেকে অর্থ উপার্জন করার কাজটা একেবারেই সহজ নয়। তাই ছোটখাটো বিষয়গুলিকে এড়িয়ে চলাই বুদ্ধিমানের কাজ। কোন কথার কীভাবে উত্তর দিলে সাপও মরবে আর লাঠিও ভাঙবে না, তা নিজেই ঠিক করুন। মনে রাখবেন চাকরিটা কিন্তু আপনার রুজি-রুটি। তাই পেটে লাথি মেরে বসকে হারানোয় কোনও কৃতিত্ব নেই।
তথ্যসূত্র: দেশেবিদেশে ডটকম।