আবাসন খাতের সরকার স্বীকৃত একমাত্র সংগঠন রিয়েল এস্টেট এ্যান্ড হাউজিং এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাকে সু-পরিকল্পিত নগরায়নে রূপান্তরের পাশাপাশি নাগরিকদের মৌলিক চাহিদা আবাসন সমস্যা সমাধানে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে রিহ্যাব সদস্যরা।
রিহ্যাব সদস্যদের প্রথম ও প্রধান উদ্দেশ্যই হচ্ছে বাংলাদেশে পরিকল্পিত নগর গড়ে তোলা। এ লক্ষ্যকে সামনে রেখেই ২৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে সরকারের উন্নয়ন সহযোগী হিসাবে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি। শহরমূখী মানুষের জীবন ও জীবিকার প্রয়োজন মেটাতে রাজধানী ঢাকা সহ সারা দেশে রিহ্যাবের এক হাজারের মত সদস্য ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান তাদের মেধা ও শ্রম দিয়ে যাচ্ছে পরিকল্পিত নগর নির্মাণের জন্য। সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক পরিপত্রের মাধ্যমে রিহ্যাবের সদস্যপদ নেওয়া বাধ্যতামূলক করেছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ওই সিদ্ধান্তের কারনে রিহ্যাব এর সদস্য পদ ছাড়া আর কোন ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান রিয়েল এস্টেট ব্যবসা করতে পারবে না।
সকল ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানকে রিয়েল এস্টেট এ্যান্ড হাউজিং এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব) এর সদস্য পদ গ্রহনের জন্য নির্দেশ দিয়েছে। এছাড়া রিহ্যাব এর মেম্বার ছাড়া রাজউক থেকে কোন প্লান পাশ হবে না এমন কথাও বলেছেন রাজউকের চেয়ারম্যান। সরকারের পক্ষ থেকে এই সকল সিদ্ধান্তের পর রিহ্যাব এর মেম্বার নয় এমন অনেক প্রতিষ্ঠান যোগাযোগ শুরু করেছেন রিহ্যাব এর সদস্য হওয়ার জন্য। আমাদের আজকের আয়োজন তাদের জন্য।
নতুন সদস্য হবার যোগ্যতা : ১) রেজিস্ট্রেশন অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ এ্যান্ড ফার্মস হতে নিবন্ধিত নিয়ে রিয়েল এস্টেট ব্যবসার সাথে যুক্ত থাকতে হবে। ২) আবেদনকারী কোম্পানীকে অবশ্যই যথাযথ কর্তৃপক্ষ এর অনুমোদন নিয়ে অন্তত পক্ষে একটি প্রকল্পের কাজ করতে হবে এবং কাজের যথেষ্ট অগ্রগতি থাকতে হবে। ৩) ল্যান্ড ডেভেলপ কোম্পানীর ক্ষেত্রে অন্তত পক্ষে ৬.৫ বিঘা জমি ক্রয়ের প্রয়োজনীয় সকল ডকুমেন্ট থাকতে হবে। ৪) আবেদনকারী কোম্পানীর অবশ্যই বর্তমানে রানিং অফিস ও প্রয়োজনী লোকবল থাকতে হবে এবং স্পষ্ট ভাবে পড়া ও দেখা যায় এমন দৃশ্যমান সাইনবোর্ড ও নেমপ্লেট থাকতে হবে । ৫) আবেদনকৃত কোম্পানিকে অবশ্যই এক কোটি টাকার পেইড আপ ক্যাপিটাল থাকতে হবে। তবে যাদের পেইড আপ ক্যাপিটাল এক কোটি টাকার নিচে তাদের স্বল্প সময় মধ্যে এটা পুরণ করহে হবে।
নতুন সদস্য হবার প্রক্রিয়া : ক) কোম্পানীর অফিসিয়াল প্যাডে রিহ্যাবের প্রেসিডেন্ট বরাবর রিহ্যাবের সদস্য হতে আগ্রহী এ মর্মে পএ লিখতে হবে। খ) প্রয়োজনীয় সীল ও স্বাক্ষর প্রদান করে ডিক্লারেশন ও সার্টিফিকেশনকৃত আবেদন পএ জমা দিতে হবে। গ) প্রয়োজনীয় সীল ও স্বাক্ষর প্রদান করে নমিনেশন পএ জমা দিতে হবে ।
প্রয়োজনীয় যে সকল কাগজ-পত্র জমা দিতে হবে : ১) আবেদনকারী কোম্পানীর রেজিস্ট্রেশন অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ এ্যান্ড ফার্মস হতে নিবন্ধিত মেমোরেন্ডাম ও আর্টিকেল অব এসোসিয়েশন এর সত্যায়িত ফটোকপি। ২) কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কর্তৃক সত্যায়িত কোম্পানীর ইনকরপোরেশন সার্টিফিকেটের ফটোকপি। ৩) কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কর্তৃক সত্যায়িত কোম্পানীর সর্বশেষ প্রদানকৃত আয়কর প্রত্যয়ন পত্রের ফটোকপি। ৪) কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কর্তৃক সত্যায়িত কোম্পানীর সর্বশেষ প্রদানকৃত ভ্যাট সার্টিফিকেটের ফটোকপি।
৫) কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কর্তৃক সত্যায়িত কোম্পানীর সর্বশেষ হাল নাগাদকৃত ট্রেড লাইসেন্সের ফটোকপি, ৬) কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কর্তৃক সত্যায়িত কোম্পানীর সর্বশেষ হাল নাগাদকৃত কোম্পানীর চেয়ারম্যান, ভাইস-চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, অন্যান্য সকল পরিচালক ও কোম্পানীর পক্ষ হয়ে রিহ্যাবে যে কোম্পানীর প্রতিনিধিত্ব করবে তার সহ সকলের বাৎসরিক শেয়ার ক্যাপিটাল এবং শেয়ারহোল্ডার পরিচালকগনের তালিকা ও সামারী। ৭) কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ককর্তৃক সত্যায়িত কোম্পানীর সর্বশেষ হাল নাগাদকৃত কোম্পানীর চেয়ারম্যান, ভাইস-চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং অন্যান্য সকল পরিচালক সহ সকলের অন্য কোম্পানীর তালিকা ও সামারী।
৮) কোম্পানীর অফিসিয়াল প্যাডে কোম্পানীর সকল শেয়ারহোল্ডার পরিচালক ও কোম্পানীর পক্ষ হয়ে রিহ্যাবে যে কোম্পানীর প্রতিনিধিত্ব করবে তার তিনকপি ছবি ও ভোটার ওউ সহ জীবন-বৃতান্ত। ৯) কোম্পানীর অফিসিয়াল প্যাডে কোম্পানীর হস্তান্তরকৃত ও বর্তমানে রানিং সকল প্রজেক্টের বিস্তারিত বিবরণ। ১০) রাজউক, সিডিএ, কেডিএ অথবা অন্যান্য কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ল্যান্ড বা প্লট এর উপর অনুমোদনকৃত প্রজেক্টের নকশার কপি। ১১) কোম্পানীর অফিসিয়াল প্যাডে কোম্পানীর চেয়ারম্যান অথবা ব্যবস্থাপনা পরিচালক কর্তৃক সত্যায়িত কোম্পানীর সকল কর্মচারীর পদবী সহ তালিকা।
১২) রাজউক, সিডিএ অথবা কেডিএ এর অনুমোদন নম্বর সহ প্রেসে ছাপানো প্রজেক্ট প্রসপেক্টাস। ১৩) কোম্পানীর হস্তান্তরকৃত ও বর্তমানে রানিং সকল প্রজেক্টের দৃশ্যমান ছবি। ১৪) রাজউক, সিডিএ বা কেডিএ অথবা অন্যান্য কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত ও অন্তভূক্তি সার্টিফিকেটের সত্যায়িত ফটোকপি (ল্যান্ড ডেভেলপার কোম্পানীর ক্ষেএে)। ১৫) রিহ্যাব অফিসিয়াল কর্তৃপক্ষ কর্তৃক কোম্পানীর প্রধান অফিস এবং কোম্পানীর হস্তান্তরকৃত ও বর্তমানে রানিং সকল প্রজেক্টের প্রতিবেদন ।
উপরোক্ত প্রয়োজনীয় সকল কাগজ-পত্র জমা দেওয়ার পরে রিহ্যাব কর্তৃক কোম্পানীর চেয়ারম্যান, ভাইস-চেয়ারম্যান এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালকের স্বাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হবে এবং তা রিহ্যাবের পরিচানা পর্ষদে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে । রিহ্যাবের পরিচানা পর্ষদে অনুমোদন দিলে কোম্পানীটিকে রিহ্যাবের অফিসিয়াল ব্যাংক একাউন্টে ২৫,০০০ টাকা বাৎসরিক ফি সহ আরো ৩,০০,০০০ লক্ষ টাকা জমা দিতে হবে। টাকা প্রাপ্তি নিশ্চিত হওয়ার পরে রিহ্যাব কর্তৃপক্ষ কোম্পানীটিকে রিহ্যাবের সদস্য বলে ঘোষণা দিয়ে সদস্য নম্বরসহ সদস্য সার্টিফিকেট প্রদান করবে ।
রশিদ বাবু, জনসংযোগ কর্মকর্তা, রিহ্যাব।
তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট।