প্রতিদিন নয়টা পাঁচটা অফিস করে ক্লান্ত। প্রায় দিনই অফিসে বসের চোখ রাঙানো হাসি কিংবা কাজের চেয়েও বেশী কাজের চাপ। অফিস শেষ করে প্রতিদিন বাসের জন্য অপেক্ষা। সিট না পেয়ে বাসের মধ্যে সহযাত্রীর পায়ের পাড়া কিংবা রডসিটে ঝুলে ঝুলে বাসায় আসতে আসতে সূর্য আকাশ থেকে হারিয়ে যাওয়া। বাসায় ফিরে কখনও বাজারের ব্যাগ হাতে বাজারের দিকে দৌড়ানো কিংবা বউয়ের হাসির মাঝে চাপা অভিমানের দেখা।
আজকাল ছোট্ট বাবুটার সাথে অতিথির মত দেখা হয় ছুটির দিনটাতে যখন কিনা সে জেগে থাকে। বোধহয় বাবার চেহারা অদূর ভবিষ্যতে মনে করিয়ে দিতে হবে তাকে ফ্রেমে বাধা ছবি দেখিয়ে। এমনই চিত্র যখন দৃশ্যপটে তখন আপনি ভাবছেন আর চাকুরি নয়। এবার নিজেই হব উদ্যোক্তা। চাকুরি করব না চাকুরি দিব। কিন্তু উদ্যোক্তা হওয়াটা কি এতই সোজা…?
আত্মবিশ্বাস কতটুকু আপনার…?
আপনার নিজের কাছে সবার আগে প্রশ্ন করুন আপনার আত্মবিশ্বাস কোন স্তরের? যদি সর্বনিন্ম স্তরের হয়ে থাকে তবে বলব আগে নিজের আত্মবিশ্বাসকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে আনার চেষ্টা করুন। আমি পারব, আমার দ্বারা সম্ভব এ আত্মবিশ্বাস যখন নিজের মাঝে খুঁজে পাবেন শুধুমাত্র তখনই সম্ভব হবে আপনাকে দিয়ে উদ্যোক্তা হওয়া। শতভাগ আত্মবিশ্বাস থাকলেই আপনি নিঃসংকোচে এগিয়ে যেতে পারেন।
মধ্যম স্তরের আত্মবিশ্বাস নিয়ে এগোলেও চুড়ার দেখা পাবেন কিনা সন্দেহ আছে। তাই সর্বপ্রথম এবং সর্বোচ্চ চাই আত্মবিশ্বাস। আপনি কি পারবেন আর পারবেন না তা আপনি ছাড়া দ্বিতীয় কেউ ভাল বলতে পারবে না।
পরিকল্পনা কতটা বাস্তব সম্মত ও সময় উপযোগী আপনার…?
আপনার ব্যবসায় এর পরিকল্পনা কতটা মজবুত এবং কতটা সময় উপযোগী তা নির্ভর করবে আপনার দূরদর্শীতার উপর। আকাশকুসুম না ভেবে আপনার পরিকল্পনা যদি বাস্তব সম্মতভাবে প্রস্তুত করতে পারেন তবে তা নিয়ে সফলতার মুখ দেখাটা সহজ হবে। আপনার পরিকল্পনায় আপনার লক্ষ আপনার কাজের বিস্তারিত আপনাকে স্পষ্ট হতে হবে। অদূরদশী পরিকল্পনা আপনার উদ্যোক্তা হওয়ার ভিত শুরুতেই ধ্বংস করতে পারে।
কাজের প্রতি কতটা মনোযোগী আপনি…?
পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ শুরু করেছেন। আপনি একজন উদ্যোক্তা। কিন্তু কতটা মনোযোগী আপনি কজের প্রতি? আজ আপনার যা কাজ ছিল তা আগামী দিনের জন্য করবেন বলে রেখে দিয়েছেন। আপনার প্রতিযোগী কিন্তু বসে নেই। সে ঠিকই গুছিয়ে নিয়েছে তার কাজ। আপনাকে পেছনে ফেলে মাঠ থেকে আপনাকে বিদায় করতে তার প্রচেষ্টা কিন্তু নিরলস অব্যহত। সুতরাং আপনার কাজের মনোযোগীতা আর পরিশ্রম বাড়াতেই হবে যদি সফলতা পেতে হয়।
সম্পদের কতটুকু ব্যবহার আপনি করছেন…?
আপনার মুলধন যা ব্যবসায়ের কাছে আপনার দায়বদ্ধতা। তার কতটুকু আপনি সদ্ব্যবহার করতে পারছেন? আপনার ব্যবসায়ের সম্পদের কতটুকু আপনি সঠিক ভাবে ব্যবহার করছেন। যদি শতভাগ থেকে একটুও পিছিয়ে থাকেন তবে বলব আপনাকে এর জন্য মূল্য দিতে হবে সময়ের সাথে। আপনার কাছে যা ছিল তা যদি সঠিক উপায়ে ব্যবহার করতে পারতেন তবে যা অর্জন করতে পেরেছেন তার থেকেও বেশী অর্জন করতে পারতেন। আপনার সম্পদ বাড়ত প্রতিযোগীতার সর্মথ্যও বাড়ত।
যোগাযোগ ও কৌশলের ব্যবহার সঠিক তো আপনার…?
আপনার ব্যবসায়িক যোগাযোগ কতটা সফল ও সঠিক তা আপনার প্রাপ্তির সাথে যোগ দিন। যদি আপনার আশানুরুপ না হয়ে থাকে তবে সে দায়বদ্ধতা আপনার। কারন আপনি সঠিক পন্থায় তা ব্যবহার করতে পারেননি। সুযোগ এর সঠিক ব্যবহার করতে পারেননি, হতে পারেননি কৌশলীও। আপনার প্রতিযোগীরা সে সুযোগটা ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। আর আপনার উদ্যোক্তা হওয়ার পথে অন্তরায় হয়ে দাড়িয়েছে। তাই বলে কি নিজের অযোগ্যতাকে দায়ী করে বসে থাকবেন? মেটেও না নুতুন উদ্যোগে চলবে কর্মপ্রচেষ্টা।