প্রতিযোগিতার এই বাজারে একটু ভালো ভাবে বাঁচতে চাইলে পর্যাপ্ত অর্থ-বিত্তের বিকল্প নেই। কিন্তু চাকরি বা ছোটখাটো ব্যবসা করে বেশি আয় সম্ভব নয়। এক দিকে আয় সীমিত, আরেক দিকে অর্থে-বিত্তে বড় হওয়ার স্বপ। বিষয়টি মাঝেমধ্যে আমাদের অনেকই ভাবনায় ফেলে দেয়। কেউকেউ হতাশও হয়ে পড়েন। তবে এই অবস্থা যাদের তাদের জন্য একটা সুখবর নিয়ে এলেন অর্থ বিশেষজ্ঞরা।
তারা বলেছেন, লক্ষ্য নির্দিষ্ট রেখে কঠোর পরিশ্রম আর সঠিক পরিকল্পনা আপনাকে অভীষ্ট্য লক্ষ্যে পৌঁছে দিবে। আর আপনার যদি ধৈর্য্য থাকে তবে আয় যাই হোক আপনি বিত্তশালী হয়ে উঠবেন। তবে অর্থ বিশেষজ্ঞরা এ জন্য নয়টি অভ্যাস গড়ে তোলার পরামর্শ দিয়েছেন। বিজনেস ইনসাইডারের এক প্রতিবেদনের আলোকে এবার সেই নয়টি অভ্যাস সম্পর্কে জেনে নিন:
১. চিন্তাধারা বদলান:
টাকা জমানোর জন্য প্রথমে একটা আর্থিক লক্ষ্য নির্ধারণ করুন। এরপর বেতন তুলে বিভিন্ন বিল পরিশোধের পর অবশিষ্ট টাকা দিয়ে আপনাকে হিসাব করে চলুন। তবে এর থেকেই প্রতি মাসে কিছু টাকা আপনাকে জমাতে হবে ভবিষ্যতের জন্য। এভাবে কয়েক বছরের মধ্যেই আপনার বড় অঙ্কের টাকা জমে যাবে। তবে এর জন্য আপনার মনটাকে আগে ঠিক করে নিতে হবে।তাহলে দেখবেন, কম বেতনেও জীবনটা অনেক সহজ হয়ে যাবে।
২. যে জায়গায় পৌঁছতে চান দৃষ্টিটা সেই জায়গায় রাখুন:
অর্থ বিশেষজ্ঞরা সবসময়ই বলেন, ভবিষ্যতের জন্য টাকা জমানোর সবচেয়ে ভালো উপায় হলো পাঁচ বছরের একটা পরিকল্পনা গ্রহণ করা। তাহলেই লক্ষ্যে পৌঁছানো সহজ হবে।
৩. নিজের মনের মতো করে কাজ করুন:
কিভাবে টাকা খরচ করলে আপনার টাকা জমবে তা আপনি নিজের মতো করেই ঠিক করুন। এমনকি প্রতিদিন এ নিয়মগুলো বাস্তব জীবনে গড়ে তোলার অভ্যাস করুন। এই ভালো অভ্যাসগুলোই আপনার টাকা বাড়াবে।
৪. গোপনে নিজেকে ধনী ব্যক্তি হিসেবেই মনে করুন:
আপনার যত কম টাকাই থাকুক না কেন তবুও আপনি গোপনে নিজেকে ধনী মনে করুন। সবসময় মনে রাখবেন, কঠোর পরিশ্রম আর সঞ্চয় করার মানসিকতা তো আপনার আছে। তাই চিন্তা নেই। এগুলোই আপনার লক্ষ্যে পৌঁছাতে সাহায্য করবে। এমনকি যা আয় করবেন তার তুলনায় আপনার জীবন যাত্রার মান স্বাভাবিক রাখবেন তাতেও আপনার অর্থ বাড়বে।
৫. অবসরের ভাবনা আগেই ভাবুন:
কথায় আছে, ভবিষ্যতের ভাবনা ভাবাই জ্ঞানীর কাজ। তাই অবসরে যাওয়ার পর আপনার জীবন কিভাবে চলবে সে ভাবনা সময় থাকতেই ভেবে রাখুন। এজন্য যে চাকুরিই হোক না কেন প্রথম থেকেই টাকা জমাবেন। তাতে দিন দিন আপনার টাকার পরিমাণ বাড়বে।
৬. আয়-ব্যয় সম্পর্কে সবসময় সতর্ক থাকুন:
সবসময় আপনাকে আয়-ব্যয়ের খবর রাখতে হবে। কারণ আপনার একাইন্ট থেকে যদি শুধু টাকা খরচই হয় তাহলে আপনি সমস্যায় পড়বেন।এজন্য আয়-ব্যয়ের সামঞ্জস্যতা রক্ষায় আপনাকে সবসময় এগুলো সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে।
৭. ঋণ না করার চেষ্টা করবেন:
প্রত্যেক মানুষই তার জীবনের কোনো না কোনো পর্যায়ে ঋণ করে থাকে। আর এ ঋণের পরিমাণটা যদি অনেক হয় এবং তা পরিশোধ করতে যদি উচ্চ হারে সুদ দিতে হয় তাহলে বড়ই বিপদের কথা। এজন্য জীবনের ভালো সময়েই একটা জরুরি তহবিল করে নিন। তাহলে আপনাকে আর অনর্থক ঋণ করতে হবে না।
৮. আয় বৃদ্ধির চেষ্টা করুন:
দুই ভাবে আপনি আপনার আয় বাড়াতে পারেন। একটি হলো কম খরচ আর অন্যটি হলো টাকা জমানো। এছাড়া বাড়ি ভাড়া, পার্ট টাইম ও অবসরের পর পাওয়া সম্পদ দিয়েও আপনি আপনার আয় বাড়াতে পারেন।
৯. বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে চলার চেষ্টা করুন:
সবসময় নিজের নির্দেশিত পথে চললে সফলতা নাও আসতে পারে। কারণ অনেক সময় আমরা আবেগের বশে টাকা খরচ করার জন্য অনেক ভালো সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি। তাতে শুধু অর্থের অপচয় ঘটে। সেক্ষেত্রে কোনো কোনো খাতে কীভাবে টাকা খরচ করলে অর্থের পরিমাণ কমবে না তা জানা দরকার। আর এখানেই একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মেনে চলা দরকার।
তথ্যসূত্র: অর্থসূচক।