1. editor@islaminews.com : editorpost :
  2. jashimsarkar@gmail.com : jassemadmin :

কর্মসংস্থান প্রকল্পে ৭৫০ মিলিয়ন ডলার দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক

‘কর্মসংস্থান কর্মসূচিভিত্তিক নীতিকৌশল ঋণ সহায়তা’ নামে একটি প্রকল্পে ৭৫০ মিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। ২০১৯-২২ মেয়াদকালের এ প্রকল্পের প্রথম বছরের ২৫০ মিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা এরই মধ্যে অনুমোদন করেছে সংস্থাটি। বাংলাদেশের জন্য বিশ্বব্যাংক থেকে পাওয়া একক ঋণের মধ্যে এটি সর্ববৃহৎ।

বাংলাদেশ সরকারকে বাজেট সহায়তা হিসেবে এ ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। ঋণের বিপরীতে বাংলাদেশ সরকারকে ২ শতাংশ হারে সরল সুদ পরিশোধ করতে হবে। সচিবালয়ের নিজ কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এ কথা জানান।

বাংলাদেশে ‘কর্মসংস্থান কর্মসূচিভিত্তিক নীতিকৌশল উন্নয়ন সহায়তা’ শীর্ষক প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের ঋণ সহায়তার প্রথম কিস্তির অর্থের অনুমোদন পাওয়ার বিষয়টি জানানোর জন্য এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে অর্থ মন্ত্রণালয়। এ সময় অর্থ বিভাগের সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে নীতিকৌশল-বিষয়ক প্রকল্পে প্রায় ১০ বছরের মধ্যে এটিই বিশ্বব্যাংকের প্রথম ঋণ সহায়তা। এ প্রকল্পের আওতায় সরকারি কলকারখানা প্রতিষ্ঠা ও দেশী-বিদেশী বিনিয়োগের প্রতিবন্ধকতা দূর করার জন্য পুরনো আইন সংশোধন বা পরিবর্তন করে নতুন আইন ও নীতি প্রণয়ন করা হবে।

এর অংশ হিসেবে সরকার এরই মধ্যে ওয়ান স্টপ শপ আইন-২০১৮, শ্রম আইন (সংশোধন)-২০১৮, ওয়েজ আর্নার ওয়েলফেয়ার বোর্ড আইন-২০১৮ ও জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন-২০১৮ প্রণয়ন করেছে। নতুন কাস্টম আইন-২০১৮ মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর জাতীয় সংসদে পেশ করা হয়েছে। শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র আইন-২০১৮ ও কোম্পানি আইন (সংশোধন)-২০১৮ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।

জাতীয় পরিবেশ নীতি-২০১৮ প্রণয়ন করা হয়েছে। এছাড়া সরকারি চাকরিজীবীদের পৃথক পেনশন অফিস প্রতিষ্ঠা করে সব নাগরিকের একটি সর্বজনীন পেনশন পদ্ধতি চালু করার বিষয়টিও এ প্রকল্পের পরিকল্পনায় রয়েছে।

দেশে কর্মসংস্থান খাতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন নিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, এ কথা সত্য যে, গত কয়েক বছরে আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির তুলনায় কর্মসংস্থান বাড়েনি। নানা কারণে আমরা কর্মসংস্থানে পিছিয়ে পড়েছি। পাঁচ বছর আগে আমাদের কর্মসংস্থান অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অনুপাতে ২ দশমিক ৭ শতাংশ ছিল। এখন তা ১ দশমিক ৮ শতাংশে নেমে এসেছে। ফলে কর্মসংস্থানের বিষয়টি আমাদের নতুন করে ভাবতে হচ্ছে।\

আগামীতে লক্ষ্য হলো কর্মসংস্থান বাড়ানো। এজন্য বড় একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় ব্যবসা-বাণিজ্য, আমদানি-রফতানি সহজীকরণ ও কর্মপরিবেশ উন্নতকরণে আইন ও বিধি এবং নীতি-পদ্ধতি সংস্কার করা হবে। শিল্প খাতে কর্মসংস্থানের গতি বাড়াতে বাণিজ্য পরিবেশ আধুনিকায়ন, শ্রমিকের সুরক্ষা ব্যবস্থা জোরদারকরণ ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য বিশেষ নীতি কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।

প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের ঋণ সহায়তা প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী জানান, কর্মসংস্থান কর্মসূচিভিত্তিক নীতিকৌশল ঋণ সহায়তা প্রকল্পে মোট ৭৫০ মিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা দিতে রাজি হয়েছে বিশ্বব্যাংক। ২০১৯-২২ সাল পর্যন্ত তিন বছর মেয়াদি এ প্রকল্পের প্রথম বছরের ২৫০ মিলিয়ন ডলার এরই মধ্যে অনুমোদন পেয়েছে। বাংলাদেশের জন্য বিশ্বব্যাংক থেকে পাওয়া একক ঋণের মধ্যে এটিই সর্ববৃহৎ। সরকারকে মূলত বাজেট সহায়তা হিসেবে এ ঋণ দিচ্ছে সংস্থাটি। ঋণের বিপরীতে বাংলাদেশ সরকারকে ২ শতাংশ হারে সরল সুদ পরিশোধ করতে হবে।

এর আগে ঢাকায় অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত নিয়ে আমাদের করণীয় কী’ শীর্ষক এক সেমিনারে গত ১০ বছরে অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে ব্যাংক থেকে ২২ হাজার ৫০২ কোটি টাকা লোপাট হয়েছে বলে জানায় সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। সংস্থাটির ভাষ্য অনুযায়ী, ২০০৮ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি ১৪টি ব্যাংকের মাধ্যমে এসব অর্থ খোয়া গেছে।

বিষয়টি নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে অর্থমন্ত্রী বলেন, সিপিডি যে তথ্য প্রকাশ করেছে তা ঠিক নয়। তারা বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত সংবাদের ওপর ভিত্তি করে এটা করেছে। ব্যাংকিং খাতে অর্থ লোপাটের যে অভিযোগ করা হয়েছে, তা প্রকৃতপক্ষে লোপাট নয়। এর বড় অংশই প্রভিশন-সংক্রান্ত বিষয়। এসব অর্থ থেকে বেশকিছু টাকা ফেরত আসবে। আমি সিপিডির দাবিকে জাস্ট রাবিশ বলে মন্তব্য করেছি।

সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে ঋণ কেলেঙ্কারির জন্য গ্রাহকদের দায়ী করে দেয়া বিভিন্ন ব্যাংকের প্রধান কর্মকর্তাদের বক্তব্যকে গ্রহণ করেননি অর্থমন্ত্রী। আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ব্যাংকে ঋণ অনিয়মের জন্য শুধু গ্রাহককে দোষারোপ করলে হবে না। ঋণের বিষয়ে ব্যাংকগুলোর দায়বদ্ধতা আছে। একজন গ্রাহককে ঋণ দেয়ার আগে কেওয়াইসি দেখে বিনিয়োগ করা ব্যাংক কর্মকর্তাদের দায়িত্ব। অনিয়ম হলে এর দায়ভার দুই পক্ষকেই নিতে হবে।

এ সময় বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারির ঘটনায় ব্যাংকটির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল হাই বাচ্চুকে দায়ী করে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রতি আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন অর্থমন্ত্রী। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, বেসিক ব্যাংকের কেলেঙ্কারি নিয়ে অনুসন্ধানের জন্য দুদককে একটি দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল।

সংস্থাটি ব্যাংকটির সাবেক এমডি আব্দুল হাই বাচ্চুর বিরুদ্ধে অভিযোগ দিতে পারেনি। বাচ্চুকে নিয়ে তারা কী করেছে, আমি জানি না। তবে বাচ্চু একটা চোর ও বাটপার। সে একটি ব্যাংককে ধ্বংস করে দিয়েছে। তথ্যসূত্র: বানিক বার্তা।

More News Of This Category