শপিং মলগুলো পুরোপুরি না জমলেও কী উঠেছে, তা দেখার জন্য ভিড় হচ্ছে। সবে পাঁচ রমজান। ১০ রোজার পর ক্রেতাদের ভিড় বাড়ার আশা ব্যবসায়ীদের। দেশীয় বুটিকস ও বিদেশি পোশাক আমদানি করা দোকানগুলোয় এখন থেকেই ঈদের পোশাক শোভা পাচ্ছে। মেয়েদের পোশাকের রং, কাট ও নকশায় কিছুটা ভিন্নতা এসেছে। আর ভিনদেশি নামকরণের বাহারি পোশাকের চাহিদা এবারও তুঙ্গে।
হোক কুর্তি, কামিজ কিংবা টপ। কুঁচি দেওয়া নকশা প্রায় সবখানেই। বসুন্ধরার শপিং মলের বেশ কয়েকটি বুটিক শপ ঘুরে দেখা যায়, ছোট-বড় প্রায় সব ধরনের পোশাকেই কুঁচি আছে। কামিজ বা কুর্তির নিচের দিকে ছাড়াও হাতায় বাহারি ধরনের কুঁচি দেখা যাচ্ছে এখনকার পোশাকগুলোয়। বিবিয়ানার স্বত্বাধিকারী ফ্যাশন ডিজাইনার লিপি খন্দকার প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঈদে এবার উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন বলতে নানা ধরনের কুঁচিটাই প্রাধান্য পেয়েছে।’
বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সের আড়ংয়ে দেখা গেল টপ, কুর্তির বেশ চাহিদা। এখানকার বিক্রয় সহযোগী আমিনা আক্তার জানান, ঈদের প্রায় সব নকশাই চলে এসেছে। এবার লম্বাটে ধাঁচের পোশাক বেশি চলছে। এ ছাড়া ছোট টপের সঙ্গে একটু ঢোলা আকৃতির বিভিন্ন নকশার প্যান্টও চলছে বেশ। তবে এসব পোশাকের মূল ক্রেতা তরুণীরা। আর বর্ষা মৌসুম বলে সুতির পোশাকের চাহিদা অনেক। পোশাকের ব্র্যান্ড সেইলরের ডিজাইনার সাদিয়া আফরোজ সোমা বলেন, তাঁরা সিল্কের ওপরে বিভিন্ন নকশার পোশাক এনেছেন। আরও জানালেন, এবার হালকা রঙের পোশাকের চাহিদা বেশি।
বসুন্ধরায় ঘুরছেন বুশরা আহমেদ ও লিসা রহমান। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকেই বিভিন্ন দোকানে ঢুঁ মারছেন। বুশরা বলেন, ‘সময়ের কথা চিন্তা করে পোশাক কিনতে হবে। এবার যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে ঈদেও একই রকম থাকবে। সে জন্য সুতির পোশাক কিনব। তবে ঈদে তো জমকালো একটি পোশাক কিনতেই হয়।’ সেই জমকালো পোশাক হিসেবে বুশরা ও লিসার পছন্দ গাউন। দেশী-দশেও তেমন ভিড় নেই। ক্রেতারা এসে ঘুরে যাচ্ছেন। কে-ক্রাফটের বিক্রয়কর্মী মাহবুবুর রহমান বলেন, কুর্তি কিছু বিক্রি হয়েছে। ১০ রোজা পার হাওয়ার পর বোঝা যাবে বেচাকেনার হাল।
আকাশ এমনিতেই গোমড়া মুখে রয়েছে। থেমে থেমে টিপ টিপ বৃষ্টি। রাজধানীর গাউছিয়া, চাঁদনি চক, বসুন্ধরা ও ধানমন্ডির কয়েকটি শপিং মল ঘুরে দেখা গেল, পোশাক সাজিয়ে ক্রেতার অপেক্ষায় বিক্রেতারা। কেউ ঘুরে দেখছেন কী ধরনের পোশাক উঠেছে। পছন্দ হলে কেউ কেউ কিনেও নিচ্ছেন।
গাউছিয়া মার্কেটে শিউলি আক্তার মেয়েকে নিয়ে এসেছেন। মেয়ে ঐশী আক্তার বন্ধুদের কাছে ‘বারবি গাউনের’ নাম শুনেছে। মার্কেটে এসে সেটাই খুঁজছেন। শিউলি বলেন, ‘ভিড়ের মধ্য ঠেলাঠেলি করব না বলেই আগে আসছি।’ এ মার্কেটের বৈশাখী ফ্যাশনের বিক্রয়কর্মী অমিত কুমার জানালেন, ‘বারবি গাউন’ এবার বেশি চলবে। একতা বুটিকসের মো. শাহিনও জানালেন, ক্রেতারা এই পোশাকটি খুঁজছেন। দোকানিরা জানান, ‘বারবি গাউন’ মূলত চীন থেকে আসছে। এর ওপরের দিকটা বিভিন্ন পুঁতি-চুমকি ও পাথরের কাজ করা থাকে এবং নিচের দিকে নেটের কাপড়ের বেশ ফোলানো হয়। দাম পড়বে ৩ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত।
চাঁদনি চকের ফ্যাশন ওয়ার্ল্ড নামের দোকানে বেশ ভিড়। এখানে মূলত আন-স্টিচ পোশাক পাওয়া যায়। এখানেও গাউনের চাহিদা বেশ। বসুন্ধরার বিভিন্ন দোকানেও ভারত ও চীন থেকে আসা বিভিন্ন ধরনের গাউন নকশার পোশাক শোভা পাচ্ছে। বিক্রেতারা জানান, গত দুই বছর ধরেই এই পোশাকটি কিনছে সবাই। এ মার্কেটের ‘চিতাহ ডিজাইন লি.’ নামের দোকানে ক্রেতারা এসে গাউন খুঁজছেন। ক্রেতাদের গাউনপ্রীতি নিয়ে ফারিয়া আলম নামের এক ক্রেতা বলেন, ‘ঘরে বসে বিশ্বে কী ট্রেন্ড চলছে, তা দেখা যায়। আর আমাদের এখানে বলিউড-হলিউডের প্রভাব অনেক। দোকানিরাও সেভাবে পোশাক নিয়ে আসেন।’
তথ্যসূত্র: প্রথমআলো ডটকম।