বাইরে থেকে দেখলে ফেসবুকের চাকরি থেকে ইস্তফা দেওয়ার সেরা সময় এখন। তথ্য কেলেঙ্কারি নিয়ে এমন দুর্দিন, এমন চাপ আগে কখনো আসেনি। তবু ঊর্ধ্বতন কর্মীদের কেউই কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি ছেড়ে যাননি। শুধু দুর্দিনে না, শীর্ষ নির্বাহীদের তালিকায় তেমন কোনো পরিবর্তন প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দেখা যায়নি। বিভাগ বদলেছে, কাজের ধরন বদলেছে, কেউ কেউ নতুন দায়িত্ব পেয়েছেন। তবে কেউই চাকরি ছেড়ে যাননি।
২০১৬ সালের শুরুতে টুইটারের নির্বাহী দলে যে ১০ সদস্য ছিলেন, তাঁদের মাত্র ৩ জন এখন সেখানে কাজ করেন। ১৪ মাস আগে আইপিওর পর থেকে চিফ ফিন্যান্সিয়াল অফিসার, তিন ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং জেনারেল কাউন্সেল হারিয়েছে স্ন্যাপচ্যাট। আর আইপিওর আগেই এক রকম ঝেড়ে সাজানো হয়েছে উবার। ফেসবুক সেখানে ব্যতিক্রম।
ব্যাপারটা এমন না যে অন্য প্রতিষ্ঠানে বেশি বেতনে তাঁদের কাজের সুযোগ নেই। প্রধান নির্বাহী হওয়ার যোগ্যতা রাখেন এমন কর্মীর সংখ্যা অ্যাপল-গুগলের চেয়ে ফেসবুকেই বেশি। তবে কেন তাঁরা ফেসবুক ছাড়েন না? কারণটা এভাবে বলেছেন প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা মাইক শ্রোফার, ‘এর (ফেসবুক) উদ্দেশ্য এবং মানুষ।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘শেরিল স্যান্ডবার্গ, মার্ক জাকারবার্গ, ক্রিস কক্স চোখ বন্ধ করে যেখানেই আঙুল ফেলবেন, চমৎকার একজন মানুষ পাবেন।’ সেরা সহকর্মীদের ব্যাপার তো বোঝা গেল। আর উদ্দেশ্য? ক্রিস বলেন, ‘আমার মনে হয়, আমি বড় পরিবর্তন আনতে পারব। যত দিন পর্যন্ত আমার কিংবা তাঁদের মনে না হবে যে আমি আর সে অবদান রাখতে পারছি না, তত দিন কাজ করে যাব।’
আরেকটা কারণ হলো, ফেসবুকের ঊর্ধ্বতন কর্মীদের অনেকেই ‘দ্য মার্ক জাকারবার্গ’ হয়ে ওঠার আগে থেকেই তাঁকে চেনেন। কাজের বাইরে তাঁরা বন্ধু। ফেসবুকের প্রথম কর্মীদের একজন নাওমি গ্লেইট। তিনি একবার সহকর্মীদের সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘তাঁদের সঙ্গে আমি যেকোনো কাজ করতে রাজি। সেটা যদি টয়লেট পরিষ্কারও হয়, তাতেও সমস্যা নেই।’
মার্ক জাকারবার্গ আর প্রধান পণ্য কর্মকর্তা ক্রিস কক্সের বাসা কাছাকাছি। মাঝেমধ্যে একসঙ্গে ছুটি কাটাতে যেতেও দেখা যায় তাঁদের। আর এই দুজনের স্ত্রীও এখন নাওমি গ্লেইটের বন্ধু। সব মিলিয়ে এক পরিবার যেন। সে সম্পর্কও নিশ্চয় একটা কারণ।
তথ্যসূত্র: রিকোড