চাহিদার চাপ আর ইরান চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে আসার ঘোষণার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দামে। বাড়তে শুরু করেছে অপরিশোধিত তেলের দাম। এতে এশিয়ার জ্বালানি খাতের কোম্পানি ও শেয়ারবাজার নড়েচড়ে বসেছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে বহুজাতিক পারমাণবিক চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার ঘোষণা দেন। এ ঘোষণার ফলে অপরিশোধিত তেলের সরবরাহ কমে যাবে—এমন আশঙ্কা করা হচ্ছে। অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের ঘোষণার পর তেলের বাজারে আগুন লাগবে, তা আগেই প্রত্যাশিত ছিল। গত নভেম্বর থেকেই তেলের দাম বেড়ে যেতে পারে—এমন ধারণা করা হচ্ছিল।
ট্রাম্পের ওই ঘোষণার সময় দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রেও অপরিশোধিত তেলের মজুত কমেছে। তেল উৎপাদনকারী ভেনেজুয়েলা অর্থনৈতিক সমস্যায় রয়েছে। এর পাশাপাশি পেট্রোলিয়াম রপ্তানিকারক দেশগুলোর জোট ও রাশিয়ার চাপ বাড়ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ফরেন এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠান ওয়ান্ডার এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলের প্রধান স্টিফেন ইনেস বলেন, ‘চাহিদা ও সরবরাহ সূচকের প্রেক্ষাপটে ইরান চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে আসার ঘটনার পর সরবরাহ ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এতে অপরিশোধিত তেল লেনদেনের সক্রিয়তা বেড়েছে।’
ভেনেজুয়েলায় উৎপাদন কমে যাওয়ায় তেল রপ্তানিকারক দেশগুলোর সংগঠন ওপেক ও ওপেকভুক্ত নয়—এমন দেশগুলো থেকে যদি উৎপাদন বাড়ানো না হয় এবং প্রত্যাশিতভাবে ইরান থেকে তেলের সরবরাহ কমে, তবে দাম আরও বাড়বে। এখন পরিস্থিতির কোন দিকে যাবে, তা জানতে ভিয়েনায় আগামী ২১ জুন অনুষ্ঠেয় ওপেক সভার দিকে চোখ রাখতে হবে।
তেলের দাম বাড়ার প্রভাব ইতিমধ্যে এশিয়ার বিভিন্ন শেয়ারবাজার ও তেল কোম্পানির ওপরে পড়েছে। লাভবান হচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। হংকং, সাংহাই, টোকিও, সিডনি ও সিউল পুঁজিবাজারে ইতিবাচক ধারা অব্যাহত আছে। প্রুডেন্টশিয়াল ফিন্যান্সিয়ালের প্রধান বিপণন পরিকল্পনাবিদ কুইন্সি করসবি ব্লুমবার্গ নিউজকে বলেন, উত্তর কোরিয়া ঘিরে ইতিবাচক কথার পাশাপাশি আয় নিয়ে ইতিবাচক অনেক শিরোনাম বজায় থাকলেও বাজারে প্রতিযোগিতা রয়েই গেছে।
তেল ব্যবসায়ীরা এখন চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য আলোচনার দিকেই তাকিয়ে। চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের অর্থনৈতিক উপদেষ্টারা উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের জন্য আগামী সপ্তাহে ওয়াশিংটন যাচ্ছেন।
তথ্যসূত্র: প্রথমআলো ডটকম।