কিছু মানুষ আছে যারা ধ্বংসস্তুপ থেকেও গড়তে জানে। আবার কিছূ মানুষ আছে যারা শুধু ভাঙতেই জানে। ভাঙা গড়ার মাঝে শব্দ দুটি আটকে থাকলেও বিস্তর ব্যবধান কিন্তু আছেই। কেউ ভাল কিছুকে ভাল হিসেবেই দেখে আবার অনেকে আছে যারা ভাল কিছুর মধ্যেও খারাপ খুৃঁজে ফেরে। এখন কথা হচ্ছে আপনি কি ভাবে দেখবেন? আপনার পরিবার থেকে পাওয়া শিক্ষা আর আপনার দৃষ্টিভঙ্গিই বলে দিবে সেটি। কারন পজেটিভ মানুষেরা পজিটিভ চিন্তা করে সব সময়।
আপনি বার বার চেষ্টা করেও বিফল হচ্ছেন। সফলতার দেখা মিলছে না। তার মানে কি আপনার দ্বারা কাজটি কখনোই সম্ভব নয়। নাকি কাজটি আপনার জন্য নয়। বিশ্বাস করুন আর নাই করুন কথাটি চিন্তা করে দেখুন। আল্লাহপাক ততক্ষন পর্যন্ত আপনাকে কোন একটি জিনিস দিবেন না যতক্ষন না আপনি সেই জিনিসটির রক্ষনাবেক্ষন ও পরিচালনার সমর্থ্য অর্জন না করেন।
আপনি কি কোন একজন রিকশাচালক কিংবা কোন একজন ভিখারীকে দেখেছেন কোন একটা বড় প্রতিষ্ঠানের সিইওর দায়িত্ব পালন করতে। আপনি হয়ত পড়াশুনা শেষ করতেই পারেন নি ঠিক তখনই আপনার বয়সেরই কেউ আপনার সামনে বড় বড় কোম্পানীর মালিক হয়ে বসে আছেন। ভাবতে পারেন তার কপাল আট আঙুল। আর আপনারটা পোড়া। কিন্তু বিশ্বাস করুন ওই জায়গাটির জন্য সেই যোগ্য। আপনি নন। আপনাকে যদি ওই কোম্পানীর দায়িত্ব এক দিনের জন্যও দেওয়া হয় তো আপনি চালাতে পারবেন না।
অনেকেরই অভিযোগ দেশে কর্মসংস্থান নাই। কিন্ত আমি বলব ভিন্ন কথা। আমার দেশে যোগ্য লোকেরও অভাব আছে। পত্র পত্রিকা খুললে হাজারটা চাকুরির বিজ্ঞাপন চােখ এড়াতে পারে না। কিন্তু কয় জনই বা ওই চাকুরির জন্য যোগ্যতা নিয়ে হাজির হই। একটি কথা জানুন আপনি যোগ্য হলে কোন প্রতিষ্ঠানই আপনাকে কাজে লাগানোর সুযোগ হাত ছাড়া করবে না। সেই সাথে কোন প্রতিষ্ঠানই চাইবে না আপনার অযোগ্যতার দায় নিয়ে তার প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি করতে।
ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় পড়াশুনার সুবাদে ২০০২ সাল থেকে মার্কেটিং এর ধারনা নেওয়ার শরু করে এক যুগ পার করেছি মার্কেটিং এর বই পড়ে। প্রতি বছর নতুন নতুন বই। আর ঘুরে ফিরে পুরাতন বিষয়ের পড়া গুলোই গিলতে গিলতে বমি করে দেওয়ার মত অবস্থায় এসে অনুধাবন করতে পারলাম মার্কেটে গিয়ে আমার একটা দুই টাকার ব্লেড বেচার ক্ষমতা হয়নি। আমি কিনা মার্কেটিং এর ষ্টুডেন্ট। শেষটাতে এসে ঠিকই নিজেকে গড়তে রাস্তায় নামতে হয়েছে দূর্বল একটি কোম্পানীর বিক্রয়কর্মী হিসেবে। আমার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিক্রয়কর্মীর গুনাবলী শিখালেও প্রাকটিক্যাল বিক্রয় প্রক্রিয়া শেখায়নি।
একটি কথা সব সময় স্মরন রাখুন যে কোন কাজের ক্ষেত্রে আপনার কাছে যা আছে তা আপনার জন্য সুযোগ। আর যা নেই তার চিন্তা করে সময় নষ্ট করাই বৃথা। তাহলে আপনাকে কেউ যোগ্য করে তুলবে এ চিন্তা বাদ দিয়ে নিজেই কেন চেষ্টা করেন না যোগ্য হওয়ার জন্য। শুরুটা ছোট থেকেই শুরু হলে দোষের কি। বড় কিছুর জন্য আপনি যখন তৈরী হবেন তখন বড় কিছু আপনার কাছে ধরা দিবে আপসেই।
বড় মানুষেরা বড় চিন্তা করে। ছোটরা তাদের চিন্তার বাস্তবায়ন থেকে শিখে। আপনি যখন বড় হবেন তখন আপনার কাছ থেকে মানুষ শিখবে। এখন আপনি শিখে নিন যতটা পারেন তাদের কাছ থেকে। শেখার জন্য তো সুদুর চীন দেশে যাওয়ার নির্দেশনা আছে আপনি কোথা থেকে কোথায় গিয়েছেন? নিজ জেলার বাইরে হয়ত অনেকেই যাননি।
জীবনে বড় হবার লক্ষ রাখুন আর তার দিকে ছুটে চলুন। তবে বড় হতে গিয়ে লোভী হয়ে না যান। লোভ মানুষকে ধ্বংস করে। সেই সাথে সর্বশান্ত করতেও দেরী করে না। শেয়ার বাজারে যারা কয়েক বছর আগে অতি শর্টকাটে বড় হওয়ার রাস্তা ধরেছিলেন তাদের থেকে শিক্ষা নিতে পারেন এ ব্যাপারে। ভরসা তার উপর করুন যে বিশ্বস্ত। বিশ্বাস করুন এবং মূল্যায়ন করুন সম্পর্ক গুলোকে। কানেক্টিভিটি বাড়াতে থাকুন সেই সাথে যোগ্যতার ঠিলায় কিছু রাখার চেষ্টা করুন। পরিশ্রমের সমন্বয় ঘটিয়ে সময়ের স্রোতে ভেসে পাল ওড়ান। সময়কে স্রোতে ভাসিয়ে দিয়েন না। সফলতা তো সময়ের ব্যাপার মাত্র।
মাসুদুর রহমান মাসুদ
উদ্যোক্তার খোঁজে ডটকম।