দিনটা আরেকটু বড় হলে ভাল হত, এমন চিন্তা কতবার করেছেন! জীবনে ব্যস্ততা বাড়লেও দিনের পরিধি তো আর বাড়ে না। আর তাই সময়ের সীমারেখা মেনেই কাজ করে যেতে হয়। কাজেই বাড়তি সময়ের চিন্তা না করে, হাতে থাকা সময়টুকু কিভাবে আরো বেশি কাজে লাগানো যায় তা শিখে নিতে হবে। আর যদি সত্যিই এই জাদু জেনে যান, তাহলে দেখবেন সব কাজ সেরে নিজের জন্যও সময় বের করতে পারছেন। আসুন জেনে নেই সময়কে কাজে লাগানোর ৮টি উপায়।
১. কাজের তালিকা তৈরি করুন
আগের দিন রাতে পরদিনের কাজের তালিকা তৈরি করে রাখলে তা ভীষণ কাজে দেবে। প্রথমত, আগামীকাল কী কী কাজ করবেন তা মনে রাখতে গিয়ে দুশ্চিন্তায় ঘুম হারাম করার প্রয়োজন পড়ে না। দ্বিতীয়ত, সকালে উঠেই জানা থাকে কি কি করতে হবে, ফলে অনেকটা সময় বেঁচে যায়। কাজের গুরুত্ব বিবেচনা করে সাজিয়ে নিতে পারেন তালিকা, একেকটি কাজ শেষ করার পর দেখবেন তালিকা থেকে বাদ দিয়ে দিতে ভুলবেন না যেন।
২. মোবাইলের নোটিফিকেশন বন্ধ রাখুন
যখন আপনি মনোযোগ দিয়ে একটি কাজ করার চেষ্টা করছেন, তখন একটু পরপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ইমেইল কিংবা টেক্সট মেসেজের নোটিফিকেশনের টিং টিং শব্দ বেজে উঠলে তা আপনার মনোযোগ অন্যদিকে নিয়ে যাবে, আবারও কাজে মন দিতে তখন সময় লাগবে।
৩. ‘না’ বলতে শিখুন
আমরা একসঙ্গে সবকিছু করতে পারি না – এই বাস্তবতাকে মেনে নিন। মাঝে মাঝে ‘না’ বললে আপনি এমন সব কাজে সময় দিতে পারবেন যা গুরুত্বপূর্ণ এবং আপনার জন্য লাভজনক হবে।
৪. এক ধরনের কাজগুলোকে শ্রেণীবদ্ধ করুন
এই পন্থা তেমন একটা কার্যকর মনে নাও হতে পারে। কিন্তু একই ধরনের কাজগুলো একেবারে করে ফেলাটা সহজ হয়। আর সত্যিই তা আপনার অনেক সময় বাঁচিয়ে দেয়। কাজ শ্রেণীবদ্ধ করে ফেললে আপনার মনোযোগও অটুট থাকবে, বারবার ভিন্ন ভিন্ন কাজে মন দিতে হবে না।
৫. কম্পিউটার থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন
আমাদের মনোযোগ দেয়ার ক্ষমতা দিন ভেদে ২০ মিনিট থেকে সাড়ে ৯ সেকেন্ড পর্যন্ত হতে পারে। তবে মানুষের মস্তিষ্ক কোনোভাবেই টানা ৮ ঘন্টা ডেস্কের সামনে বসে কাজে মন দেয়ার জন্য তৈরি নয়। কাজের ফাঁকে সুযোগ পেলেই বিরতি নেয়ার চেষ্টা করুন। এই ছোট ছোট বিরতি আপনার মনোনিবেশ করার ক্ষমতাকে বাড়িয়ে দেবে, শরীরে সহজে ক্লান্তি আসবে না, পেশির ব্যথা হবে না এবং মস্তিষ্ককে সজাগ রাখবে। ফলে কাজও হবে ভাল।
৬. দায়িত্ব ভাগ করে নিন
সব কাজ একা করলে যে আপনার কার্যক্ষমতা প্রকাশ পাবে তা কিন্তু নয়। বরং এভাবে আপনি খেটেই যাচ্ছেন, কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো ঠিকমতো করা হচ্ছে না। কিছু কাজ কি অন্য কাউকে দেয়া যায়? আপনার মনের মতো করে কাজগুলো কেউ করবে এতটা বিশ্বাস হয়ত করা যায় না, কিন্তু আপনার সময়টুকু এর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ কাজে দিলে তা হবে সঠিক সিদ্ধান্ত।
৭. ফেইসবুক থেকে দূরে
আজকাল ফেইসবুক আমাদের অনেক কাজে লাগছে। কিন্তু এটাও অস্বীকার করার উপায় নেই যে ফেইসবুকের কারণে আমাদের অনেক সময় নষ্ট হচ্ছে প্রতিদিন। যদি কাজের খাতিরেই আপনাকে ফেইসবুক ব্যবহার করতে হয়, তাহলে সারাদিন ফেসবুক খুলে রাখবেন না। যখন প্রয়োজন হবে শুধুমাত্র তখনই ব্যবহার করুন, বাকি সময়টা লগআউট করে রাখুন।
৮. ব্যায়াম
কার্যক্ষমতা বাড়ানোর একটি দারুণ উপায় হল শরীরকে সতেজ রাখা। ব্যায়াম আমাদের দেহ এবং মস্তিষ্কের রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে তোলে, যা আমাদের শরীরকে আরও সতেজ করে তোলে। মাঝে মাঝেই এমন হয়, আমরা যত ব্যস্ত হয়ে পড়ি ততই ব্যায়াম করার সময় পাই না। কিন্তু ব্যায়াম করার ফলে আমাদের দেহের যেমন উপকার হয়, তেমনি প্রাত্যহিক জীবনেও আমাদের কার্যক্ষমতা বেড়ে যায় বহুগুণ। নিয়মিত ব্যায়াম আপনাকে রাখবে দুশ্চিন্তামুক্ত, কর্মব্যস্ত জীবনে যা অন্যতম বড় সমস্যা।
তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট।