চলার পথে অনেক বাধাবিপত্তি আসে, আসে হতাশাও। তাই সাফল্যের জন্য মাঝেমধ্যে প্রয়োজন হয় অনুপ্রেরণার, দরকার হয় উৎসাহের। নিজেকে নিজে সাহস দেওয়া, আত্মবিশ্বাসী হওয়াই মূল কথা। নিজের মধ্যেই নিজের কাজের অনুপ্রেরণা খুঁজে নিতে হবে। এই সাতটি বিষয় মাথায় রাখুন, সাফল্য এই সূত্র ধরেই আসতে পারে!
কাজে আন্তরিক হওয়া
আপনার পেশা যা-ই হোক, সেটাকেই আপন করে নিয়ে কাজের প্রতি আন্তরিক হতে হবে। কাজে ফাঁকি দেওয়া যাবে না। সাফল্যের চূড়ান্ত সীমায় পৌঁছাতে আপনাকে লক্ষ্য স্থির রেখে কাজ করে যেতে হবে। নিতে হবে সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছার সংকল্প। নিজেকে নিজে বলতে হবে, ‘আমার কাজের ক্ষেত্রে আমিই সেরা।’ দেখবেন, আপনার চিন্তাভাবনা উন্নত হবে। তাই অযথা সময় নষ্ট না করে এখনই আন্তরিক হয়ে কাজে লেগে পড়ুন।
আপনার দুর্বলতা ও প্রতিবন্ধকতাগুলো জানুন
আপনার দুর্বলতার জায়গাটা কী? কোন জায়গাটায় আপনার দক্ষতার ঘাটতি আছে? কোন গুণটা আপনার নেই? নিজের ভুল বা ঘাটতি সাধারণত নিজের চোখে ধরা পড়ে না। তাই আপনার আশপাশের মানুষদের জিজ্ঞেস করুন, আপনাকে যারা ভালোভাবে চেনেন, তাদের জিজ্ঞেস করুন আপনার দোষ-ত্রুটি বা ঘাটতিগুলো খুঁজে দিতে। অনেকের মত পর্যালোচনা করে খুঁজে বের করুন আপনার দুর্বলতা। তারপর কীভাবে সেই দুর্বলতা কমিয়ে আনা যায়, এ জন্য পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যান।
সঠিক মানুষের সঙ্গে থাকুন
‘সঠিক মানুষ’ কারা? যারা আপনার ভালো চান এবং যারা নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে জয়ী, তারাই সঠিক মানুষ। এমন মানুষের সঙ্গে মিশবেন, যারা অযথা সময় নষ্ট করে না, যাদের নিজস্ব লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য আছে। এমন মানুষের সঙ্গে চলাফেরা করুন, যারা উচ্চাকাঙ্ক্ষী এবং ইতিবাচক মানসিকতার। সফল হতে হলে সফলদের সঙ্গে থাকুন। নেতিবাচক মনের মানুষদের থেকে দূরে থাকাই ভালো। এরা আপনার ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে এবং আপনাকে টেনে নিচে নামাবে!
স্বাস্থ্যের প্রতি খেয়াল রাখুন
স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। তাই নিজের স্বাস্থ্যের প্রতি যথেষ্ট খেয়াল রাখুন। শরীর ঠিক না থাকলে কোনো কাজই ঠিকভাবে করতে পারবেন না। শরীর ঠিক রাখতে ঠিকঠাক পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে এবং করতে হবে নিয়মিত শরীরচর্চা। রাতে দেরি করে না ঘুমিয়ে আগেভাগে ঘুমান, যাতে ভোরে ওঠা যায়।
নিজেকে সেরা ভাবুন
মোহাম্মদ আলীকে বলা হয় সর্বকালের সেরা বক্সার। এ কথা তিনি নিজেও জানতেন। তাইতো সেই সাদা-কালো যুগের এক ভিডিও ক্লিপে আমরা দেখি, মোহাম্মদ আলী নিজের সম্পর্কে বলছেন, ‘I am the greatest.’ আমিই সেরা—এই বাক্যটি আপনি যদি নিজের মনে ধারণ না করেন, তাহলে আপনার পক্ষে নিজের মনোবল চাঙা রাখা মুশকিল। আবার নিজেকে সেরা বানানোর জন্য অক্লান্ত পরিশ্রমও করতে হবে, শুধু সেরা ভাবলে চলবে না। আপনি নিজেকে যা ভাববেন, মন থেকে যা হতে চাইবেন, আপনি একদিন তা-ই হবেন। ভালো মানুষ হতে চাইলে ভালো মানুষ হবেন। সেরাদের সেরা হতে চাইলে সেরাই হবেন। যার নিজের ওপর বিশ্বাস নেই, নিজের সামর্থ্যের ওপর ভরসা নেই, সে কখনো জয়ী হতে পারে না।
নিজের সঙ্গে সুন্দর ব্যবহার করুন
নিজের মনের সঙ্গে কথা বলুন। গঠনমূলক কথা বলুন, চিন্তাভাবনাও গঠনমূলক করুন। অন্যের সম্পর্কে খারাপ চিন্তা মনের মধ্যে ঘুরপাক খেলে নিজের মনটাও খারাপ চিন্তায় ভরে যাবে। তার চেয়ে নিজেকে বলুন, ‘আমি নিজেকে ভালোবাসি’, ‘আমি এটা করতে পারি’, ‘আমি আমার কাজকে ভালোবাসি’। এগুলো কিন্তু নিজেকে নিজে মিথ্যা বলা নয়, বরং অগ্রিম সত্য হিসেবে ধরে নিন। কারণ, এভাবে চললে একদিন আপনি এগুলোকে সত্য বানাতে পারবেন। নিজেকে আপনি যে অবস্থায় দেখতে চান, যা বানাতে চান ভবিষ্যতে, সেভাবেই নিজের সঙ্গে কথা বলুন।
এগিয়ে যান
নিজের ভেতর তাড়া আনুন। সেই তাড়াই আপনাকে সামনে এগিয়ে নেবে। অযথা সময় নষ্ট করবেন না। ভালো কোনো পথ পেলে দেরি না করে সেই পথে হাঁটতে শুরু করে দিন। যত দ্রুত আপনি এগোবেন, আপনার উন্নতি ততই এগিয়ে আসবে। আর আপনার উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে আপনি নিজেকে ততই ভালোবাসতে শুরু করবেন। নিজেকে ভালোবেসে এগিয়ে যান সাফল্যের দিকে, কেউ আপনার পথের বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারবে না।
তথ্যসূত্র: সাকসেস ডটকম