1. editor@islaminews.com : editorpost :
  2. jashimsarkar@gmail.com : jassemadmin :

অধিক নিরাপদ ও ঝুঁকিমুক্ত গাইডেড বাসওয়ে!

আমরা সবাই জানি চলাচলের জন্য ট্রেন ভালো। তবে লাইন ছাড়া ট্রেন চলতে পারে না। এক্ষেত্রে বাসের কিছু সুবিধা আছে, যেমন এটি লাইন ছাড়াই ডানে-বাঁয়ে ঘুরে চলতে পারে। যদিও একই রাস্তা দিয়ে অনেক ধরণের যান চলাচলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ে। তাই সড়কপথে ট্রেনে চলার মতো সুবিধা দেবে ‘গাইডেড বাসওয়ে’।

যেখানে বাসও ট্রেনের মত লাইনের ভেতর দিয়ে চলবে। এখানে শুধু বাসই চলবে- অন্য কোনো যানবাহন নেই। ফলে বাসের গতিও বাড়বে অনেক। জ্যাম ছাড়াই দ্রুত যাত্রী পরিবহন হবে। সেই সঙ্গে দুর্ঘটনার আশঙ্কা অনেকাংশে কমে যাবে। শুধু গাড়ির দুটি চাকা চলার উপযোগী ‘এই গাইডেড বাসওয়ে’। রেললাইনের মতো হলেও বাস্তবে কংক্রিটের পাকা রাস্তা এটি। তবে সব সময়ে যে লাইনে থাকতে হয়, তা নয়। প্রয়োজনে বাসগুলো তার ‘লাইন’ ছেড়ে সাধারণ গাড়ির পথেও নেমে আসতে পারে।

গাইডেড বাসওয়েতে রাস্তার দুই পাশে দুটি লাইন থাকে। বাসগুলোকে সেই লাইনের ভেতর দিয়ে ছুটতে হয়। কিন্তু এ জন্য বাসগুলোতে বিশেষ প্রযুক্তি সংযুক্ত করতে হয়। এ প্রযুক্তি খুব একটা ব্যয়বহুল নয়। কারণ দুটি করে বাড়তি ছোট চাকা লাগালেই কাজ হয়ে যায়। সাধারণত গাইডেড বাসওয়েগুলো বানানো হয় কার্ব গাইডেন্স পদ্ধতিতে। এতে পথের দুই পাশে নিচু বেড়ার মতো থাকে। আর বাসগুলোর দুই পাশে দুটি করে ছোট চাকা (কার্ব) থাকে। এই চাকাগুলোর সাহায্যে বাসগুলো গাইডেড বাসওয়ে দিয়ে চলে।

চাকাগুলো ছোট হওয়ায় সাধারণ রাস্তাতে সেগুলো কোনো সমস্যাও করে না। পরে আরও দুটি পদ্ধতিতে গাইডেড বাসওয়ে বানানো শুরু হয়েছে-অপটিক্যাল গাইডেন্স ও ম্যাগনেটিক গাইডেন্স পদ্ধতিতে। অপটিক্যাল গাইডেন্স পদ্ধতিতে বাসগুলো ক্যামেরার সাহায্যে নির্দিষ্ট পথে চলে। আর ম্যাগনেটিক গাইডেন্স পদ্ধতিতে চলে চুম্বকের সাহায্যে।

এই গাইডেড বাসওয়ে মূলত ব্রিটিশদের উদ্ভাবন। তারা প্রথম এ ধরণের রাস্তা বানায় বার্মিংহামে-ট্র্যাকলাইন ৬৫। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় গাইডেড বাসওয়েটিও ইংল্যান্ডের। ২৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই পথটির অবস্থান ক্যামব্রিজশায়ারে। ইংল্যান্ডের বাইরে কার্ব গাইডেড বাসওয়ে আছে জাপানের নগুয়া, অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেড আর জার্মানির এসেন শহরে।

গাইডেড বাসওয়ের আরেকটি বড় সুবিধা হলো, এর পরিবেশগত প্রভাব কম। যেমন চওড়া রাস্তা পাকা করতে হয় না এতে। শুধু দুটি চাকার জায়গা পাকা করলেই চলে। আর বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভূমির ওপর পাকা করা জায়গা যত বেশি হবে,পরিবেশের ওপর প্রভাবও তত পড়বে। বাড়তি পাকা জায়গা থাকায় সূর্যতাপেও শহর গরম হয়ে পড়ে।

গাইডেড বাসওয়েতে রাস্তার পরিমাণ যেমন কম, তেমন মাঝখানের জায়গা সবুজ ঘাসে আচ্ছাদিত করার সুযোগও রয়েছে। ফলে পরিবেশের ওপর চাপ কমবে। সাধারণ রাস্তা নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণে যত ব্যয় হয়, তার চেয়ে কম ব্যয় হয় গাইডেড বাসওয়েতে। কারণ এতে শুধু দুটি চাকা রাখার জায়গা ঠিকঠাক রাখতে পারলেই হয়।

গাইডেড বাসওয়েতে কোনো বাস কাউকে ওভারটেক করতে পারে না। ফলে বাংলাদেশের মতো দেশে, যেখানে বাসগুলো যত্রতত্র দাঁড়িয়ে রাস্তা বন্ধ করে জ্যাম তৈরি করে, সেই সুযোগ থাকবে না এমন বাসওয়েতে। ফলে বিশৃঙ্খল গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আনতেও এ বাসওয়ে বেশ কার্যকর। এ বাসওয়েতে রাস্তার পাশে বাসস্ট্যান্ডের প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা হয়। ফলে যাত্রীরা সহজেই বাসে ওঠানামা করতে পারে।

তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট।

More News Of This Category