1. editor@islaminews.com : editorpost :
  2. jashimsarkar@gmail.com : jassemadmin :

আফগানিস্তানের চেয়েও পিছিয়ে বাংলাদেশ: বিশ্বব্যাংক!

বিশ্বব্যাংকের বিচারে ব্যবসা পরিবেশের সূচকে বাংলাদেশের এক ধাপ অগ্রগতি হয়েছে, কিন্তু সাকর্ভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ আরও পিছিয়েছে। বিশ্ব আথির্ক খাতের মোড়ল বিশ্বব্যাংক গ্রæপের ‘ডুয়িং বিজনেস ২০১৯’ প্রতিবেদনে ব্যবসা করার পরিবেশের দিক দিয়ে বিশ্বের ১৯০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান এবার ১৭৬ নম্বরে। গত বছর এ সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ১৭৭ নম্বরে ছিল।

ব্যবসা পরিবেশের উন্নয়নে সরকারের তরফ থেকে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়ার পরও এ সূচকে বাংলাদেশ গত কয়েক বছর ধরে মোটামুটি একই জায়গায় ঘুরপাক খাচ্ছে। অথচ বাংলাদেশকে ডিঙিয়ে আফগানিস্তান এবার উঠে এসেছে ১৬৭ নম্বরে। বিশ্বব্যাংক বলছে, প্রতিযোগিতায় ভালো করতে চাইলে বাংলাদেশকে সংস্কারের গতি আরও বাড়াতে হবে।

একটি দেশের অথর্-বাণিজ্যের পরিবেশ ১০টি মাপকাঠিতে তুলনা করে এই সূচক তৈরি করা হয়। বাংলাদেশের পরিস্থিতি বুঝতে ব্যবহার করা হয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রামের তথ্য। এই ১০টি মাপকাঠি হলো: নতুন ব্যবসা শুরু করা, অবকাঠামো নিমাের্ণর অনুমতি পাওয়া, বিদ্যুৎ সুবিধা, সম্পত্তির নিবন্ধন, ঋণ পাওয়ার সুযোগ, সংখ্যালঘু বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা, কর পরিশোধ, বৈদেশিক বাণিজ্য, চুক্তি বাস্তবায়ন ও দেউলিয়া হওয়া ব্যবসার উন্নয়ন।

সব মিলিয়ে ১০০ ভিত্তিক এই সূচকে বাংলাদেশের মোট স্কোর হয়েছে এবার ৪১ দশমিক ৯৭,গত বছর যা ৪১ দশমিক ০৬ শতাংশ ছিল। স্কোর ও র‌্যাংকিংয়ে এই উন্নতির পরও ব্যবসার পরিবেশে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবার চেয়ে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার করায় ভারতের অবস্থানের ২৩ ধাপ অগ্রগতি হয়েছে; ৬৭.২৩ স্কোর নিয়ে উঠে এসেছে সূচকের ৭৭তম অবস্থানে।

আর ৪৪.৭৭ স্কোর নিয়ে যুদ্ধ বিধ্বস্ত আফগানিস্তান সূচকের ১৬৭ নম্বরে উঠে আসার পথে ১৬ ধাপ অগ্রগতি দেখিয়েছে। এছাড়া ভুটান এ সূচকের ৮১তম (স্কোর ৬৬.০৮), শ্রীলঙ্কা ১০০তম (৬১.২২), নেপাল ১১০তম (৫৯.৬৩), পাকিস্তান ১৩৬তম (৫৫.৩১), মালদ্বীপ ১৩৯তম (৫৪.৪৩), অবস্থানে রয়েছে।

বিশ্ব ব্যাংক বলছে, ১০ মাপকাঠির মধ্যে ছয়টিতেই বাংলাদেশের স্কোর গতবারের চেয়ে বেড়েছে। এর মধ্যে বিদ্যুৎ সুবিধার ক্ষেত্রে স্কোর বেড়েছে ৮.০৬ শতাংশ। চারটি মাপকাঠিতে স্কোর এবার গতবারের সমান। কোনো ক্ষেত্রেই অবনতি হয়নি। কিন্তু প্রতিবেশীরা বাংলাদেশের চেয়ে অনেক দ্রুত উন্নতি করছে।

গত এক বছরে ভারত ছয়টি ক্ষেত্রে এবং আফগানিস্তান পাঁচটি ক্ষেত্রে সংস্কার করায় তাদের অবস্থানে বড় উন্নতি হয়েছে জানিয়ে বিশ্বব্যাংকের এব সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ব্যবসার পরিবেশের উন্নতি ঘটাতে হলে বাংলাদেশকে সংস্কারের গতি আরও বাড়াতে হবে। তবে বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়ন কীভাবে বাংলাদেশের ব্যবসা পরিবেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে- সে কথাও বলা হয়েছে ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।

বিশ্বব্যাংক বলছে, ২০১৫ সালের পর ঢাকা ও চট্টগ্রামে বিদ্যুৎ সরবরাহ কাঠামোর উয়ন্নয়নের ফলে সরবরাহ বাড়ানো সম্ভব হয়েছে। এই দুই বড় শহরে ব্যবসা করার জন্য বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়ার বিষয় আগের চেয়ে সহজ হয়েছে। ২০১৪ সালে যেখানে আবেদন করার পর সংযোগ পাওয়ার জন্য গড়ে ৪০০ দিন অপেক্ষা করতে হতো, ২০১৮ সালে এসে তা কমে হয়েছে ১৫০ দিন।

বিশ্বব্যাংকের এবারের ডুইং বিজনেস রিপোটের্র প্রতিপাদ্য ছিল ‘ট্রেইনিং ফর রিফমর্’। ১৯০ দেশের ব্যবসায়ী, অথর্নীতিবিদ ও বিশ্লেষকের মতামত নিয়ে তারা প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, অথর্-বাণিজ্যের পরিবেশ তৈরির ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে নিউজিল্যান্ড; সূচকে তাদের স্কোর ৮৬.৫৯। শীষর্ ১০-এ থাকা অন্য দেশগুলো হলো সিঙ্গাপুর, ডেনমাকর্, হংকং, দক্ষিণ কোরিয়া, জজির্য়া, নরওয়ে, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও মেসেডোনিয়া। গতবারের মতো এবারও সূচকে সোমালিয়ার পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ। আফ্রিকার এই দেশটির স্কোর ২০.০৪।

More News Of This Category