1. editor@islaminews.com : editorpost :
  2. jashimsarkar@gmail.com : jassemadmin :

ইলিশের কেজি ৪০০ টাকা!

আষাঢ়ের প্রবল বর্ষায় শুরু হয় ইলিশের ভরা মৌসুম। কিন্তু ভরা মৌসুমেও এর হদিস পাওয়া যাচ্ছিল না। তবে একটু দেরি হলেও খবর মিলেছে ইলিশের। পদ্মায় এখন ঝাঁক বাঁধতে শুরু করেছে এই সুস্বাদু মাছ। বঙ্গোপসাগরের মোহনা সংলগ্ন বিষখালী, বলেশ্বর নদী ও গভীর সমুদ্রে এখন ইলিশের জোয়ার। আর তার ঢল নামতে শুরু করেছে রাজধানীর বাজারেও। কমেছে দামও।

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর শনির আখড়া বাজারে ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। বিক্রেতারা বলছেন, ইলিশের ভরা মৌসুমেও এবার খরা ছিল; সে কারণে এতদিন এ ধরনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৭০০ থেকে ১০০০ টাকা।

এখন ইলিশ বেশি ধরা পড়ছে। তার জন্য দাম কমছে। তবে সামনে কুরবানির ঈদ হওয়ায় চাহিদা কমতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা। শুধু শনির আখড়া নয়, প্রায় এক থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে রায়েরবাগের ছোটও বাজারে দেখা যায়, মোটামুটি আধা কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা কেজিতে।

তবে বড় মাছ যে বড় দামে বিক্রি হচ্ছে না, তা নয়। প্রায় এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকায়। শনির আখড়ায় মাছের বাজার থেকে দুই হাজার টাকা দিয়ে ৫ কেজি ইলিশ কিনেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী মো. ফিরোজ আহমেদ। তিনি বলেন, দাম সস্তা পেয়েছি, তাই একটু বেশি করে কিনে রাখলাম।

ইলিশ দেখিয়ে তিনি বলেন ৫ কেজিতে ইলিশ হয়েছে ১২টি। ইলিশের দাম কম হলে নিম্নবিত্ত থেকে শুরু করে সবাই এই সুস্বাদু মাছের স্বাদ উপভোগ করতে পারেন। এস এম শাহিন নামের একজানান, ইলিশের দাম কম হলে আমাদের মতো খেটে খাওয়া মানুষের ঘরে ইলিশ ওঠে। তাছাড়া বাজারে বড় ইলিশের দিকে তো তাকিয়ে লাভ নেই। কারণ বড় মাছের দাম বেশি। তবে বড় মাছের দাম কম হলে ভাবছি কিছু কিনে রাখবো।

২০০৭ সালে প্রায় তিন লাখ মেট্রিক টন ইলিশ ধরা পড়েছিল। সর্বশেষ মৌসুমে তা পাঁচ লাখ মেট্রিক টনের মতো হয়েছে। অর্থাৎ দশ বছরে ইলিশের উৎপাদন প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জাটকা এবং প্রজননের সময় ইলিশ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকা, অভয়াশ্রম প্রতিষ্ঠা করাসহ বিভিন্ন প্রচেষ্টার ফলে ২০১৬-১৭ সালে যেমন ইলিশের উৎপাদন দ্বিগুণ হয়েছে।

এছাড়া লক্ষ্যমাত্রা-অতিক্রম করে মাছ উৎপাদনেও বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। চলতি বছরেও পর্যাপ্ত ইলিশ মাছ পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। কিন্তু ভরা মৌসুমেও কেন ইলিশ পাওয়া যাচ্ছিল না?

বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সিনিয়র সহসভাপতি আবুল হোসেন ফরাজী বলেন, নদ-নদীতে ইলিশ আসার যে আবহাওয়া দরকার সে আবহাওয়া এখন পর্যন্ত সৃষ্টি হয়নি। একদিন কিছু সময় বৃষ্টি হলে আবার দুদিন প্রচণ্ড রোদ।

যে কারণে গত দুমাস নদীতে খুব অল্প ইলিশ পাওয়া যায়। এখন আগের চেয়ে প্রায় চারগুণ বেশি ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। আশা করি সামনের দিনগুলোতে আরও ইলিশ পাওয়া যাবে।

গভীর সমুদ্রে ইলিশ থাকলেও গত এক মাসে দফায় দফায় আবহাওয়া খারাপ হওয়াতে জাল দড়ি রসদ সামগ্রীসহ ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকার বাজার নিয়ে সমুদ্র থেকে ফিরে আসতে হয়েছে খালী হাতে। এখন একেকটি ট্রলারে ২/৩ হাজার ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে।

ইলিশের দেখা পাওয়ায় সরগরম হয়ে উঠেছে দেশের বৃহৎ মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র বরগুনার পাথরঘাটার বিএফডিসি পাইকারী বাজার। বাজারটিতে তিন দিন আগেও ফিশিং ইলিশ ১৮ থেকে ২২ হাজার টাকা মণে বিক্রি হচ্ছে। আর লোকাল ইলিশ ৫০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া কেজির ওপরে ইলিশ ৪৫ থেকে ৫৫ হাজার টাকা করে কেনাবেচা চলছে। যা কদিন আগের চেয়ে প্রায় মণে ১০-১২ হাজার টাকা কম।ভরা মৌসুমেও এবার বরিশালের নদীগুলোতে মিলছে না পর্যাপ্ত ইলিশ। এতে জেলেরা আছেন হতাশায়। নদীতে ইলিশের কমতি প্রভাব ফেলেছে পাইকারি বাজারেও। তবে এ মাসের শেষে পরিস্থিতি পাল্টাবে বলে মনে করছে স্থানীয় মৎস্য বিভাগ।

তথ্যসূত্র: আরটিভি অনলাইন ডটকম।

More News Of This Category