1. editor@islaminews.com : editorpost :
  2. jashimsarkar@gmail.com : jassemadmin :

এনজিওর আয়ে ভাগ বাড়িয়েছে সরকার।

ক্ষুদ্রঋণ সংস্থার আয়ের ওপর সরকার তথা নিয়ন্ত্রক সংস্থার ভাগ বাড়ছে। এখন থেকে এসব ক্ষুদ্রঋণ সংস্থাগুলোর অর্জিত সেবা মাশুল (সার্ভিস চার্জ) থেকে দশমিক ১৫ শতাংশ হারে ক্ষুদ্রঋণ নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে (এমআরএ) বার্ষিক ফি হিসেবে দিতে হবে। গত বৃহস্পতিবার এমআরএ এ–সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

দেশে ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলো এনজিও হিসেবে পরিচিত। আগে ঋণগ্রহীতার সংখ্যা অনুযায়ী এনজিওগুলোকে ৫ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত বার্ষিক ফি দিতে হতো। কিন্তু নতুন বিধানের কারণে এখন বার্ষিক ফি আর নির্ধারিত থাকছে না। তবে এনজিওগুলোর সনদ বা লাইসেন্স ফি আগের মতোই রয়েছে।

এমআরএর নির্বাহী ভাইস চেয়ারম্যান অমলেন্দু মুখার্জী বলেন, ‘এমআরএ’র সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বার্থেই বার্ষিক ফি বাড়ানো হয়েছে। তবে যাদের সেবা মাশুল বাবদ কোনো আয় থাকবে না, তাদের বার্ষিক ফিও দিতে হবে না।’

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঋণ দিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে ব্যাংকগুলো আদায় করে সুদ। আর এনজিওরা ঋণের বিপরীতে যে আয় করে সেটিকে বলা হয় সেবা মাশুল। এ সেবা মাশুলই এনজিওগুলোর প্রধান আয়।

১০ লাখের বেশি ঋণগ্রহীতা রয়েছে, এমন এনজিওগুলোকে এত দিন বার্ষিক ফি দিতে হতো ২৫ হাজার টাকা; এ ছাড়া ১ লাখ থেকে ১০ লাখ পর্যন্ত ঋণগ্রহীতা আছে, এমন এনজিওকে ১৫ হাজার; ২৫ হাজার থেকে ১ লাখ পর্যন্ত ঋণগ্রহীতা থাকা এনজিওকে ১০ হাজার এবং ২৫ হাজার পর্যন্ত ঋণগ্রহীতার এনজিওকে ৫ হাজার টাকা বার্ষিক ফি দিতে হতো। নতুন প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, আগে যে হারই থাকুক না কেন, কোনো এনজিওর বার্ষিক ফি ১০ হাজার টাকার কম হবে না।

তবে বড়, মাঝারি ও ছোট কয়েকটি এনজিওর প্রধান নির্বাহীর সঙ্গে কথা বলে মিশ্র বক্তব্য পাওয়া গেছে। তবে নাম প্রকাশ করে কেউ বক্তব্য দিতে রাজি হননি। একটি এনজিওর নির্বাহী পরিচালক বলেন, সেবা মাশুল বাবদ যে আয়, তা মূলত আয় নয়। এ টাকা ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে গরিবদেরই আবার ঋণ দেওয়া হয়।

আরেকজন বলেছেন, দশমিক ১৫ শতাংশ অর্থাৎ ১ হাজার টাকায় ১৫ পয়সা—এই পরিমাণটা একটু বেশি হয়ে গেছে। এদিকে নির্ধারিত মাশুলের হারকে যৌক্তিকই বলছেন অমলেন্দু মুখার্জী। এমআরএ সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে সংস্থাটিতে নিবন্ধিত ক্ষুদ্রঋণ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৭০০। এর মধ্যে ১০ লাখের বেশি ঋণগ্রহীতা রয়েছে, এমন এনজিও রয়েছে মাত্র দুটি–ব্র্যাক ও আশা।

এ ছাড়া ১ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণগ্রহীতা থাকা এনজিও ২৬টি। ২৫ হাজার থেকে ১ লাখ পর্যন্ত ঋণগ্রহীতা থাকা এনজিও ৬৫টি এবং ২৫ হাজার পর্যন্ত ঋণগ্রহীতা থাকা এনজিও ৬০৭টি। সেই হিসাবে নতুন প্রজ্ঞাপনে সেবা মাশুলের দশমিক ১৫ শতাংশ বার্ষিক ফির যে হার নির্ধারণ করা হয়েছে, তাতে বছরে ব্র্যাক থেকে ৫ কোটি ও আশা থেকে ৪ কোটি ৭২ লাখ টাকা পাবে এমআরএ।

এ ছাড়া ব্যুরো বাংলাদেশ থেকে ১ কোটি ৬০ লাখ, টিএমএসএস থেকে ৬০ লাখ, এসএসএস থেকে ৪৪ লাখ, জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন থেকে ৩২ লাখ, পদক্ষেপ থেকে ২৬ লাখ এবং উদ্দীপন থেকে ২৫ লাখ টাকা পাবে বলে আশাবাদী এমআরএ।

এমআরএ সূত্র জানায়, নতুন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে শিগগিরই এনজিওগুলোর জন্য একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। তাতে কোন পদ্ধতি ও সময়ের মধ্যে এনজিওগুলো এ ফি পরিশোধ করবে, তার উল্লেখ থাকবে। বার্ষিক ফির নতুন হার বাস্তবায়িত হলে সংস্থাটিকে আর সরকারের বাজেটের অর্থে চলতে হবে না। তথ্যসূত্র: প্রথম আলো।

More News Of This Category