1. editor@islaminews.com : editorpost :
  2. jashimsarkar@gmail.com : jassemadmin :

কোম্পানীর শেয়ার লভ্যাংশ সম্পর্কে জেনে নিন!

কোম্পানি তার মুনাফার যে অংশ শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে বিতরণ করে থাকে, তা-ই লভ্যাংশ বা ডিভিডেন্ড। কখনো কখনো রিজার্ভ বা সংরক্ষিত তহবিল থেকেও লভ্যাংশ বিতরণ করা হয়। লভ্যাংশ নগদ টাকা বা স্টক (শেয়ার) অথবা উভয় আকারে হতে পারে। লভ্যাংশ সাধারণত শতাংশের হিসাবে প্রকাশ করা হয়।

স্টক লভ্যাংশের বেলা বিদ্যমান শেয়ারের বিপরীতে শেয়ার দেওয়া হয়। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে এটি বোনাস লভ্যাংশ হিসেবে পরিচিত। এটিও সংখ্যা বা শতাংশের হিসাবে প্রকাশ করা হয়ে থাকে। উদাহরণ এক্স নামের একটি কোম্পানি ১০ শতাংশ স্টক বা বোনাস শেয়ার দিয়েছে অর্থাৎ কোম্পানিতে যার ১০ শেয়ার থাকবে তার ১১০টি শেয়ার হবে। আবার যদি কোনো কোম্পানি ২০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়, তাহলে তিনি প্রতিশেয়ারের বিপরীতে ২ টাকা পাবেন।

লভ্যাংশ সব সময় অভিহিত মূল্যের ওপর দেওয়া হয়।মিউচুয়াল ফান্ডের বেলা বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার থেকে পাওয়া লভ্যাংশ, বন্ড বা ডিবেঞ্চার থেকে পাওয়া সুদ, ক্যাপিটাল গেইন থেকে অর্জিত মুনাফা, ব্যাংকে রাখা অর্থের সুদ ইত্যাদির সমন্বিত আয় থেকে লভ্যাংশ দেওয়া হয়। মিউচুয়াল ফান্ডগুলো সাধারণত নগদ লভ্যাংশ দিয়ে থাকে। সংশোধিত মিউচুয়াল ফান্ড আইন অনুসারে স্টক বা বোনাস লভ্যাংশ দেওয়ারও সুযোগ আছে।

একটি কোম্পানি তার অর্জিত মুনাফার কতটুকু লভ্যাংশ হিসেবে বিতরণ করবে, সে বিষয়ে কোনো আইনি বাধ্যবাধকতা নেই। এটি সম্পূর্ণভাবে কোম্পানির নিজস্ব নীতিমালা ও পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত, ক্ষেত্রবিশেষে শেয়ারহোল্ডারদের ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে। তবে মিউচুয়াল ফান্ডের ক্ষেত্রে লভ্যাংশের বাধ্যবাধকতা আছে। আইন অনুসারে একটি ফান্ডের আয়ের ন্যূনতম ৬৫ ভাগ লভ্যাংশ হিসেবে বিতরণ করতে হয়।

সাধারণভাবে সব শেয়ারহোল্ডারের জন্যই লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়। তবে কখনো কখনো শুধু সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের জন্যও লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়। কোনো কোম্পানির বিতরণযোগ্য মুনাফা কম হলে পরিচালনা পরিষদ শুধু সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করে থাকে। এ ক্ষেত্রে উদ্যোক্তা পরিচালক বা শেয়ারহোল্ডাররা (স্পন্সর ডিরেক্টর/স্পন্সর শেয়ারহোল্ডার) লভ্যাংশ পাওয়ার জন্য বিবেচিত হয় না।

লভ্যাংশ বিতরণসংক্রান্ত কোম্পানির নীতিমালা। একটি কোম্পানি তার মুনাফার পুরোটাই শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে লভ্যাংশ হিসেবে বিতরণ করে না। লভ্যাংশের একটি অংশ সংরতি তহবিল, ইকুয়ালাইজিং ফান্ডসহ বিভিন্ন খাতে জমা রাখে। কোম্পানি তার মুনাফার কত ভাগ লভ্যাংশ হিসেবে বিতরণ করবে, তা লভ্যাংশসংক্রান্ত নীতিমালার ভিত্তিতে নির্ধারণ করে।

বিনিয়োগকারী বা শেয়ারহোল্ডারের প্রাপ্য লভ্যাংশের বিপরীতে দেওয়া কোম্পানির চেক। কোম্পানি সংশ্লিষ্ট শেয়ারহোল্ডারের মালিকানাধীন শেয়ারের জন্য প্রাপ্য মোট লভ্যাংশের অর্থ একটি চেকের মাধ্যমে এ অর্থ পরিশোধ করে থাকে। বিদ্যমান আইন অনুসারে লভ্যাংশ আয়ের ক্ষেত্রে আয়কর বা অন্যান্য কর প্রযোজ্য হলে কোম্পানি তা কেটে রেখে প্রাপ্য বাকি টাকা চেকের মাধ্যমে প্রদান করে থাকে।

ওয়ারেন্ট সব সময় অ্যাকাউন্টপেয়ি হয়ে থাকে। যার নামে ওয়ারেন্ট ইস্যু করা হয়, তার ব্যাংক হিসাবে জমা দিয়ে এটি নগদায়ন করতে হয়। কোম্পানি চেকের সঙ্গে একটি অ্যাকনলেজমেন্ট লেটার পাঠায়, যাতে তার ঠিকানা, শেয়ার ফলিও নাম্বার বা বিও নাম্বারসহ অন্যান্য তথ্য উল্লেখ থাকে। লভ্যাংশ প্রাপ্তি সহজ করতে এখন বেশিরভাগ কোম্পানি অনলাইন অ্যাকাউন্টধারী শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ সরাসরি ব্যাংকে পাঠিয়ে দেয়। এ কারণে ডিভিডেন্ড ওয়ারেন্টের প্রচলন কমে যাচ্ছে।

লভ্যাংশের জন্য ঘোষিত রেকর্ড তারিখের আগের শেয়ার যে সময়ে একজন বিনিয়োগকারী শেয়ার কিনলে লভ্যাংশ প্রাপ্তির জন্য যোগ্য বিবেচিত হন । আইন অনুসারে প্রতিটি কোম্পানিকে বিনিয়োগকারীর জন্য কোম্পানি ঘোষিত লভ্যাংশ প্রাপ্তি, রাইট শেয়ার, বার্ষিক সাধারণসভা বা বিশেষ সাধারণসভায় যোগদানের সুযোগ লাভের জন্য একটি সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। নির্ধারিত তারিখের আগের দিন পর্যন্ত যার নামে শেয়ার থাকে, তিনিই আলোচিত সুবিধাগুলো পাওয়ার যোগ্য বিবেচিত হন। নির্ধারিত তারিখটিকে বলা হয় রেকর্ড ডেট। রেকর্ড ডেট পর্যন্ত শেয়ার থাকলে সে শেয়ারে লভ্যাংশ পাওয়া যায়। রেকর্ড ডেটের আগের শেয়ারকে কাম-ডিভিডেন্ড শেয়ার বলা হয়।

তথ্যসূত্র: আমাদের সময়।

More News Of This Category