1. editor@islaminews.com : editorpost :
  2. jashimsarkar@gmail.com : jassemadmin :

‘চাকরি করলে সরকারি, বিক্রি করলে তরকারি আর দোকান দিলে ফার্মেসি।’

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পেশাগত জীবনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ট্রেনটি এখন বুলেটগতিতে ছুটছে। তবে এই ট্রেনে না উঠে উপায়ও নেই। করোনাকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মানুষের পদচারণ দুম করে বেড়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রেই এর দ্বিগুণ ব্যবহার হচ্ছে। ফলে এ বিষয়ে পণ্ডিত না হয়ে উপায় কী!

পড়াশোনার বিষয় যা-ই হোক, এতে দক্ষ হয়ে ওঠার চাবিকাঠি অবশ্য নিজের হাতেই। ‘চাকরি করলে সরকারি, বিক্রি করলে তরকারি আর দোকান দিলে ফার্মেসি।’ করোনাকালের অন্যতম ভাইরাল কৌতুক। অদৃশ্য ভাইরাসের দাপটে দুনিয়ার সব হিসাবনিকাশ ওলটপালট হয়ে গেছে। বিশেষ করে এখন ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবতে হচ্ছে নতুন করে।

কৌতুকের মতো সবাই তো আর সরকারি চাকরি করবেন না, তরকারিও বেচবেন না। তাহলে কী করবেন? প্রশ্নের উত্তর খোঁজার আগে সম্প্রতি ফেসবুকে দেখা একটি পোস্টের কথা বলি। ছবির পোস্টটিতে লেখা, ‘নরসুন্দর হোম সার্ভিস। পিপিই পরিধান করে বাসায় গিয়ে সেবা দেওয়া হয়।’ নিচে বড় করে নরসুন্দর সার্ভিসের মোবাইল ফোন নম্বর।

যা চলছে: ছোট এই উদাহরণে বর্তমান পরিস্থিতিতে ব্যবসার হালহকিকত আন্দাজ করা চলে। পাশাপাশি যেকোনো পেশায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রয়োজনীয়তার সামগ্রিক একটি ধারণাও মেলে। ধারণাটি আরও মজবুত হবে বিশ্বের অন্যতম গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ক্যানটার গ্রুপের দেওয়া এই তথ্যগুলো জানলে। করোনাকালেই ৩০টি দেশের ২৫ হাজার মানুষের ওপর জরিপ করে তথ্যগুলো হাজির করেছে ওরা।

প্রথমটি সহজেই অনুমেয়, স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় করোনাকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মানুষের আনাগোনা বেড়েছে ৬১ শতাংশ। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ চালাচালি বেড়েছে ৫০ শতাংশ। এক বছর আগের তুলনায় ২৩ শতাংশ বেশি ব্যবহারকারী পাচ্ছে টুইটার। এমনকি যাঁরা #DeleteFacebook বলে সরব ছিলেন, তাঁরাও আলগোছে ফেসবুক অ্যাপ রি–ইনস্টল করেছেন। মোট কথা, সামাজিক দূরত্ব লক্ষ্মী হয়ে এসেছে মার্ক জাকারবার্গদের ব্যবসায়।

এসব তথ্য ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো ভালো করেই জানে। ফলে করোনাকালেই ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কদর বেড়েছে। সেই সঙ্গে এসবের বিশেষজ্ঞদের চাহিদাও বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। আশার কথা হলো, চাইলেই যে কেউ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের গুরু হয়ে উঠতে পারেন।

ফলে পড়াশোনা যে বিষয়েই হোক, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অভিজ্ঞ হয়ে খুঁটির জোর বাড়ানোর এটাই সুবর্ণ সময়। আর পড়াশোনার পাশাপাশি খুব সহজেই বিনা মূল্যে কোর্স করার সুযোগও আছে অনেক। নবীনদের জন্য কোর্সগুলো অনেকটা খেলতে খেলতে শেখার মতো। অনেকেই হয়তো ভাবেন, এসবে আর শেখারই–বা কী আছে? ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম আর হোয়াটসঅ্যাপ চালাতে আবার কোর্স করতে হয়?

কেন: গত বছর একটি ব্লগ পড়েছিলাম। শিরোনাম ছিল ‘রজার ফেদেরার হ্যাজ আ কোচ। ইজ দ্যাট আ সাইন অব উইকনেস?’ এই প্রশ্ন মনে উঁকি দেওয়া তো খুব স্বাভাবিক, টেনিসের ‘রাজা’ ফেদেরারেরও কোচ দরকার? লেখাটির সারমর্ম ছিল এ রকম, ‘বাস্তবতা হলো, আমরা জীবনে কিছু কাজ একেবারে একা করতে পারি না, করা উচিতও নয়। কাজটিতে আমরা যত দক্ষই হই না কেন।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কোর্সের প্রয়োজনীয়তার বেলাতেও একই কথা। এমন অনেক বিষয়ই আছে, যা হয়তো চোখের সামনেই থাকে, কিন্তু খেয়াল করা হয় না। আরও খোলাসা করে বললে, কোর্সগুলো করতে পারেন ১. ডিজিটাল দুনিয়ার পথঘাট চিনতে, ২. নতুন কৌশল শিখতে, ৩. নিজেদের ভুলগুলো বুঝতে, ৪. যারা ভালো করছে তাদের দেওয়া চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে এবং ৪. নিজেকে বর্তমানের সঙ্গে মানিয়ে নিতে।

কোথায়: নবীনদের জন্য ফেসবুক ব্লুপ্রিন্টের কোর্সগুলো দারুণ। নানান বিষয় শিখতে পারেন এখানে। ঠিকানাটা হলো facebookblueprint.com/student/catalog। ফেসবুকে পেজ খোলা থেকে শুরু করে ব্যবসা, বিজ্ঞাপন, কন্টেন্ট, টার্গেট অডিয়েন্স (সম্ভাব্য ব্যবহারকারী), ব্র্যান্ডিং, ইভেন্টস, অ্যাপ, ডেটা, যোগাযোগ কিংবা আয়রোজগারের পথও খুঁজে পাবেন এখানে। বিনা মূল্যে ১৮টি বিষয়ে ৯০টির বেশি অনলাইন কোর্স করা যায় এখানে।

একেকটি কোর্স করতে সময় লাগে ১৫ থেকে ৫০ মিনিট করে। ছোট ছোট পরীক্ষাও থাকে প্রতিটি কোর্সের শেষে। উতরে গেলে পাবেন সনদ। আর পরবর্তী সময়ে ফেসবুক ব্লুপ্রিন্টেরই পেশাদার কোর্সগুলো করতে গেলে এই পাঠগুলোই মূলত কাজে আসবে। আগেই বলেছি, পড়াশোনার বিষয় যা-ই হোক, ডিজিটাল মাধ্যমে আনাড়ি হলে হা-হুতাশ করতে হবে। করোনা-পরবর্তী সময়ে এটাই বাস্তবতা।

বলা হচ্ছে, ব্যবসা করতে এখন যতটা না টাকা লাগে, তার চেয়ে বেশি প্রয়োজন জ্ঞান। আর কেবল ব্যবসাই নয়, যেকোনো পেশাতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এখন অন্যতম অস্ত্র। এই অস্ত্র সবার হাতেই আছে, এখন কেবল শাণিয়ে নেওয়ার পালা। তথ্যসূত্র: প্রথমআলো।

More News Of This Category