1. editor@islaminews.com : editorpost :
  2. jashimsarkar@gmail.com : jassemadmin :

কাজের সময় বাকি সবকিছু থেকে নিজেকে দূরে রাখুন

আপনি যতই চান না কেন, আপনার মনের একটা অংশ সব সময়ে আশপাশের পরিবেশের দিকে নজর রাখে। বিনোদন বা কাজের মনোযোগ নষ্টকারী বিষয়ের দিকে একটু হলেও আগ্রহ থাকে। এই কারণে কাজের জন্য সঠিক পরিবেশ সৃষ্টি করা জরুরী। সঠিক ভাবে কাজ করার পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারলে কাজের মনোযোগ অনেক বেড়ে যায় – এবং নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য খুব বেশি কষ্ট করতে হয় না।

বিখ্যাত পারফর্মেন্স গাইড ডিপ ওয়ার্ক – এ লেখক অধ্যাপক কার্ল নিউপোর্ট বলেছেন, গভীর মনোযোগের সাথে কাজ করতে হলে কাজের জন্য সময় নির্দিষ্ট করার পাশাপাশি সঠিক পরিবেশও সৃষ্টি করতে হবে। এমন পরিবেশ, যেখানে আপনার মনোযোগ নষ্ট করার মত উপাদান থাকবে না।

আপনি যখন কাজ করবেন – তখন সোশ্যাল মিডিয়ার ধারেকাছে যাবেন না। গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষ কাজের সময়ে যদি একটি নোটিফিকেশন চেক করার জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ঢোকে – তবে প্রতিবার গড়ে ২৩ মিনিট নষ্ট হয়।

কাজ করার সময়ে প্রতিজ্ঞা করুন, এই সময়টাতে কোনওভাবেই সোশ্যাল মিডিয়ায় লগ ইন করবেন না। এছাড়া খেলার স্কোর চেক করা, অপ্রয়োজনীয় ফোন কল করা থেকে বিরত থাকুন। প্রয়োজনে ফোন বন্ধ রাখুন। কাজের মাঝে ব্রেক নেয়ার সময়েও এমন কিছু করবেন না – যেটাতে গভীর মনোযোগের দরকার হয়।

কাজের ব্রেকের সময়টা মস্তিষ্ককে পূর্ণ বিশ্রাম দিন। বই পড়া বা কারও সাথে কাজের বাইরের বিষয় নিয়ে গভীর আলোচনা করা বাদ দিন। এগুলো কাজের থেকে পূর্ণ মনোযোগ সরিয়ে নেয় এবং একবার এগুলোতে মনোযোগ চলে গেলে আবার কাজে মনোযোগ নিয়ে আসা কঠিন হয়ে যায়।

আরেকটা বিষয়, কাজ করার জন্য একটি নির্দিষ্ট রুম রাখুন। বিশেষ করে যদি বাসায় কাজ করেন। এবং যে সময়টা আপনি কাজ করার জন্য ঠিক করেছেন সেই সময়টা সেই রুম থেকে বের হবেন না। ওয়াশ রুম বা খাওয়া দাওয়ার জন্য বের হতে পারেন – এর বাইরে নয়। রুমটি এমন ভাবে সাজান – যেন সেখানে বাইরের শব্দ বা পরিবেশের প্রভাব কম থাকে।

সেখানে এমন কিছু রাখবেন না – যাতে আপনার কাজের মনোযোগ নষ্ট হয়। জরুরী কথা বলার জন্য একটি সাধারণ ফোন কাছে রাখুন। স্মার্টফোনটি অন্য রুমে রাখুন। বই পড়ার অভ্যাস থাকলে বইয়ের কালেকশন এখানে রাখবেন না। তাহলে কাজের মাঝে সেদিকে চোখ গেলে একটু বই পড়ার শখও হতে পারে। এই ধরনের অন্য মনোযোগ নষ্টকারী বিষয়গুলো সরিয়ে রাখুন।

যদি একটিই রুমে আপনার সবকিছু থাকে, তবে কাজের সময়ে এই জিনিসগুলো একটি বাক্সে রাখতে পারেন। খুব অল্প টাকায় কাগজের বাক্স পাওয়া যায়। এগুলোও কাজে লাগাতে পারেন। মনোযোগ নষ্টকারী জিনিসগুলো সরাসরি চোখের সামনে না থাকলে নিজেকে সেগুলোর আহ্বান থেকে নিয়ন্ত্রণ করা অনেক সহজ হয়ে যায়।

কাজ করতে করতে ক্লান্তি চলে আসতেই পারে। এই সময়টাতে অনেকেরই একটু বিশ্রাম নেয়ার প্রয়োজন হয়। বিশ্রাম নিতে পারেন – কিন্তু বিশ্রাম নেয়ার জন্য বেশি আরামদায়ক কিছু না থাকাই ভালো। কাজের জায়গার আশপাশে যদি বিছানা জাতীয় কিছু থাকে – তাহলে ইচ্ছা হবে একটু ঘুমিয়ে নেয়ার। এই ধরনের ব্যবস্থা থাকলে অতিরিক্ত বিশ্রাম নেয়ার প্রবনতা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন।

এরচেয়ে ভালো হয় একটি আরামদায়ক চেয়ারে বসে কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে থাকলে। অতি আরামদায়ক বস্তু কাজের জায়গা থেকে দূরে রাখুন।এই উপায় গুলো অনুসরন করলে কাজের সময়ে মনোযোগ নষ্টকারী বিষয় গুলো থেকে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা অনেক সহজ হয়ে যাবে। নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন।

কিন্তু এমন পরিবেশ যদি সৃষ্টি করতে পারেন – যেখানে এটার জন্য খুব বেশি কষ্ট করতে হবে না – তাহলে কিন্তু বিষয়টা আর তত কঠিন থাকে না। আপনি যদি সঠিক ভাবে জানেন, কোন জিনিসগুলো আপনার মনোযোগ নষ্ট করছে, এবং সেগুলো থেকে দূরে থাকার জন্য মনে মনে সংকল্প করেন – তবে সহজেই নিজেকে সেসব থেকে দূরে রাখতে পারবেন।

More News Of This Category