1. editor@islaminews.com : editorpost :
  2. jashimsarkar@gmail.com : jassemadmin :

প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে কল সেন্টারের নয় ছয়

ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি ( ডিপিডিসি) গ্রাহক সেবার জন্য একটি কল সেন্টারের খুলে উদ্বোধনের দিনেই প্রশ্নের মুখে পড়েছে। খোদ বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু কল সেন্টারে ফোন করে তথ্য জানতে চাইলে তাকে নয়-ছয় বুঝিয়ে মাথা ঘুরিয়ে দিয়েছে কল সেন্টারের প্রতিনিধিরা। বিদ্যুৎ ভবনে কল সেন্টারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী সেই অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন সাংবাদিকদের সামনে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘‘গত পরশুদিন আমি সচিবালয়ে বসে কল সেন্টারে ফোন করি। আব্দুল জলিল তালুকদার নামে একজন অপারেটর ফোনটি রিসিভ করেন। তিনি শুরুতে আমার গ্রাহক নম্বর এবং এলাকার কোড জানতে চান। আমি তাকে বলি, আমি এসব জানি না, ফতুল্লা পোস্ট অফিসের গলিতে বিদ্যুৎ নাই।

এরপর সঙ্গে সঙ্গেই তিনি আমাকে উত্তর দেন, ‘স্যার, ওখানকার কমপ্লেইন সুপারভাইজার মোবারক হোসেন জানিয়েছেন, সেখানে তার ছিঁড়ে গিয়েছে, কিছুক্ষণের মধ্যেই বিদ্যুৎ চলে আসবে।’ আমি এরপর ফতুল্লা অভিযোগ কেন্দ্রে ফোন করি, সেখান থেকে আমাকে জানানো হয়, সেখানে মোবারক হোসেন নামে কেউ কাজ করে না। তারা আমাকে জানায়, ফতুল্লায় কোনও তার ছিঁড়ে যায়নি আর বিদ্যুৎও যায়নি।’

এ ঘটনার পরদিন অর্থাৎ গতকাল আমি আমার পিএসকে (ব্যক্তিগত সহকারী) দিয়ে সচিবালয় থেকে আবার কল সেন্টারে ফোন করাই। তখন পাওয়ার সেলের মহাপরিচালকও উপস্থিত ছিলেন। পিএস আমার সামনে কল সেন্টারের প্রতিনিধিকে বলেন, ‘আমি চকবাজার থেকে বলছি, চকবাজারে বিদ্যুৎ নেই।’ তখন কল সেন্টার থেকে বলা হয়, ‘স্যার, সেখানে গ্রিডটি এইমাত্র ফেল করেছে। কিছু সময়ের মধ্যেই বিদ্যুৎ চলে আসবে।’’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, এই হচ্ছে কলসেন্টারের অবস্থা। বিদ্যুৎ যায়ইনি, কিন্তু তারা বলে দিচ্ছে, বিদ্যুৎ চলে গেছে। কিছু সময়ের মধ্যে চলে আসবে। তিনি একা ফোন করে যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন, একই অভিজ্ঞতা হয়েছে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের ভিডিও কনফারেন্সেও। ভিডিও কনফারেন্সে ডিপিডিসির তরফ থেকে প্রতিমন্ত্রীকে কল সেন্টারের নম্বরে ফোন দিয়ে ধরিয়ে দেওয়া হয়, এ সময় অন্য প্রান্তে থাকা খুশবু নামের একজন অপারেটর ফোনটি রিসিভ করেন।

প্রতিমন্ত্রী এ সময় তাকে বলেন, ‘আমি শাহবাগ থেকে বলছি, আমার এখানে বিদ্যুৎ নেই।’ খুশবু তাকে জানান, ‘স্যার, কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন।’ এরপর ভিডিওতে খুশবুকে অকারণে কিছু সময় ব্যয় করতে দেখা যায়। এ সময় তাকে বেশ অপ্রস্তুত মনে হচ্ছিল। খুশবু কিছু সময় পরে প্রতিমন্ত্রীকে জানান, ‘আমি কলটি সংশ্লিষ্ট এলাকায় স্থানান্তর করছি। আপনি সেখানে কথা বলতে পারেন।’

এর দুই তিন সেকেন্ড পর তিনি প্রতিমন্ত্রীকে বলেন, ‘আপনার এলাকায় দ্রুত বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হবে।’ এরপর মন্ত্রী ফোনটি কেটে দিয়ে উপস্থিত সকলের উদ্দেশে বলেন, ‘বুঝলেন তো, এই হচ্ছে কল সেন্টারের অবস্থা।’ এরপর প্রতিমন্ত্রী অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন।

প্রতিমন্ত্রী অনুষ্ঠানের শুরুতেই ডিপিডিসির কমকর্তা কর্মচারীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা কি সকলে বিদ্যুৎ গ্রাহক?’ তখন সবাই হাত তুলে হ্যাঁ সূচক জবাব দেন। তিনি জানতে চান, ‘আপনারা কি আপনাদের গ্রাহক নম্বর আর এলাকার কোড বলতে পারেন?’ এই সময় একজনও সেটি বলতে পারেননি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এটি পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে কিছু ভুল ত্রুটি থাকবেই। আমি আপনাদের নিরুৎসাহিত করছি না। তবে স্মার্ট সেবা দিতে স্মার্ট মানুষ দরকার।’এসময় তিনি সব বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির জন্য একটি করে কল সেন্টার করার উদ্যোগ নিতে বলেন। কল সময় সেন্টারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এখন থেকে ১৬১১৬ নম্বরে কল করলেই বিদ্যুৎ সেবা পাবেন গ্রাহক।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে পিডিবির চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ, ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ডিপিডিসির ডিজিএম নূর কামরুননাহার।

More News Of This Category