1. editor@islaminews.com : editorpost :
  2. jashimsarkar@gmail.com : jassemadmin :

বাৎসরিক ৫০ থেকে ৯০ লক্ষ টাকা বেতনের চাকরি বিজনেস এ্যানালিষ্ট!

যদি আপনি আইটি সিস্টেম, ডিজিটাল মার্কেটিং, বিজনেস রিসার্চ এবং বিজনেস ম্যানেজমেন্টের উপর দক্ষ হয়ে থাকেন তাহলে একজন বিজনেস অ্যানালিস্ট হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করতে পারেন। যদি আপনি জটিলতর টেকনিক্যাল কনসেপ্টগুলোকে অরগানাইজেশন ও কোম্পানির উন্নতির খাতিরে পরিবর্তন করতে পারেন, তাহলে বিজনেস অ্যানালিস্টের বাজারে আপনার এই দক্ষতার অনেক চাহিদা রয়েছে।

একজন বিজনেস অ্যানালিস্ট মূলত যেকোনো অরগানাইজেশন বা কোম্পানির স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যানিং এবং টেকনিক্যাল ও বিজনেস এক্সপার্টাইজের উপর কাজ করে থাকেন। বিজনেস ইন্টেলিজেন্সের সাথে সম্পৃক্ত সব ধরণের ডেটা ও ডকুমেন্ট ইন্টারপ্রেট ও অ্যানালাইসিস করার কাজও করে থাকেন। চলুন জেনে আসি, কীভাবে একজন বিজনেস অ্যানালিস্ট হিসেব ক্যারিয়ার গড়া সম্ভব।

একজন বিজনেস অ্যানালিস্ট কী কী কাজ করে থাকেন? একজন বিজনেস অ্যানালিস্ট মূলত বিভিন্ন কোম্পানির মার্কেটিং, প্রমোশন, স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যানিং এবং ডেটা রিসার্চ ও অ্যানালাইসিসের কাজ করে থাকেন। চলুন জেনে নেয়া যাক একজন বিজনেস অ্যানালিস্টের কাজগুলো, অরগানাইজেশন বা কোম্পানির অন্যান্য কর্মচারীদের সাথে দলগতভাবে বিজনেস প্ল্যান ও স্ট্র্যাটেজি তৈরি করা।

ক্লায়েন্ট ও অন্যান্য কোম্পানির সাথে রিলেশনশিপ তৈরি করা। সার্ভিস ডেভেলপ করার জন্য স্টেক হোল্ডার ও ক্লায়েন্টেদের থেকে ফিডব্যাক নেয়া। অ্যাডভান্সড ডেটা অ্যানালাইসিস, স্ট্র্যাটেজিক সাজেশন ও পটেনশিয়াল ইম্প্রুভমেন্টের কাজ করা। আইটি রিসোর্সের সার্ভে করা।
আইটি প্রসেস ইমপ্লিমেন্টেশন ও রেকোমেন্ডেশন পরিবর্তন করা। সিনিয়র ম্যানেজমেন্টের সাথে যেকোনো বিষয়ে কোলাবোরেশন করা।

অন্যান্য ডিপার্টমেন্টকে অনগোয়িং সাপোর্ট দেয়া। কী-স্টেক হোল্ডারদের কাছে প্রেজেন্টেশন, রিপোর্ট, ডকুমেন্ট এবং সাজেশন পাঠানো। বিভিন্ন ধরণের ডেটা অ্যানালাইসিস টুলস দ্বারা প্রজেক্ট অ্যানালাইজ করা। রিপোর্টিং কোয়ালিটি ডেভেলপ করা। ইন্টিগ্রেশন এবং এক্সেপ্টেন্স টেস্টিংয়ে অন্যান্য বিভাগকে সহায়তা করা। ট্রেইনিং মেটেরিয়াল ও সাজেশন ডেভেলপ করা। ব্যবসা ও টেকনোলজির মধ্যে ইন্টারপ্রেটার হিসেবে কাজ করা। বিভিন্ন বিভাগকে প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্টে সহায়তা করা।

একজন বিজনেস অ্যানালিস্টের ক্যারিয়ার কেমন হতে পারে? একজন বিজনেস অ্যানালিস্ট হিসেবে ক্যারিয়ার গড়ার পূর্বে আপনি, বিজনেস ম্যানেজমেন্ট, নেটওয়ার্ক মার্কেটার, ডিজিটাল মার্কেটার, বিজনেসম্যান, বিজনেস ম্যানেজার, প্রজেক্ট ম্যানেজার অথবা ডেটা অ্যানালিস্টের চাকরি দ্বারা ক্যারিয়ার শুরু করতে পারেন। উপরোক্ত পদগুলো থেকে অভিজ্ঞতা অর্জন করে বিজনেস ডেভেলপমেন্ট অফিসার, বিজনেস অ্যানালিস্ট, বিজনেস প্রজেক্ট ম্যানেজার, বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার, ডিজিটাল মার্কেটার অথবা বিজনেস অ্যাডভাইজার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে পারবেন।

একজন সিনিয়র লেভেলের বিজনেস অ্যানালিস্ট হওয়ার পূর্বে আপনার অভিজ্ঞতার ঝুলিতে ব্যবসা খাতের অন্য রকমের কিছু পেশার দক্ষতা ও যোগ্যতা থাকলে, বিজনেস অ্যানালিস্ট হওয়াটা অনেক সহজ হয়ে যাবে আপনার জন্য। একজন বিজনেস অ্যানালিস্ট হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে, আপনাকে যে সকল বিষয়ে পারদর্শী হতে হবে তা হচ্ছে, নন টেকনিক্যাল ডিপার্টমেন্টে টেকনিক্যাল বিষয়গুলো বোঝানোর ক্ষমতা থাকতে হবে।

মোটিভেশন করার দক্ষতা থাকতে হবে। অনেকগুলো প্রজেক্ট একসাথে চালানোর দক্ষতা থাকতে হবে। সল্যুশন ইমপ্লিমেন্টেশনের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। অসাধারণ অ্যানালিটিক্যাল দক্ষতা থাকতে হবে। সাজেশন কোয়ান্টিফাই করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ও বিজনেস ম্যানেজমেন্ট সম্পর্কে অভিজ্ঞ হতে হবে। আইটির উপর অসাধারণ দক্ষতা থাকতে হবে। ডকুমেন্ট অ্যানালাইসিস, প্রসিডিউর অবসার্ভেশন ও কোর ইস্যু রিপোর্টিংয়ের দক্ষতা থাকতে হবে।

মাইক্রোসফট অফিস, লিবরা অফিস ও অন্যান্য অফিস অ্যাপ্লিকেশনের উপর অভিজ্ঞ হতে হবে। এসকিউএল, ওরাকল, জাভা, ডট নেট ও সি শার্পের মতো রিসার্চ বেইজড প্রোগ্রামিং ভাষায় দক্ষতা থাকতে হবে। বিভিন্ন ধরণের বিজনেস কেইস ম্যানেজমেন্টের দক্ষতা থাকতে হবে। এলিসিটেশন টেকনিক, বিজনেস ডেভেলপমেন্ট টেকনিক ও স্ট্র্যাটেজির উপর পারদর্শী হতে হবে।

বিআরডি (বিজনেস রিকোয়ারমেন্টস ডকুমেন্ট), পিআরডি (প্রায়োরিটিজ রিকোয়ারমেন্টস ডকুমেন্ট) ও সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট লাইফ সাইকেলের উপর দক্ষ হতে হবে। প্রজেক্ট স্টেক হোল্ডার আইডেন্টিফাই ও ম্যানেজমেন্টের দক্ষতা থাকতে হবে। স্ট্র্যাটেজি অ্যানালাইসিস ও প্ল্যানিং প্রিভিউ করার দক্ষতা থাকতে হবে। ভিজ্যুয়াল মডেলিং, অ্যাডভান্সড প্রসেস ম্যাপিং, ফ্লো চার্ট, মাইক্রোসফট ভিজিও এবং সফটওয়্যার টেস্টিংয়ে পারদর্শী হতে হবে।

উপরের দক্ষতাগুলো ছাড়াও, একজন বিজনেস অ্যানালিস্টের কিছু সাধারণ দক্ষতা থাকা উচিত। সেগুলো হচ্ছে, ক্রিটিক্যাল থিংকিং করার দক্ষতা থাকতে হবে। জটিল সমস্যায় দ্রুত সমাধান বের করার ক্ষমতা থাকতে হবে। যেকোনো বিষয়ে আস্থা রাখার মতো মন মানসিকতা থাকতে হবে। বিভিন্ন পরিবেশে খাপ খাওয়ানোর দক্ষতা থাকতে হবে। অসাধারণ যোগাযোগ দক্ষতা থাকতে হবে। যেকোনো বিষয়ে বিচক্ষণতার সাথে নেগোসিয়েশন করার দক্ষতা থাকতে হবে। যেকোনো বিষয়ে ক্লায়েন্ট ও স্পন্সরকে মোটিভেশন ও কনভিন্স করার দক্ষতা থাকতে হবে। অসাধারণ ইন্টারপার্সোনাল দক্ষতার অধিকারী হতে হবে।

একজন বিজনেস অ্যানালিস্টের কী ধরনের শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকতে হবে? একজন বিজনেস অ্যানালিস্ট হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করার পূর্বে গণিত, টেকনিক্যাল সায়েন্স, আইটি, বিবিএ, কম্পিউটার সায়েন্স, কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং, বিজনেস ম্যানেজমেন্ট অথবা হিউম্যান রিসোর্সের উপর কমপক্ষে দুই থেকে চার বছরের স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করা যায়। তারপর, বিজনেস ম্যানেজমেন্ট অথবা প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্টের কোর্স করলেই একজন প্রফেশনাল বিজনেস অ্যানালিস্ট হিসেবে ক্যারিয়ার গড়া যায়।

একজন বিজনেস অ্যানালিস্টের কী ধরণের কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে? একজন বিজনেস অ্যানালিস্ট হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করার পূর্বে, আপনাকে কম্পিউটার সায়েন্স, ব্যবস্থাপনা, ব্যবসা, হিউম্যান রিসোর্স, পাবলিক কমিউনিকেশন, সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্টসহ বিভিন্ন খাতের ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ের উপর কমপক্ষে ২ থেকে ৫ বছরের অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হবে।

একজন বিজনেস অ্যানালিস্টের বেতন কেমন হতে পারে? যদি আপনি একজন বিজনেস অ্যানালিস্ট হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে চান, তাহলে আপনার বাৎসরিক বেতন এন্ট্রি লেভেল ও সিনিয়র লেভেলে ভিন্ন ভিন্ন হবে। এন্ট্রি লেভেলের একজন বিজনেস অ্যানালিস্টের বাৎসরিক বেতন হয় সর্বনিম্ন ২০ লক্ষ টাকা থেকে ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। সিনিয়র লেভেলের একজন বিজনেস অ্যানালিস্টের বাৎসরিক বেতন হয় সর্বনিম্ন ৩০ লক্ষ টাকা থেকে থেকে ৯০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত।

এছাড়াও, ব্যবসা খাতের অন্যান্য পদে বেতন স্কেলে তারতম্য দেখা যায়। যেমন: একজন প্রজেক্ট ম্যানেজারের বাৎসরিক বেতন ৩০ লক্ষ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৯০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হয়। আবার, একজন বিজনেস কনসালটেন্টের বাৎসরিক বেতন ২০ লক্ষ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৭০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

একজন বিজনেস অ্যানালিস্ট হিসেবে ক্যারিয়ার গড়াটা আপনার জন্য অনেক সহজ হয়ে যাবে, যদি আপনি আইন, ম্যানেজমেন্ট অথবা ব্যবসার উপর বেশ কিছু সার্টিফিকেট অর্জন করতে পারেন। বর্তমানে ব্যবসা ও ব্যবস্থাপনার উপর যেসব সার্টিফিকেশন কোর্সের গুরুত্ব অনেক বেশি, সেগুলো হচ্ছে, এনভায়রনমেন্টাল ল প্রোগ্রাম – উইলিয়াম এস রিচার্ডসন স্কুল, অনলাইন বিজনেস ল সার্টিফিকেট, এন্ট্রি সার্টিফিকেট ইন, বিজনেস অ্যানালাইসিস (ইসিবিএ), সার্টিফিকেশন অফ ক্যাপাবিলিটি ইন বিজনেস অ্যানালাইসিস (সিসিবিএ), সার্টিফাইড বিজনেস অ্যানালাইসিস প্রফেশনাল (সিবিএপি) তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট।

More News Of This Category