1. editor@islaminews.com : editorpost :
  2. jashimsarkar@gmail.com : jassemadmin :

ব্যবসার শুরুতে পেনশনের টাকাই ছিল সম্বল!

দীর্ঘ চাকরি জীবন শেষে অবসরে তিনি। বসে বসে খেলে পেনশনের টাকা শেষ হয়ে যাবে। তারপর? না বসে থাকার উপায় নেই। একটা কিছু করতে হবে। আর সেটা যদি হয় ব্যবসা তাহলে ভাল হয়। কিন্তু ব্যবসা করতে তো টাকার প্রয়োজন। এতো টাকা কোথায় পাবেন তিনি? স্ত্রীর সঙ্গে পরামর্শ করলেন।

আগপিছু না ভেবেই স্ত্রী তার পৈতৃক সম্পত্তির কাগজ তুলে দিলেন। ওই কাগজ নিয়েই ছুটলেন ব্যাংকে। বন্ধক রেখে নিলেন লোন। ওই টাকা দিয়ে অকশনের কিছু মেশিনপত্র কিনলেন। আর কৃষকের উপকারে লাগে এমন কোন কাজ তিনি করতে চাইলেন। দেশে রয়েছে উর্বরা জমি, প্রচুর নদীনালা এবং প্রচণ্ড পরিশ্রমী বিশাল জনগোষ্ঠী।

যারা কৃষক, প্রকৃতির অফুরন্ত দান এসব সম্পদ থাকার পরও আমরা কেন দরিদ্র থাকবো? যেই চিন্তা সেই কাজ। শুরু করলেন কৃষকের জন্য হালকা কৃষি উপকরণ তৈরি। সেটা ছিল ১৯৮০ সাল।

দরিদ্রপীড়িত উত্তরাঞ্চলের মানুষকে মাথায় রেখেই বিশুদ্ধ খাবার পানি ও সেচের পানি সরবরাহের যন্ত্রের মাধ্যমেই আরএফএল-এর যাত্রা শুরু। “যতই চাপাচাপি কর কোন লাভ নাই”- আরএফএলের চাপ কলের এ বিজ্ঞাপন মাত করে দেয় গোটা দেশ। হুমড়ি খেয়ে পড়ে আরএফএলের যন্ত্রপাতির দিকে।

আর পেছনে তাকাতে হয়নি তাদের। একের পর এক বাজারে আসে খাদ্য, প্লাস্টিক ও পিভিসি পণ্য। সবই দেখে সফলতার মুখ। আর এ সফলতার পেছনে যিনি কলকাঠি নেড়েছেন কিংবা নাড়ছেন তিনি হলেন ‘প্রাণ-আরএফএল’ গ্রুপের প্রাণ মেজর জেনারেল (অব.) আমজাদ খান চৌধুরী।

সেনাবাহিনীতে ২৫ বছর চাকরি করেছেন। সেখান থেকে জীবনের অর্জন অনেক কিছু। সেই দক্ষতাকে কাজে লাগিয়েই শুরু করেন পথচলা।
কৃষি উপকরণের পাশাপাশি কৃষিপণ্য উৎপাদন করা যায় কি না এ নিয়ে তিনি ভাবতে লাগলেন। প্রাথমিকভাবে কলা, পেঁপে আর রজনীগন্ধা ফুলের চাষ করার মাধ্যমে শুরু হয় কৃষিকাজ।

কিন্তু উৎপাদন আশানুরূপ হলেও মওসুম শেষ হবার পর সংরক্ষণের অভাবে সেগুলো নষ্ট হয়ে যায়। আর মওসুমের সময় দাম পড়ে যায়। কৃষক ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হয়। তখন মাথায় আসে উৎপাদন করার চেয়ে সেগুলো সংরক্ষণের জন্য প্রক্রিয়াজাত করাটাই হলো মুখ্য। তখন প্রক্রিয়াজাতকরণের দিকে মানোনিবেশ করেন আমজাদ চৌধুরী।

এর পরে ধীরে ধীরে কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাত করে বাজারজাতকরণের কার্যক্রম শুরু করে আরএফএল। কোম্পানির সিদ্ধান্ত অনুসারে বিভিন্ন দেশ থেকে অভিজ্ঞ লোক ফ্যাক্টরিতে আনা হয়। যারা দেশী কর্মীদের সঙ্গে থেকে তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে থাকলেন। এছাড়া কোম্পানির পক্ষ থেকে দক্ষ জনশক্তি তৈরির লক্ষ্যে বিভিন্ন দেশে কর্মীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হলো।

পরে সেসব অভিজ্ঞতার প্রয়োগ শুরু হলো। এ পদ্ধতি অনুসরণ করার কারণে ধীরে ধীরে কোম্পানির উৎপাদনক্ষমতা বাড়তে থাকে। কোম্পানির কাজের পরিধি বাড়তে থাকলো। নতুন নতুন পণ্য উৎপাদনে নেয়া হয় মহাপরিকল্পনা। এ পরিকল্পনার অংশ হিসাবে খাদ্য ও প্লাস্টিক দুই খাতেই সমানভাবে এগোতে থাকে প্রতিষ্ঠানটি।

এ দুটি প্রধান খাতে সর্বাধিক বহুমুখী পণ্যের সমাহার রয়েছে ‘প্রাণ-আরএফএল’ গ্রুপে। পাশাপাশি ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিক্স পণ্যও নিয়ে আসা হয়। দেশের বৃহত্তম খাদ্যপণ্য প্রক্রিয়াজাতকারী প্রতিষ্ঠান ‘প্রাণ’ এর প্রোডাক্ট লাইনে রয়েছে ৫০০টির অধিক পণ্য। লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং এবং প্লাস্টিক খাতে ‘আরএফএল’ এর রয়েছে ৩০০০’র অধিক পণ্য।

দেশজুড়ে বিস্তৃত ১৩টি অত্যাধুনিক কারখানায় বর্তমানে ‘প্রাণ-আরএফএল’ গ্রুপের পণ্যসমূহ উৎপাদিত হয়। এসব কারখানায় সরাসরি কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে প্রায় ৫০ হাজারের বেশি নারী-পুরুষের। পরোক্ষভাবে প্রায় লক্ষাধিক লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। প্রাণ আরএফএল গ্রুপ এর উপর নির্ভর করে আরও প্রায় ৭ লাখ মানুষের জীবন ও জীবিকা।

কৃষিকে সমৃদ্ধ করার স্বপ্ন নিয়ে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের সূচনা। কৃষককের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে এর নিরন্তর পথচলা। চুক্তিভিত্তিক কৃষিকাজে প্রাণ বাংলাদেশের কৃষিখাতে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। উৎপাদিত পণ্যের বাজারজাত করতে এবং ন্যায্যমূল্য পেতে বাংলাদেশের কৃষকরা সবসময়ই শন্তিতে থাকত।

মধ্যস্বত্ব ভোগীদের দৌরাত্ম্য থেকে প্রান্তিক পর্যায়ে ক্ষুদ্র চাষিদের রক্ষা করতে এবং তাদেরকে ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করে ‘প্রাণ’। ‘কন্ট্রাক্ট ফার্মিং’ তথা চুক্তিবদ্ধ চাষাবাদের মাধ্যমে চাষিদের উন্নতমানের বীজ, সার-কীটনাশক প্রভৃতির ব্যবস্থা করা হয়। সেই সঙ্গে কোন ফসলের জন্য বছরের কোন সময়ে কি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে তা সে বিষয়ে হাতেকলমে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়।

কৃষকেরা জমিতে উৎপাদন শুরু করলে প্রাণ সেগুলো উৎপাদনে তদারকি করতে থাকে যাতে ভাল ফসল ফলে। এর পরে ফসল ওঠার পরে তাদের কাছে থেকে প্রাণ সেই ফসল কিনে থাকে। এক্ষেত্রে কৃষক প্রতিনিধি সঙ্গে নিয়ে বাজারদর যাচাই করে পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করা হয়। বর্তমানে ‘প্রাণ এর সিংহভাগ কাঁচামাল সংগৃহীত হয় ‘কন্ট্রাক্ট ফার্মিং’ তথা চুক্তিবদ্ধ কৃষকদের মাধ্যমে।

প্রাণ এর বিভিন্ন প্রকার জুস, দুগ্ধজাত পণ্য, মসলা ও অন্যান্য পণ্য প্রস্তুত করতে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল বিশেষ করে উত্তরাঞ্চল থেকে ‘প্রাণ’ এর নিজস্ব চুক্তিবদ্ধ কৃষক ও খামারি ছাড়াও স্থানীয়ভাবে কৃষকদের কাছে থেকেও কাঁচামাল হিসাবে এ সকল পণ্য কেনা হয়। পণ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে আম, তরল দুধ, চাল, মসলা, ডাল, বাদাম, টমেটো ও অন্যান্য কৃষিজাত পণ্য।

স্থানীয় বাজার থেকে প্রাণ এই সকল কৃষিপণ্য ক্রয় করার ফলে ৭৮ হাজারের অধিক কৃষক ও ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক পর্যায়ের খামারিগণ সরাসরি উপকৃত হচ্ছে। শুধু ব্যবসার প্রসার করেনি প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ। নিশ্চিত করেছেন নিজেদের পণ্যের গুণগত মান। এর অংশ হিসাবে তারা বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সনদ লাভ করেছে। এগুলো হচ্ছে- আইএসও ৯০০১:২০০৮, আইএসও ২২০০০:২০০৫।

‘প্রাণ-আরএফএল’ ২০০০ সালে প্রথম আইএসও সনদ লাভ করে। এছাড়া প্রাণের সকল পণ্য হালাল সনদ প্রাপ্ত। জাতীয় রপ্তানি ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রাখায় প্রাণ ১৯৯৯-০০ অর্থবছর থেকে শুরু করে (২০০৫-০৬ বাদ দিয়ে) ২০১০-১১ অর্থবছর পর্যন্ত জাতীয় রপ্তানি ট্রফি অর্জন করেছে।

রপ্তানি কার্যক্রমে প্রাণ-আরএফএল বাংলাদেশে যুগান্তকারী সফলতা পেয়েছে। ‘প্রাণ’ স্থানীয় বাজারে একটি শক্তিশালী ব্র্যান্ড। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে ‘প্রাণ’ এর অর্জন আরও আনেক বেশি। দেশের ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকদের উৎপাদিত কৃষিজ পণ্য প্রক্রিয়াজাত করে উন্নত বিশ্বের ভোক্তাদের খাবার টেবিলে পৌঁছে দেবার লক্ষ্যে কাজ শুরু করে প্রাণ।

১৯৯৬ সালে ফ্রান্সে ‘প্রাণ’ পণ্য প্রেরণের মাধ্যমে বহির্বিশ্বে রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হয়। বিশ্বের এমন অনেক দেশ রয়েছে যেখানে বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশন নেই কিন্তু সেখানে ‘প্রাণ’ বাংলাদেশের পতাকা বহন করছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের পরিচিতি বিস্তৃত করতে পেরে ‘প্রাণ’ পরিবার গর্বিত। ‘প্রাণ’ পণ্য সুদূর আফ্রিকা মহাদেশ ছাড়াও এশিয়া, ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের ১০৬টির বেশি দেশে নিয়মিত রপ্তানি হচ্ছে।

সমাজকল্যাণে প্রাণ উল্লেখযোগ্য কাজ করে যাচ্ছে। লাভজনক ব্যবসায়িক কার্যক্রমের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিপূর্বক মানুষের মর্যাদা ও আত্মসম্মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে ‘প্রাণ-আরএফএল’ গ্রুপ কাজ করে যাচ্ছে। সামাজিক দায়বদ্ধতার বিষয়টি মাথায় রেখেই ব্যবসায় অগ্রসর হচ্ছে প্রাণ-আরএফএল।

এক্ষেত্রে আমরা গ্রামীণ জনগোষ্ঠী বিশেষ করে গ্রামীণ মহিলাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করছে কোম্পানিটি। প্রাণ-আরএফএল-এর বিভিন্ন ফ্যাক্টরিতে কর্মীদের মধ্যে মহিলা কর্মীর সংখ্যা প্রায় ৮০ শতাংশেরও বেশি। সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে প্রাণ-আরএফএল শিক্ষা ক্ষেত্রে সহায়তা প্রদান করে আসছে।

ডেইরি শিল্পের উন্নয়নে খামারিদেরকে পশুপালন বিষয়ক প্রশিক্ষণ, পশু চিকিৎসা ও ওষুধ সরবরাহ, রোগপ্রতিষেধক টিকা প্রদান, কৃত্রিম প্রজনন, গবাদি পশুর জন্য উপযুক্ত খাবার সরবরাহ, দুগ্ধখামারিদের সুসংহত করা ও তাদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করে থাকে প্রাণ। কৃষি ক্ষেত্রের উন্নয়নে সার-বীজ সরবরাহ, উন্নত চাষের জন্য প্রশিক্ষণ এবং উৎপন্ন ফসল বাজারজাতকরণের ব্যবস্থা করছে প্রতিষ্ঠানটি।

এছাড়া নরসিংদী জেলার ঘোড়াশাল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সার্বিক পরিচালনাসহ বেশকিছু স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের টিফিন প্রদান করে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ। গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জে মুলগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন দ্বিতল ভবন নির্মাণ, আরএফএল ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক সংলগ্ন স্থানে মসজিদ ও শ্মশান ঘাট স্থাপনও করেছে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ।

এছাড়া নরসিংদী জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের মাঝে বৃত্তি প্রদান করে থাকে। ব্যবসায় সফলতার রহস্য সম্পর্কে আমজাদ খান চৌধুরী বলেন, মানুষ সবসময় মনে করে অতীতের কোন কাজ বর্তমানে অন্যভাবে করলে ভাল হতো। আমি ব্যক্তিগত ভাবে এমন কোন সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগি না।

কিছু কিছু কাজ এখন করলে হয়ত ভাল করতে পারতাম কিন্তু আমি সেসব বিষয় নিয়ে মাথা ঘামাই না। আর একটি বিষয় তা হলো আমি সমালোচনা এড়িয়ে চলতে চাই। নেতৃত্ব ভাল হলে সেখানে সাফল্য অবশ্যই সম্ভব। এটাই আমাদের সাফল্যের মূলমন্ত্র। আর সফলতার কারণ যদি বলি তাহলে বলতে হয় সফলতা কোন একটি বিষয়ের উপর নির্ভর করে না।

সফলতা একটি সামগ্রিক বিষয়। সফলতা অর্জনের জন্য প্রথম যা প্রয়োজন তা হলো পরিশ্রম আর সময়মতো কাজ সম্পাদন করা। মানুষের জীবনে সময় অত্যন্ত সীমিত। এই সীমিত সময়ে আপনি যদি সফলতা অর্জন করতে চান তবে সময়মত কাজ সম্পাদনের বিকল্প নেই। সেজন্য প্রতিটি ক্ষেত্রেই ‘টাইম ম্যানেজমেন্ট’ অত্যন্ত প্রয়োজন।

এছাড়া টিম ওয়ার্ক, ক্লায়েন্ট স্যাটিসফেকশন, জব স্যাটিসফেকশন প্রভৃতিও অত্যন্ত জরুরি। আর এই সবকিছুর সমন্বয়ে মানসম্পন্ন পণ্য উৎপাদন সম্ভব যা ব্যতীত সফলতা আশা করা যায় না। আমাদের সকল ক্ষেত্রে আমরা কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, টোটাল কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, গুড মেনুফেকচারিং প্র্যাকটিস প্রভৃতির চর্চা করে থাকি।

কোম্পানির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে আমজাদ খান চৌধুরী বলেন, আমাদের অন্যতম লক্ষ হলো প্রাণ-আরএফএল গ্রুপকে বাংলাদেশের প্রথম বহুজাতিক কোম্পানি (মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি) হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা। এ জন্য ভারতে প্রোডাকশন প্লান্ট স্থাপনের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

আর একটি বিষয় তা হলো, বিগত কয়েক দশকে দেশের সামগ্রিক কৃষি ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হলেও দুগ্ধশিল্প আশানুরূপ বিকাশলাভ করতে পারেনি। দুগ্ধশিল্পে ব্যাপক উন্নয়নের সুযোগ থাকলেও হাতে গোনা দুই একটি ছাড়া তেমন কোন বৃহৎ উদ্যোগ নজরে পরে না।

দুগ্ধশিল্প এমন একটি খাত যেখানে সকল বয়সের নারী পুরুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে। ডেইরি শিল্পের বিকাশের মাধ্যমে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা সম্ভব। দুগ্ধশিল্পের উন্নয়নের জন্য সমপ্রতি প্রাণ ব্যাপক বিস্তৃত পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।

প্রান্তিক পর্যায়ে দুগ্ধখামারিদের বিভিন্ন ধরনের সহায়তা যেমন পশুপালন বিষয়ক প্রশিক্ষণ, পশু চিকিৎসা ও ওষুধ সরবরাহ, রোগপ্রতিষেধক টিকা প্রদান, কৃত্রিম প্রজনন, গবাদি পশুর জন্য উপযুক্ত খাবার সরবরাহ, দুগ্ধখামারিদের সুসংহত করা ও তাদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করে থাকে প্রাণ।

এছাড়া দেশব্যাপী ডেইরি হাব স্থাপনের মাধ্যমে ডেইরি শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকল প্রকার সহায়তা প্রদানের ব্যবস্থা করছি। উৎপাদনকারীদের কাছে থেকে দুগ্ধ সংগ্রহের লক্ষ্যে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ১০২টি দুগ্ধ সংগ্রহ ও শীতলীকরণ কেন্দ্র রয়েছে। ফলে প্রান্তিক পর্যায়ের দুগ্ধ উৎপাদনকারীগণ উপকৃত হবে।

‘প্রাণ-আরএফএল’ গ্রুপের স্বপ্নদ্রষ্টা আমজাদ খান চৌধুরী’র জন্ম ১৯৪০ সালে নাটোর জেলার সম্ভ্রান্ত চৌধুরী পরিবারে। নাটোরের ঐতিহ্যবাহী চৌধুরী পরিবারের মরহুম আলী কাশেম খান চৌধুরী তার পিতা। আমজাদ খান চৌধুরী শিক্ষা জীবন শুরু করেন ঢাকায়, গ্র্যাজুয়েশন করেন পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমী এবং অস্ট্রেলিয়ান স্টাফ কলেজ থেকে।

তিনি ১৯৫৬ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। কর্মজীবনে তিনি সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। মেজর জেনারেল আমজাদ খান চৌধুরী (অব.) ১৯৮১ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে অবসর নেন। জনাব আমজাদ-এর সহধর্মিণী মিসেস সাবিহা আমজাদ। এই দম্পতির ৪ সন্তান। তারা হলেন- আজার খান চৌধুরী, আহসান খান চৌধুরী, ডা. সেরা হক এবং উজমা চৌধুরী।

তাদের মধ্যে আহসান খান চৌধুরী গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং উজমা চৌধুরী গ্রুপের পরিচালক (কর্পোরেট ফিন্যান্স) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আমজাদ খান চৌধুরী বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যিক সংগঠন যেমন: রিহ্যাব, বাপা, ইউসেপ সহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতিসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন।

এছাড়া তিনি মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি হিসেবে ব্যবসায়িক সমপ্রদায়ের নেতৃত্বও দিয়েছেন। দেশের অসংখ্য বেকারের কর্মসংস্থানের মাধ্যমে তিনি দেশের বেসরকারি সেক্টরে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। কৃষকের স্বপ্ন নিয়ে যাত্রা শুরু করে ‘প্রাণ-আরএফএল’ গ্রুপ ছুটে চলেছে দেশ থেকে দেশান্তরে। তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট।

More News Of This Category