ব্যাংকের লোন আপনাকে অনেক কিছু করতে সাহায্য করতে পারে কিন্তু ব্যাংক থেকে লোন পাওয়ার প্রক্রিয়াটি একটু জটিল হতে পারে। লোনের পক্রিয়ায় যেকোন ভুল লোন পাওয়ার জন্য যেমন ব্যয়বহুল হতে পারে, তেমনি আপনার লোনের আবেদনটি প্রত্যাখ্যানও হতে পারে। আপনি যদি লোন নেয়ার প্রয়োজন মনে করেন, তাহলে আপনি কত টাকা ঋণ নিতে চাচ্ছেন, কত দিনের মধ্যে আপনার ঋণের টাকা দরকার সে সম্পর্কে আপনার পূর্ণ ধারণা থাকতে হবে।
ব্যাংক লোন পাওয়ার উপায় সম্পর্কে ধারণা থাকলে আপনি খুব সহজেই লোন পেতে পারেন। অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন লোন নিবো কিভাবে, নিম্নে ব্যাংক থেকে লোন তোলার নিয়মগুলি নিম্নরূপ: আপনার প্রয়োজনীয়তা নির্ধারণ করুন: প্রথম ধাপ হল আপনি কি উদ্দেশ্যে লোন নিতে চাচ্ছেন। তার মানে আপনি কোন ধরণের লোন কী উদ্দেশ্যে নিতে চান সেটি আপনাকে ঠিক করে নিতে হবে। কিছু সাধারণ লোনের ধরণগুলো হল-
অটো লোন: গাড়ি কেনার জন্য। হোম লোন: বাড়ি কেনার জন্য।পার্সোনাল লোন: যে কোণ উদ্দেশ্যে ব্যবহার করার জন্য।বিজনেস লোন: ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য।এডুকেশন লোন বা স্টুডেন্ট লোন: পড়াশুনার জন্য। প্রবাসি লোন: বিদেশে যাওয়ার জন্য। কৃষি ঋণ। উপরিউক্ত লোনের ক্যাটাগরি থেকে আপনাকে আপনার প্রয়োজন অনুসারে কোন লোন আপনার দরকার, সেটি নির্বাচন করে নিতে হবে। লোনের ধরণ নির্বাচন করতে পারলে এক দিকে যেমন লোন পাওয়া অনেক সহজ হয়ে যাবে, অন্যদিকে লোনের পাওয়ার খরচও অনেক কমে যাবে ।
কোন প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিবেন: কোন ব্যাংক লোন দেয় সেটি সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। কোন প্রতিষ্ঠান থেকে লোন নিবেন সেটি আপনাকে আগে থেকেই নির্বাচন করতে হবে। একটি ব্যাংক সব ধরণের লোন প্রদান করে না। আবার, সব ধরণের লোন প্রদান করলেও সহজ শর্তে লোন পাওয়া গ্রাহকের জন্য সহজ হয় না। যেমন- কিছু ব্যাংক বা নন ব্যাংক ফাইন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউট ব্যবসায়ের জন্য সহজ শর্তে ঋণ প্রদান করে। আবার কিছু ব্যাংক পার্সোনাল লোন বা স্যালারি লোনের জন্য সহজ শর্তে ঋণ প্রদান করে।কোন ব্যাংক লোন দেয়
লোন নেয়ার জন্য অধিকাংশ ক্ষেত্রে ব্যাংকই ভাল সেবা প্রদান করে থাকে । যদিও ব্যাংক ছাড়াও অন্য প্রতিষ্ঠানও লোন প্ৰদান করে থাকে। সব সময় চেষ্টা করবেন ব্যাংক থেকে লোন নেয়ার। লোন নেয়ার পূর্বে অবশ্যই বিভিন্ন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান সুদের হার এবং পোর্সসিং ফি সহ আনুষঙ্গিক খরচাদি কত হবে তা জেনে নিতে হবে। যে ব্যাংক সুদের হার এবং প্রসেসিং ফী কম সেই ব্যাংককেই লোন নেয়ার জন্য নির্বাচন করতে হবে।
কিছু মানুষ তার বন্ধু বান্ধব, ফ্যামিলি অথবা প্রাইভেট কোন প্রতিষ্ঠান থেকে লোন নিয়ে থাকে। যদিও এই লোন পাওয়া সহজ এবং খরচ কম কিন্তু এই লোন নানা ধরণের সমস্যা তৈরি করে। একটা পর্যায়ে গিয়ে দেখা যাবে যে এই লোন সম্পর্ক নষ্ট করছে। তাই এ ধরণের লোন নেওয়া থেকে সব সময় দূরে থাকবেন। যত প্রয়োজনই হোক না কেন আপনি কখনই উচ্চ সুদের হারে কখনও ঋণ নিতে যাবেন না।
কারণ, উচ্চ সুদের হারে ঋণ নিয়ে কখনই সুবিধা করা যায় না। উচ্চ সুদের হারে ঋণ নিলে একটা পর্যায়ে গিয়ে আপনি অধিক ঋণে জর্জরিত হয়ে যাবেন। ঋণের জাল থেকে বের হওয়া অনেক কঠিন হয়ে যাবে। কিছু ব্যাংক খুবই দ্রুত সময়ের মধ্যে লোন প্রদান করে বিশেষ করে ৭ কর্মদিবসের মধ্যে ঋণ প্রদান করে থাকে। তবে এ ধরণের ব্যাংকগুলোতে সুদের হার একটু বেশি হয়ে থাকে।
লোন পাওয়ার শর্ত: ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণ নেওয়ার কী কী শর্ত আছে তা জেনে নিন এবং সেই শর্তগুলো আপনি পূরণ করতে পারবেন কিনা তা যাচাই করুন। সেই শর্তগুলো পূরণ করতে পারলেই কেবল লোনের জন্য আবেদন করুন। ইনস্টলমেন্টের আকার ব্যাংক থেকে লোন তোলার নিয়ম: আপনাকে মাসে কত টাকা প্রদান করতে হবে, সে সম্পর্কে আগে থেকেই জেনে নিন।
ইএমআই (ইকুয়েটেড মান্থলি ইনস্টলমেন্ট) এর আকার আপনি অনলাইন থেকেও বের করে নিতে পারেন। সে জন্য আপনাকে লোনের পরিমান এবং সুদের হার সম্পর্কে জেনে নিতে হবে। আপনার মাসিক আয়ের সাথে ইএমআই অবশ্যই মিলিয়ে নিতে হবে। আয়ের তুলনায় ইএমআই বেশি হলে আপনার জীবন যাত্রার উপর বিরূপ প্রভাব পড়বে। তাই আগে থেকেই ইএমআই জেনে নিন।
ডকুমেন্ট সাবমিট করুন: লোনের জন্য আবেদন আবেদন করার সময় লোন পাওয়ার জন্য সাধারনতঃ বিভিন্ন ধরণের যে সকল ডকুমেন্ট প্রয়োজন হয় তা হল: ১। আবেদন ফর্ম যথাযথভাবে পূরণকৃত এবং স্বাক্ষরিত ২। আবেদনকারীর ফটোগ্রাফ ২। জাতীয় পরিচয় পত্র ৩। অফিস আইডি ৪। ভিজিটিং কার্ড ৫। স্যালারি সার্টিফিকেট / পে স্লিপ
৬। টি অ্যান্ড টি / মোবাইল ফোন / গ্যাস বিল / ইউটিলিটি বিল ইত্যাদির বিল কপি ৭। টিআইএন / আয়কর রিটার্নের অনুলিপি ৮। চেকের পাতা ৯। বৈধ পাসপোর্ট / ড্রাইভিং লাইসেন্সের অনুলিপি / অন্যান্য ১০। ব্যাংক স্টেটমেন্ট (নূন্যতম ৬ মাস) ১১। অন্যান্য ব্যাংক ঋণ অনুমোদনের চিঠি (স্যাংশন লেটার) ১২। অন্যান্য আয়ের প্রুফ ডকুমেন্টস ১৩। ট্রেড লাইসেন্স / শেয়ার মূলধনের সংক্ষিপ্তসার
১৪। অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠানের স্মারকলিপি এবং অ্যাসোসিয়েশন / অংশীদারি চুক্তির নিবন্ধ ১৫। ভাড়া চুক্তি / মালিকানা দলিলসমূহ ১৬। ভাড়া / অন্যান্য আয়ের পরিদর্শন প্রতিবেদন ১৭। অন্যান্য নথি যদি থাকে ১৮। গ্যারান্টারের ফটোগ্রাফ, জাতীয় পরিচয়পত্র, অফিস আইডি, ভিজিটিং কার্ড। অতিরিক্ত কাগজপত্র: ১৯। গাড়ি উদ্ধৃতি ২০। গাড়ির বিবরণ ২১। যানবাহনের নিবন্ধন ২২। যানবাহনের বীমা তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট।