1. editor@islaminews.com : editorpost :
  2. jashimsarkar@gmail.com : jassemadmin :

যেভাবে শুরু করবেন ব্যবসা!

অর্থের নিশ্চয়তা দিবে এমন একটা ব্যাবসায়ীক আইডিয়া চান? কিভাবে শুরু করবেন ঠিক করতে পারছেন না? একটু সময় নিয়ে দেখে নিন কিভাবে শুরু করবেন একটা সফল ব্যবসা। প্রথমে শুরু করা যাক “কেন” দিয়ে! কারন আপনি যখন জানবেন কোন কাজ আপনি কেন করতে চান, তাহলে পরবর্তী পদক্ষেপগুলো ঠিক করতে আপনার সুবিধা হবে। তাহলে কাগজ কলম নিয়ে বসে যান কেনর উত্তর খুঁজতে।

আপনি কেন ব্যাবসা করতে চান? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে লিখে ফেলুন। আপনার উত্তরগুলো নিচের মতো হতে পারে। আমি কিছু একটা করতে ভালবাসি, আমার অতিরিক্ত কিছু উপার্জন প্রয়োজন, আমার কাজে স্বাধীনতার প্রয়োজন, আমি আমার কাজের মাধ্যমে অন্যকে সাহায্য করতে চাই, অথবা আমার চাকরিটি অত্যন্ত বিরিক্তিকর, উত্তরগুলো থেকে আপনার ব্যাবসা করার মূল উদ্দেশ্যটি অথবা উদ্দেশ্যগুলো বের করে ফেলুন। “আপনার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুটি দিন হলো, আপনি যেদিন জন্মেছেন এবং যেদিন আপনি আবিস্কার করলেন আপনি কেন জন্মেছেন”- মার্ক টোয়েন

আপনার দক্ষতার জায়গা দিয়ে শুরু করুনঃ প্রতিটি ব্যাবসা এবং চাকরির মূল উদ্দেশ্য হলো সমস্যা সমাধান করা। এমন একটি সমস্যা খুঁজে বের করুন যেটার মুখোমুখি হচ্ছে অনেক মানুষ এবং সমাধান খুঁজছে। এরকম আরও কিছু সমস্যা খুঁজে বের করুন এবং সবচেয়ে ভালো সমস্যাটি চিহ্নিত করুন। মনে রাখবেন সেই সমস্যা সমাধানে আপনার কিছু আইডিয়া ও দক্ষতা থাকতে হবে।

প্রতিটি মানুষই নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে দক্ষ হয়। তবে বেশীরভাগ মানুষই খুঁজে পায়না তারা তাদের দক্ষতাকে কিভাবে অন্যের উপকারে কাজে লাগাবে। আপনি কিসে দক্ষ খুঁজে বের করুন। আপনি আপনার পরিবার ও বন্ধুদের কাছ থেকে ধারনা নিতে পারেন আপনি কিসে দক্ষ। এমনও হতে পারে তারা আপনার এমন একটি গুন দেখিয়ে দিলো যেটা আপনি নিজেও খুঁজে পাননি।

এমন নয় যে কোন বিষয়ে আপনাকে পণ্ডিত হতে হবে। হতে পারে আপনি সেই বিষয়ে ভালো অথবা সেই বিষয়টির প্রতি আপনার প্রচণ্ড ঝোঁক আছে। রে হিগডন নামের একজন সফল ব্যাবসায়ী বলেছেন, “ বিনিয়োগ করুন, শিখতে থাকুন তারপর শেখান”। সুতরাং একই সাথে কাজ করে যাওয়া এবং শেখার মাধ্যমে আপনি এগিয়ে যেতে পারেন। দক্ষতা বৃদ্ধিতে তাই নিজের ওপর বিনিয়োগ করুন সেটা সময় অথবা অর্থ দুটোই হতে পারে। আপনার নির্বাচিত সমস্যার বিভিন্ন দিক সম্পর্কে আরও বেশী জানুন। যেগুলো শিখলেন সেগুলো অন্যদের শেখান এবং তাদের কাজে লাগানোর চেষ্টা করুন।

পরবর্তী ধাপে আপনাকে কিছু গবেষণা করতে হবে। আপনি ঠিক মানুষদের কোন সমস্যা নিয়ে কাজ করতে চান অথবা পারবেন? এই ধাপে একটি নির্দিষ্ট “নিস” ঠিক করে নেওয়াটা জরুরী। “নিস” হচ্ছে মূলত একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের গুরুত্বপূর্ণ ক্ষুদ্রাংশ অথবা বলা যায় একটি নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর নির্বাচিত একটি ক্ষুদ্রাংশ। ধরে নেওয়া যাক আপনি একজন গৃহিণী এবং আপনার রান্না করা খাবার দাবার আপনার বাচ্চারা খুব পছন্দ করে। তাহলে আপনার নিস হওয়া উচিৎ একজন সফল গৃহিণী। এবার আপনি বিভিন্ন পত্রপত্রিকা, ম্যাগাজিন আর ইন্টারনেট ঘেঁটে এই বিষয়ে ভালো ধারনা ও সম্ভাবনার কথা জানুন।

“আপনি যেটা করতে পছন্দ করেন সেটাই যদি আপনার কাজ হয়, তাহলে সেটাই হবে আপনার আয়েশের প্রধান উপায়”- ক্রিস্টিয়ান লুবোটিন। গবেষণা করার সময় কি কি বিষয় লক্ষ্য রাখবেন? প্রথমেই আপনি যে বিষয় নিয়ে কাজ করতে চান সে বিষয়টির মূল চাহিদা আর সমস্যাগুলো চিহ্নিত করুন। বিশেষ করে যে চাহিদা ও সমস্যাগুলোর সমাধান মানুষের প্রায়ই দরকার পরে।

যেমন ধরুন গবেষণা করে আপনি দেখতে পেলেন, সুস্বাদু রান্না করা গৃহিণীদের জন্য কোন সমস্যা নয়, বরং রান্না করার জন্য যে সময় অথবা অর্থের প্রয়োজন সেটাই অপ্রতুল। অথবা রান্নার উপকরণ প্রয়োজনের সময় তারা হাতের কাছে পাচ্ছেনা। আপনি এধরনের সমস্যাগুলো খুঁজে বের করুন এবং সেগুলো টুকে রাখুন। তারা সমস্যা সমাধানের জন্য কোন বিষয়গুলি অনুসন্ধান করছে সেগুলো ভালোভাবে খেয়াল করুন এবং টুকে রাখুন। যেমনঃ স্বাস্থ্যকর খাবার অথবা সুস্বাদু খাবার, তাড়াতাড়ি করা যায় অথবা সহজে করা যায়।

এরপর এমন কিছু পণ্য অথবা সেবা খুঁজে বের করুন যেগুলো এই সমস্যাগুলোর সমাধান দেয়। এই পণ্য ও সেবাগুলো থেকে খুঁজে বের করুন আপনি কোনটির সমাধান সবচেয়ে ভালোভাবে দিতে পারবেন। কিভাবে দিতে পারবেন সেটাও ঠিক করুন। হতে পারে ইউটিউব চ্যানেল খুলে সমাধান দেওয়া, একটা রান্নার বই লিখে ফেলা, অনলাইন শপ তৈরি করা অথবা অনলাইনে কোর্স করানো।

এই পদ্ধতিতে আগানোর সময় আপনাকে তিনটি বিষয়ও নিশ্চিত করে রাখতে হবেঃ ১ বিক্রয়যোগ্য দক্ষতাঃ আপনাকে জানতে হবে আপনি সমস্যা সমাধানে কোন কোন নির্দিষ্ট বিষয়ে দক্ষ এবং সেই দক্ষতাকে আপনি ভালোভাবে কাজে লাগাতে পারেন। ২ প্রয়োজনীয়তাঃ আপনার দক্ষতার প্রয়োজন অথবা চাহিদা আছে এবং যাদের আপনার দক্ষতার প্রয়োজন আছে তাদের কাছে আপনি পৌঁছতে পারবেন। ৩ লাভজনক ব্যবসাঃ আপনার দক্ষতা, পণ্য অথবা সেবা কেনার জন্য মানুষ অর্থ ব্যায় করতে প্রস্তুত।

একটি সফল ব্যবসার শুরু এভাবেই করা উচিৎ। খেয়াল করবেন যে ফাস্ট ফুডের দোকানগুলো দ্রুত খাবার পরিবেশন করে সেগুলো জনপ্রিয়, যে সুপারশপে সব ধরনের পণ্যই পাওয়া যায় সেগুলো বেশী জনপ্রিয়, যে বই যত বেশী সুখপাঠ্য সেটাই বেস্টসেলার। আসলে প্রতিটি ব্যবসার পেছনেই রয়েছে মানুষের চাহিদা ও প্রয়োজনীয়তা। আর আপনি সেই চাহিদা অথবা প্রয়োজনীয়তার সবচেয়ে ভালো সমাধান দিয়ে ব্যবসা শুরু করতে যাচ্ছেন।

লেখাটি রুথ-জো কনেলের লেখা থেকে অনুদিত, সংগৃহীত তথ্যসূত্র: ফাপরবাজ ডট মি।

More News Of This Category