1. editor@islaminews.com : editorpost :
  2. jashimsarkar@gmail.com : jassemadmin :

সঞ্চয়পত্রের সুদ এখনই কমছে না!

দাতাদের চাপ সত্ত্বেও নির্বাচনের আগে সঞ্চয়পত্রের সুদহার কমানো হচ্ছে না। সুদহার কমিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে অজনপ্রিয় হতে চায় না সরকার। ফলে ব্যাংকের আমানতের সুদহার কমে গেলেও অর্থ বিনিয়োগের জনপ্রিয় মাধ্যমটি আগের মতোই আকর্ষণীয় থাকছে।

অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার সাধারণত ব্যাংকে আমানতের সুদের চেয়ে এক বা দেড় শতাংশ বেশি থাকে। কিন্তু এখন এটা অনেক বেশি হয়ে গেছে। এটা কমাতে হবে। তবে হারের পরিবর্তন যদি কিছু হয়ও, নির্বাচনের আগে হবে না। সচিবালয়ে সঞ্চয়পত্রের সুদের হার সমন্বয় করা-বিষয়ক এক বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের মো. ইউনুসুর রহমান, অর্থ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব আবদুর রউফ তালুকদার, জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শামসুন্নাহার বেগমসহ অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের (আইআরডি) কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

বেসরকারি ব্যাংকের উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি) গত ১ জুলাই থেকে ব্যাংকে আমানতের সুদ ৬ শতাংশ ও ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণের সুদ ৯ শতাংশ কার্যকর করার কথা বলে আসছে। কিন্তু সব ব্যাংক পুরোপুরি তা মানছিল না। বিএবি গত সপ্তাহে এ নিয়ে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে দুই দিন আলাদা বৈঠক করে। বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, ব্যাংকের নতুন সুদের হার ৯ আগস্ট থেকে কার্যকর করতে হবে। তার আগে সঞ্চয়পত্রের সুদের হার সমন্বয় (কমানো অর্থে) করার উদ্যোগ নিচ্ছেন তিনি।

সেই উদ্যোগের অংশই ছিল এই বৈঠক। সঞ্চয়পত্রের সুদের হার সমন্বয় করতে একটা কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং এই কমিটি আগামী দুই মাসের মধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগে একটি প্রতিবেদন দাখিল করবে—এসব কথা জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিবেদনের সুপারিশ অনুযায়ী সঞ্চয়পত্রের নতুন হার বাস্তবায়ন করবে আগামী নির্বাচনে জয়ী হওয়া সরকার। আশা করছি, আমরাই আবার সরকারে আসব এবং আমরাই তা বাস্তবায়ন করব।’

আগামী জানুয়ারি থেকে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের সব কার্যক্রম স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থার মধ্যে চলে আসবে বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী। বলেন, স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থায় এলে আর সমস্যা থাকবে না। তখন সঞ্চয়পত্র কেনার সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) একটা সংযোগ থাকবে এবং কেউ সীমার অতিরিক্ত সঞ্চয়পত্র কিনছেন কি না, তাও ধরা যাবে সহজেই।

বর্তমানে পাঁচ বছর মেয়াদি পরিবার সঞ্চয়পত্রের সুদ ১১ দশমিক ৫২ শতাংশ, পাঁচ বছর মেয়াদি পেনশন সঞ্চয়পত্রের সুদ ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ, পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রের সুদ ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ, তিন বছর মেয়াদি মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রের সুদ ১১ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ এবং তিন বছর মেয়াদি ডাকঘর সঞ্চয়পত্রের সুদ ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ।

অর্থ বিভাগ, আইআরডি এবং জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সরকারকে প্রতিবছর লক্ষ্যমাত্রার দ্বিগুণ এমনকি তিন গুণ সঞ্চয়পত্র বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে সরকারের ঋণ ব্যবস্থাপনায় বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, এখন তো আমানতের সুদের হার কমিয়ে ৬ শতাংশ করার কথা বলা হচ্ছে।

আমানতের হারের চেয়ে সঞ্চয়পত্রের সুদের হারে আগেই যেখানে বড় পার্থক্য ছিল, আর এখন তো পার্থক্য দ্বিগুণের কাছাকাছি হলো। বোঝাই যাচ্ছে, রাজনৈতিক কারণে সরকার এতে হাত দিতে পারছে না। এ অবস্থায় সরকার কী করতে পারে-জানতে চাইলে মির্জ্জা আজিজ বলেন, সুদের হার যেহেতু কমাতে পারছে না, সরকার বরং বাজেটে যে পরিমাণ সঞ্চয়পত্র বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ধরা আছে, তার মধ্যে থাকতে পারে। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়ে গেলে বছরের একটা পর্যায়ে এসে বিক্রি বন্ধ করে দিতে হবে। এতে তেমন কোনো সমস্যা হবে না।

তথ্যসূত্র: প্রথমআলো ডটকম।

More News Of This Category