1. editor@islaminews.com : editorpost :
  2. jashimsarkar@gmail.com : jassemadmin :

আমদানী কমেছে পুরাতন গাড়ি

মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ছে। গাড়ি কেনায় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ঋণও দিচ্ছে। রাইড শেয়ারিং কোম্পানির প্রসার ঘটেছে। গাড়ির বাজার বাড়ার এমন ইতিবাচক উপাদান থাকলেও বাস্তবের চিত্র উল্টো। একবার ব্যবহৃত বা পুরোনো গাড়ির চাহিদায় এখন কার্যত ভাটা চলছে। গত এক বছরে চট্টগ্রাম ও মোংলা সমুদ্রবন্দর দিয়ে পুরোনো গাড়ি আমদানির তথ্য পর্যালোচনা করে এমন চিত্রই পাওয়া গেছে।

সদ্যসমাপ্ত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দুই বন্দর দিয়ে পুরোনো গাড়ি আমদানি কমেছে সাড়ে ৯ হাজারটি। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে গাড়ি আমদানি কমেছে প্রায় ২৯ শতাংশ। গাড়ি ব্যবসায়ীরা জানান, নির্বাচনের আগে-পরে একধরনের অনিশ্চয়তা থেকে গাড়ির চাহিদা কমে যায়। এ কারণে গত অর্থবছর নির্বাচনের বছর হওয়ায় গাড়ি আমদানি কমেছে।

আবার গত অর্থবছর পুরোনো গাড়ি আমদানিতে শুল্কহারের সুবিধা ছিল সবচেয়ে কম। এ দুই কারণে গাড়ি আমদানি কমে গেছে। পুরোনো গাড়ি ব্যবসায়ীদের সংগঠন বারভিডার নবনির্বাচিত সভাপতি আবদুল হকবলেন, পুরোনো গাড়ি আমদানিতে শুল্ককরে যে সুবিধা ছিল, তা সবচেয়ে বেশি কমিয়ে আনা হয় গত অর্থবছর। তাতে পুরোনো গাড়ি আমদানিতে খরচ বেড়ে যায়।

আবার শুল্কহারে বৈষম্যের কারণে অনেক ক্ষেত্রে নতুন গাড়ির চেয়ে পুরোনো গাড়ির শুল্ককর বেশি পড়ছে। গাড়ি আমদানিতে বারবার নীতি পরিবর্তনের প্রভাবে ব্যবসায়ীরাও আমদানিতে অনেকটা রক্ষণশীল হয়ে গেছেন। পুরোনো গাড়ি আমদানির প্রধান দুটি পথ চট্টগ্রাম ও মোংলা সমুদ্রবন্দর।

এই দুই বন্দর দিয়ে গত অর্থবছরে পুরোনো গাড়ি আমদানি হয়েছে ২৩ হাজার ২৮৯টি। এর আগে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে আমদানি হয়েছিল ৩২ হাজার ৮২০টি। জাপান থেকেই সিংহভাগ পুরোনো গাড়ি আমদানি হয়। চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দরের তথ্য অনুযায়ী, গত ১৫ বছরে দুই বন্দর দিয়ে ৩ লাখ ৩৮ হাজার পুরোনো গাড়ি আমদানি হয়।

এ হিসাবে গড়ে প্রতিবছর দেশে সাড়ে ২২ হাজার পুরোনো গাড়ি আমদানি হয়েছে। এর মধ্যে ২০০৪-০৫ থেকে ২০০৭-০৮ অর্থবছর পর্যন্ত একটানা চার বছর গাড়ি আমদানিতে ভালো প্রবৃদ্ধি ছিল। এরপর ২০০৮-০৯ থেকে ২০১১-১২ পর্যন্ত চার বছর একটানা আমদানি কমেছে। এরপরের পাঁচ বছর আবার গাড়ি আমদানি বেড়েছে গড়ে। গত অর্থবছর থেকে তা আবার কমে গেছে।

আমদানি তথ্য অনুযায়ী, দেশে এ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি গাড়ি আমদানি হয়েছিল ২০০৮-০৯ অর্থবছরে। ওই বছর ৩৫ হাজার ৩৩৬টি গাড়ি আমদানি হয়। শেয়ারবাজারে উত্থান ও মানুষের হাতে নগদ টাকার সরবরাহ বাড়ায় সে সময় গাড়ির চাহিদা ব্যাপক হারে বেড়ে যায়। চাহিদা মেটাতে ব্যবসায়ীরাও আমদানি বাড়িয়ে দেন।

কোন গাড়ি কত কমেছে: চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি হওয়া গাড়ির তথ্য পর্যালোচনা করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। তাতে দেখা যায়, গত অর্থবছরে দেড় হাজার সিলিন্ডার ক্ষমতার এক্সিও, প্রিমিও, ফিল্ডার—এ ধরনের পুরোনো গাড়ি আমদানি কমেছে ৩ হাজার ১৩৯টি। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এক থেকে দেড় হাজার সিসির গাড়ি আমদানি হয় ৮ হাজার ৭৭২টি। গত বছর তা ৩৬ শতাংশ কমে দাঁড়ায় ৫ হাজার ৫৯৩টি।

আবার ১৬০০ থেকে ২০০০ সিসির আমদানি করা গাড়ির সংখ্যা ৪৯৯ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ২৯৮। পুরোনো গাড়ি আমদানি কমায় সরকারের রাজস্ব আয়ও কমেছে বলেও কাস্টমস জানিয়েছে। কাস্টমসের হিসাবে, এই দুই শ্রেণির গাড়ি থেকে রাজস্ব আদায় কমেছে ৩০৫ কোটি টাকা।

More News Of This Category