সরকারি খাতের বিশেষায়িত কর্মসংস্থান ব্যাংক বেকারদের জামানত ছাড়াই ঋণ দিচ্ছে। বিশেষ করে বেকারদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে কৃষিভিত্তিক ও ক্ষুদ্রশিল্পে এই ঋণ দিচ্ছে। এ ছাড়া ব্যবসা করতেও তারা ঋণ দিচ্ছে। ঋণের সুদের হার ১১ থেকে ১৩ শতাংশ। কিস্তিতে ঋণ শোধ করতে হয়। এ ছাড়া যারা বিশেষ সময়ে বেকার থাকেন বা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ব্যবসা বাড়িয়ে আরও নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে চান তাদেরও এই ব্যাংক ঋণ দিচ্ছে।
বেশিরভাগ ঋণের ক্ষেত্রে কোনো জামানত নেওয়া হয় না। বেকারদের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতার মূল সনদ ব্যক্তিগত গ্যারান্টি জামানত হিসেবে নেওয়া হয়। অন্যান্য ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত গ্যারান্টির পাশাপাশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত বিষয়গুলো জামানত হিসেবে নেওয়া হয়।
দেশের বেকার সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে ১৯৯৮ সালে সরকারি মালিকানায় এই প্রতিষ্ঠানটি চালু করা হয়। সারা দেশে ব্যাংকের ১৫টি আঞ্চলিক কার্যালয় ও ২১২টি শাখা রয়েছে। প্রতিটি জেলা সদরে একটি করে মোট ৬৪টি, প্রধান শাখাসহ ঢাকায় রয়েছে ৭টি শাখা। উপজেলা সদরে রয়েছে ১৪২টি শাখা। সব শাখা থেকেই বেকারদের ঋণ দেওয়া হয়।
ঋণের অঙ্ক সর্বনিম্ন ৫ লাখ থেকে সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা। তবে ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপকদের মধ্যে আস্থার সঞ্চার করতে পারলে তারা আরও বেশি ঋণ দিতে পারেন। শুধু ব্যক্তিগত গ্যারান্টিতে ১ লাখ টাকা ঋণ দেওয়া হয়।
ঋণ পেতে হলে ব্যাংকের নির্ধারিত ফরমে (১০০ টাকা মূল্য) আবেদন করতে হবে। কোনো প্রসেসিং ফি নেই। আবেদন সর্বোচ্চ ৪৫ দিনের মধ্যে বিষয়টি নিষ্পত্তি করা হয়। কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়ার জন্য উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। শাখার অধিক্ষেত্রের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে। বয়স সাধারণত ১৮ হতে ৪৫ বছর। তবে পুরনো ঋণগ্রহীতাদের ক্ষেত্রে বয়সসীমা শিথিলযোগ্য। উদ্যোক্তাকে নিজস্ব উদ্যোগে কিছু মূলধনের জোগান দিতে হবে। প্রকল্প পরিচালনার বিষয়ে উপযুক্ত প্রশিক্ষণ বা অভিজ্ঞতাসহ আরও কিছু যোগ্যতা থাকতে হয়।
সরকারের বিশেষ কর্মসূচির আওতায় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীনে ঝুঁঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত শিশু শ্রম নিরসন প্রকল্প, শিল্প কলকারখানায় স্বেচ্ছাঅবসর বা কর্মচ্যুত শ্রমিক-কর্মচারীদের পুনঃপ্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থান কর্মসূচি এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে কৃষিভিত্তিক শিল্পে ঋণ সহায়তা কর্মসূচিতে ঋণ দেওয়া হয় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে। বিশেষ করে বেকার যুবদের আত্মকর্মসংস্থানে ক্ষুদ্র ঋণ কর্মসূচি, কৃষিভিত্তিক শিল্পে ঋণ কর্মসূচিতে জামানতবিহীন ঋণ দেওয়া হয়।
এ ছাড়াও মৎস্য, প্রাণী সম্পদের খামার, বিভিন্ন শিল্পকারখানা, ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প, সেবা খাত, বাণিজ্যিক খাত ও অন্যান্য উৎপাদনশীল প্রকল্প খাতে ঋণ দেওয়া হয়। কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে হলে ব্যাংকে একটি মাসিক কিস্তিভিত্তিক সঞ্চয়ী হিসাব প্রকল্প থাকতে হবে।
তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট।