শিক্ষা জীবনের শেষ হয়েছে বা শেষের দিকে এবার শুরু হবে ক্যারিয়ার গড়ার পালা। যদি ক্যারিয়ারের শুরুতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ গ্রহণ করেন তাহলে আপনার ক্যারিয়ারে ভালো সফলতা আসবে। কারণ ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই সঠিকভাবে এগিয়ে চলতে পারলে তা আপনার পেশাগত জীবনকে সঠিক দিকে চালাবে। যারা ক্যারিয়ার শুরু করতে যাচ্ছেন তাদের জন্য কিছু গরুত্বপূর্ণ পরামর্শ তুলো ধরা হল-
১. নজর দিতে হবে ভবিষ্যতের দিকে : পেশাজীবীদের জন্য সবচেয়ে বড় পরামর্শ হলো- বর্তমান বা অতীত নয়, সম্পূর্ণভাবে ভবিষ্যতের দিকে নজর দিতে হবে। আপনার জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণ করুন। আগামী দুই, পাঁচ কিংবা ১০ বছর পরে আপনি কোন অবস্থানে থাকতে চান, তা নির্ধারণ করুন। এরপর সে স্থানে পৌঁছানোর জন্য আপনার পরিকল্পনা তৈরি করুন। মনে রাখবেন, খুব তাড়াতাড়ি কোনো কিছু হয় না। পরিকল্পনা অনুযায়ী ধীরে ধীরে লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যেতে হয়।
২. সৎ থাকুন : জীবনকালে আপনি এমন কোনো চাকরি নিতে পারেন, যা আপনার প্রিয় নয়। শুধুই টাকার জন্য চাকরিটি নেওয়া। কিন্তু এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আপনার জীবনের লক্ষ্যের বিষয়টি চিন্তা করে নেওয়া উচিত। আপনার লক্ষ্য যদি থাকে যথাসম্ভব টাকা উপার্জন, আর চাকরিটি থেকে যথেষ্ট টাকা আসবে, তাহলে আপনার সিদ্ধান্ত পুরোপুরি সঠিক। আর আপনার লক্ষ্য যদি হয় ভিন্ন কোনো বিষয়, তাহলে এমন চাকরি ত্যাগ করাই ভালো। সেক্ষেত্রে আপনার সত্যিকার অর্থে ভালো লাগে, এমন কোনো কাজই খুঁজে দেখা উচিত। নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে চাপিয়ে দেওয়া কোনো কাজ আপনার লক্ষ্য অর্জনে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
৩. আস্থা রাখুন নিজের প্রতি : নিজেকে বিশ্বাস করুন। নিজের বিশ্বাস ও কাজের ওপর আস্থা রাখুন। ব্যর্থতার কারণে অনেকেরই এমন কোনো পর্যায় আসে, যখন নিজের যোগ্যতার ওপর বিশ্বাস হারানোর উপক্রম হয়। কিন্তু এটি শেষ কথা নয়। আপনি কোনো কাজ সাফল্যের সঙ্গে শেষ করতে পারবেন, এমনটা বিশ্বাস করতে হবে। নিজের প্রতি বিশ্বাস হারিয়ে ফেললে আপনি লড়াইয়ে দাঁড়াতেই পারবেন না।
৪. সমালোচনাকে ভালোভাবে দেখুন : সমালোচকদের অনেক সময় অসহ্য মনে হতে পারে। কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না, এ থেকে আপনার অনেক উপকার হতে পারে। আপনার ক্যারিয়ারের ধারণা ও স্বপ্ন অন্যের দ্বারা সমালোচনার মুখোমুখি হতে পারে। কিন্তু একে বাজেভাবে দেখার উপায় নেই। কারণ এ থেকে আপনি অনেক ভালো বিষয় বা বাস্তবসম্মত ধারণা পেয়ে যেতে পারেন। আর আপনি যদি নিজের লক্ষ্যের দিকে দৃঢ় সংকল্প থাকেন তাহলে সমালোচকদের অগ্রাহ্য করুন। কারণ এটি আপনার জীবন, আপনার ক্যারিয়ার। তাদের দেখিয়ে দিন যে, আপনিই ঠিক।
৫. খুঁজে বের করুন ‘গুরু’ : ক্যারিয়ারের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের প্রয়োজনে অভিজ্ঞ ও আপনার প্রিয় কাউকে গুরু হিসেবে মানুন। তিনি যদি বলেন, কয়েকটি কোর্স করার জন্য, তাহলে তাই করুন। আপনার যদি সুযোগ থাকে তাহলে তার কাছ থেকে শিক্ষা নিন। এতে আপনার পরামর্শ ছাড়াও পেতে পারেন প্রয়োজনীয় নেটওয়ার্কের সন্ধান। আর জীবনের লক্ষ্য বাস্তবায়নে এটি খুবই কাজে আসবে।
৬. সাফল্যের পথ খুঁজুন : ক্যারিয়ারের কোনো না কোনো পর্যায়ে আপনার ঘাড়ে এমন কোনো দায়িত্ব আসতে পারে যা অন্যদের কাছে মোটেও জনপ্রিয় নয়। আর এ ‘চ্যালেঞ্জিং’ দায়িত্ব আপনার জন্য সমস্যা নয় বরং সুযোগ নিয়ে আসতে পারে। কঠিন পরিস্থিতি যদি আপনি সামলাতে পারেন তাহলে তা আপনার যোগ্যতাকে বাস্তবে প্রমাণ করে দেবে। বাড়তি খাটনি হলেও তাই এ ধরনের সুযোগ গ্রহণ করতে হবে।
৭. চাকরি বদল : প্রতিষ্ঠান থেকে চাকরি ছেড়ে ভালো কোনো সুযোগ গ্রহণ করার উপযুক্ত সময় সম্বন্ধে আপনার ধারণা থাকতে হবে। ৩০ বছর আগের নিয়মে এখন প্রতিষ্ঠানগুলো চলে না। প্রত্যেক কর্মীই এখন তাদের নিজের ক্যারিয়ারের পথ ঠিক করে নেওয়ার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত। আপনার যদি প্রয়োজনীয় উন্নতি না হয়, প্রশিক্ষণ, মূল্যায়ন ও সুযোগ সুবিধা যদি না পান তাহলে নতুন জায়গার সন্ধান করাই ভালো। আপনার প্রতিষ্ঠান কোন পথ দেখাচ্ছে তা যদি আপনার মন মতো না হয়, তাহলে উপযুক্ত জায়গা খুঁজে নেওয়াই উচিত। তবে এক্ষেত্রে ধৈর্য ধরার প্রয়োজন আছে। কখনো কখনো কয়েক বছর অপেক্ষা করতে হয় সঠিক সুযোগটি আসার জন্য।
সুত্র: দি টাইমস ইনফো ডটকম