জীবনটাকে এগিয়ে নিতে কিছু বিষয়ে দক্ষতা অর্জন অতি জরুরি বিষয়। যদি এতদিনে না নিয়ে থাকেন, তবে এখোনি এগোনোর সময় হয়েছে। উপার্জন বৃদ্ধি করতে চাইছেন বা মধ্যস্থতায় এগিয়ে থাকতে চান, আপনার ১৫টি জীবনমুখী দক্ষতা অর্জনের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এগুলো জেনে নিন।
১. আদর্শ শ্রোতা হোন: সবাই জানেন, তবুও পরামর্শ দিতে থাকেন বিশেষজ্ঞরা। ভালো শ্রোতা হয়ে উঠুন। বক্তার কথা মনোযোগের সঙ্গে শোনা যতটা গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি জরুরি মনে হয় যখন আপনি তার কথার প্রসঙ্গ ধরে নিজে কিছু বলার সুযোগ চান।
২. ইচ্ছাশক্তি ধরে রাখা: ফ্লোরিডার মনোবিজ্ঞানী রয় বাউমেইস্টার তার ‘উইরপাওয়ার: দ্য গ্রেটেস্ট হিউম্যান স্ট্রেথ’ বইয়ে লিখেছেন, আমাদের মাঝে প্রতি মুহূর্তে অসীম ইচ্ছাশক্তি বিরাজ করে। এটা প্রাণশক্তি মতো। একে ধরে রাখার উপায় হলো, সিদ্ধান্ত গ্রহণে সীমাবদ্ধতা আনা।
৩. সময়ের ব্যবস্থাপনা: বিনিয়োগ গুরু ওয়ারেন বাফেট বলেছিলেন, সফল এবং অতি সফল মানুষের মধ্যে পার্থক্য হলো, অতি সফল মানুষরা প্রায় সবকিছুর প্রতি ‘না’ বলতে পারেন। অন্য বিষয়ে নিজের সময় ব্যয়কালে তাই উৎপাদনশীলতা মাথায় রাখতে হবে। এতে অযথা হয়রানির ঘটনা ঘটবে না।
৪. সততার চর্চা করুন: যখন বলার কিছু নেই, তখন যে কিছু বলতেই হবে তা নয়। ফেসবুকের চিফ অপারেশন অফিসার শেরিল স্যান্ডবার্গ অকপটে সত্য বলার চর্চা করেন। এতে করে সবার কাছে তার এক অনন্য ব্যক্তিত্ব ফুটে ওঠে। সততার চর্চা মানুষকে অন্যের কাছে বিশ্বাসযোগ্য ও আস্থাভাজন করে তোলে।
৫. বেশি পড়ুন: সব বই-ই ভালো। কিন্তু সবগুলো সেরা নয়। তবে যাই পড়েন না কেন, কিছু না কিছু শিখতে পারবেন। কাজেই প্রতিদিন বই পড়ার অভ্যস গড়ে তুলুন। যাই পড়েন না কেন, গভীরভাবে বোঝার চেষ্টা করুন। প্রয়োজনে এক পাতায় একাধিকবার ঢুঁ মারুন।
৬. নতুন ভাষা শিখুন: বহু গবেষণায় বলা হয়েছে, নতুন একটি ভাষা শেখার মাধ্যমে মানুষের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়।
৭. সৃষ্টিশীল চিন্তা করুন: ২০১১ সালের এক গবেষণায় বলা হয়, আরাম এবং অমনোযোগী হয়ে যারা চিন্তা করেন তাদের মধ্য থেকে সৃষ্টিশীলতা বেরিয়ে আসে।
৮. পাবলিক স্পিকিং: অনেকেই বলে মানুষের মাঝে কথা বলার সময় মাথা ঠাণ্ডা রাখতে হয়। কিন্তু গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে, যা নিয়ে কথা বলছেন তা জানাতে আপনি নিশ্চয়ই উত্তেজিত। এই উত্তেজনা নিয়েই কথা বলতে হয়। এতে আপনার সর্বোচ্চটাই বেরিয়ে আসবে।
৯. মধ্যস্থতা করুন: সাম্প্রতিক এক গবেষণায় বলা হয়েছে, মধ্যস্থতার সময় আপনি যা দিচ্ছেন তার প্রতি জোর দিয়ে কথা বললে অপরপক্ষ আগ্রহী হবেন। যেমন, এ জিনিসের জন্যে এক লাখ টাকা দেবেন। এর চেয়ে কৌশলি কথা হলো, এক লাখ টাকায় আমি জিনিসটি আপনাকে দিয়ে দেবো।
১০. মানসিক চাপ কমান: কাজ ও মনের চাপের কারণে উৎপাদনশীলতা ও মনোযোগ নষ্ট করবেন না। স্থিতিস্থাপক হয়ে উঠুন। মানসিক চাপ সামলাতে ব্যবস্থা নিন। নয়তো কোনো কাজই সম্পন্ন করতে পারবেন না।
১১. বন্ধুত্ব গড়ে তুলুন: বড় হয়ে নতুন বন্ধু গড়ে তোলা একটু কঠিন হতে পারে। কিন্তু অনেক সহজও বটে। গবেষণায় বলা হয়, বন্ধুত্ব সৃষ্টির অভ্যাসে মানুষের সুযোগ বাড়তে থাকে।
১২. সহায়তা চান: সাম্প্রতিক এক গবেষণায় বলা হয়, কোথাও আটকে গেলে সহায়তা চান। সফল মানুষের বড় গুণের মধ্যে একটি সহায়তা চাওয়ার অভ্যাস। আপনি কোনো কাজ এক নাও করতে পারেন। সেখানে অন্যের সহায়তা নিন।
১৩. ধীরগতিতে কাজের অভ্যাস ত্যাগ করুন: আর এ কাজটি করতে সবকিছু নিখুঁতভাবে সম্পন্ন করার অভ্যাস গড়ে তুললে হবে না। কোন কিছুই নিখুঁত নয়। কিছু ভুল থাকবেই। এগুলো মেনে নিতে হবে।
১৪. সঞ্চয় করুন: যখন থেকে উপার্জন শুরু করবেন তখন থেকেই কিছু না কিছু সঞ্চয় করুন। যদি না করে থাকেন, তবে আজ থেকেই উদ্যগী হয়ে উঠুন। এই সঞ্চয় এক সময় আপনার সম্পদে পরিণত হবে।
১৫. কর্মস্থলে বন্ধু তৈরি করুন: সম্পর্ক বিষয়ক বিশেষজ্ঞদের মতে, কর্মস্থলে বন্ধুত্ব বানানো ভালো কিছু বয়ে আনে। কেবল কথা বললেই হবে না। তাদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় শেয়ার করুন। ওয়াশিংটন স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষকরা তাদের গবেষণায় বলেন, সহকর্মীদের সঙ্গে আবেগের আদান-প্রদান করতে হবে। মনে ঠাঁই নিতে না পারলে বন্ধুত্ব লাভ করা যায় না। তা সে কলেজেই হোক বা অফিসেই হোক।
সূত্র : বিজনেস ইনসাইডার