একটুতে হাফিয়ে উঠা বাঙালী আমরা। কোন কিছুতে দীর্ঘক্ষণ স্থির রাখতে পারি না নিজেকে। একদন্ড সুস্থির হয়ে বসার মত সময়ও যেন নেই। কৌতুহলের জন্য যদি নোবেল দেওয়ার ব্যবস্থা থাকত তবে নিশ্চিত বাঙালী সবার প্রথমে অর্জন করত। রাস্তায় ল্যাম্পপোষ্টের বাতি লাগানোর দৃশ্যও কৌতুহলী বাঙালী হা করে গিলতে পারে।
কোন কিছু নিয়ে প্রতিদিন চেষ্টা করলে সে কাজের ওপর দক্ষতা বৃদ্ধি পেতে থাকে। কিন্তু আমরা হুটহাট চিন্তা করেই ঝাঁপিয়ে পড়ি আর দক্ষতা না থাকায় খুব সহজেই ক্ষতিগ্রস্থ হই। অতঃপর কপালের ওপর দোষ চাপিয়ে তেমন কিছুই ঘটেনি এমন ভাব ধরি। কোন কিছু নিয়ে লেগে থাকা খুব জরুরী। যত দীর্ঘ সময় আপনি কোন কিছু নিয়ে লেগে থাকবেন সে বিষয়ের উপর খুটিনাটি সকল কিছু আপনার আয়ত্বে চলে আসবে।
একজন দক্ষ ড্রাইভার গাড়ী চালালে সে গাড়ি এক্সিডেন্ট করার ঝুঁকি কম থাকে। অন্যদিকে একজন আনাঢ়ি ড্রাইভার নিয়ন্ত্রন হারিয়ে খাদে পড়তে সময় নেয় না। একটা দীর্ঘ সময় চেষ্টার ফলে একজন ব্যাক্তির দক্ষতা ও যোগাযোগের নেটওর্য়াক বাড়তে থাকে। আর দক্ষতার সাথে যোগাযোগের সঠিক সংমিশ্রণ করতে পারলে যে কোন ব্যবসায় খুব সহজে গতি পাবে।
একজন চাষী রোদ বৃষ্টি মাথায় নিয়ে ফসল ফলায়। একটা বীজের অঙ্কুরোদগম থেকে শুরু করে পরম যত্ন নিয়ে প্রতিদিন চেষ্টা করে যান ফসল ঘরে তোলার আগ মুহুর্ত পর্যন্ত। তারপরও প্রকৃতি মাঝে মাঝে বিরুপ আচরণ করে। সফলতা পেতে চেষ্টার কোন বিকল্প নেই। সফলতার একটাই পথ প্রতিদিন চেষ্টা করে যাওয়া। সৈনিকের মত দৃষ্টি নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে প্রতি মুহুর্তে। কৌতুহল ভাল তবে অতিরিক্ত নয়। কোন কিছু না জেনে তা নিয়ে শুরু করা হবে বোকামী।
একটা কিছু শুরু করে কিছু দিন যেতে না যেতেই অন্য আরেকটা নিয়ে চিন্তা শুরু করে দেই। আগেরটাতে সফলতার দেখা না পেলে তো কথাই নাই। ওটা বাদ নয় বরবাদ করে দিয়ে অন্যটার পেছনে ছুটি। এখানের চেয়ে ওখানে বেশী লাভ দেখে তর সয় না। লোভী ব্যাক্তির ধ্বংস হওয়ার জন্য হাজারটা পথ খোলা থাকে। লোভী মানুষেরা সব কিছু একত্রে খেতে চায়। কোনটা থেকে কোনটা নিবে এই চিন্তায় ব্যস্ত হয়ে পড়ে। সৎ কি অসৎ তা চিন্তা করার মত সময়ও তার হাতে থাকে না। যদিও এধরনের মানুষেরা কখনও শান্তি পায় না। কারন তারা মন থেকে খুব অভাবী থাকে।
একদিনে কথা বলা শিখতে পারেন নি, সাঁতার কাটতে পারেন নি, হাঁটতে পারেন নি, সাইকেল চালাতে শিখেন নি। সু-শৃঙ্খল মাধ্যমে একের পর এক চেষ্টা করে অর্জন করতে হয়েছে আপনাকে। দিনরাত পরিশ্রম করে দশটা বছর পর পেয়েছেন এসএসসির সার্টিফিকেট। সবকিছু খুব সহজে হয় না। এমন অনেক বিজ্ঞানী আছে যাদের আবিস্কারের স্বীকৃতি জুটেছে পরপারে যাওয়ার পর। কিন্তু সহজে তারা হার মানেনি। যাদের আবিস্কার দ্বারা মানব সভ্যতা এখনও উপকার পেয়ে যাচ্ছে।
লেগে থাকুন। প্রতিদিন চেষ্টা করুন। সেটা হোক চাকুরী কিংবা ব্যবসা। হাল ছাড়বেন না। মনে রাখবেন আমরা সফলতার খুব কাছ থেকে ফিরে আসি। সফলতার একটি দরজা বন্ধ হয়ে যাওয়া মানে আরও দশটি নতুন দরজা খোলা আপনার জন্য। আপনি ওই একটি দরজার দিকে এতটা হতাশ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন যে বাকি দরজাগুলো দেখতে পান না। সুতরাং হতাশা নয়। প্রতিদিন চেষ্টা করে যান একটু একটু করে। একসময় দেখবেন সব সফলতা আপনার পায়ে লুটিয়ে পড়ছে।
লেখক:
মোঃ মাসুুদুর রহমান (মাসুদ)
উদ্যোক্তার খোঁজে ডটকম।