মানুষ চাইলে সব পারে৷কথাটা সম্ভবত ভুল নয়৷কিন্তু একটা দশ বছরের বাচ্চার জন্যও কি কথাটা খাটে? প্রতিবেদনটি পড়ার শেষে আপনিও বলবেন ইচ্ছাশক্তির কাছে প্রতিবন্ধকতা মাথা নোয়াতে বাধ্য হয়৷ মনের জোরে লক্ষ্যে পৌঁছে যাওয়ার ইতিহাসে লেখা থাকবে হারভে প্যারির নাম৷দেড় বছর বয়সে ম্যানিনজাইটিসের জন্য দু’টো পা চলে যায় ইংল্যান্ডের হারভের৷
মস্তিষ্ক আর শিরদাঁড়ার এই জটিল রোগ হারভের ছোটবেলায় মারাত্মক আকার ধারণ করেছিল৷হারভের বাবা-মা’ জন ও ক্যারলকে ডাক্তাররা বলেছিলেন, ছেলেকে বাঁচাতে হলে, হাঁটুর নীচ থেকে পা জোড়া বাদ দিতেই হবে৷ শুধু তাই নয়৷তার ডান হাতের সবকটি আঙুলও শরীর থেকে মুছে ফেলতে হবে৷
ছেলের জন্য চোখের জল লুকিয়ে রেখেই বাবা-মা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন৷ দু’টি পা ও আঙুলগুলি বাদ গেল হারভের৷তারপর? সমস্যা আরও বাড়ল৷ কৃত্তিম পা’লাগিয়েও ব্যাথায় কাতরাচ্ছিল হারভে৷ হারভের বাবা-মা ছেলের জন্য টাকা সংগ্রহ করলেন বাকিদের কাছ থেকে৷ লন্ডন থেকে হারভেকে পাঠানো হয়েছিল মার্কিন মুলুকে৷অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতেই তৈরি করা কৃত্তিম পা দেওয়া হল হারভেকে৷ বাকিটা ইতিহাস৷
সেই নতুন ‘রানিং লেগস’-এ হারভে শেষ সাত বছর দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন ফিল্ড অ্যান্ড ট্র্যাকে৷ওকলাহোমার এনডেভর গেমসে একাধিক স্বর্ণপদক জিতেছে এই ছোট্ট ছেলে৷ কিন্তু অনান্য খেলাতে নিজের জাত চেনালেও হারভে ছোট থেকে চাইত ইংল্যান্ডের জার্সিতে ক্রিকেট খেলতে৷ হারভের স্বপ্নপূরণ করতে ব্রিটেন তাঁকে দিল ‘বায়োনিক ক্রিকেট লেগস’৷
নতুন এই পা জোড়ায় হারভে ব্যাটে-বলে কামাল দেখাতে শুরু করেছে৷বছর দশের বাচ্চাটা প্রচুর রানও করেছে আর উইকেটও নিয়েছে৷ব্যাট হাতে বল বাউন্ডারির বাইরে পাঠিয় হারভে হাসতে হাসতে বলছে, ‘ইংল্যান্ডের হয়ে খেলাই আমার স্বপ্ন৷জো রুটের মতো ক্রিকেটার হতে চাই৷আমার নতুন পায়ের জন্য আজ ক্রিকেট খেলতে পারছি৷ ব্যাট করা থেকে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকা৷ এমনকী দৌড়াতেও কোনও সমস্যাই হচ্ছে না আমার৷’ হারভেকে কুর্নিশ জানাচ্ছে দুনিয়া৷ আপনারও নিশ্চই এই বাচ্চাটাকে একটা স্যালুট করতে ইচ্ছে করছে৷
তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট।