মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে রি সার্কুলাইটিং একুয়া কালচার্স সিস্টেম বা আরএএস পদ্ধতি ব্যবহারে সফলতা এসেছে ময়মনসিংহে। গবেষকরা মনে করছেন ইউরোপের বিভিন্ন দেশে জনপ্রিয় এই মাছ চাষ বাংলাদেশের জন্য সুফল বয়ে আনতে পারে। যা দেশের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বিদেশে রপ্তানি করে আসবে বৈদেশিক মুদ্রা। বাংলাদেশের একেবারেই নতুন এই পদ্ধতি নিয়ে পরিক্ষা নীরিক্ষার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষনা ইনষ্টিটিউট।
মিঠা পানির মাছ চাষে ইউরোপে বেশ জনপ্রিয় রি সার্কুলেটিং একুয়া কালচার সিস্টেম বা আরএএস পদ্ধতি। কোন রকম ক্ষতিকারক রাশায়নিক ছাড়াই অল্প জায়গায় বেশি উৎপাদন। আকারে বড় বালাই প্রতিরোধে অধিক ক্ষমতাসহ নানা কারনে নিরাপদ পদ্ধতি হিসেবে আরএএস উন্নত দেশ গুলোর স্বীকৃতি পেয়েছে। দেরিতে হলেও বাংলাদেশে আরএএস পদ্ধতিতে মাছ চাষ শুরু হয়েছে। ময়মনসিংহে ব্যক্তি উদ্যেগে প্রথমবারেরমত এই পদ্ধতি ব্যবহার করে সফলতার দাবিও এসছে।
মৎস্য চাষি শামছুল আলম বলেন, যে পরিমান জমি মাছ চাষে নষ্ট হয় তার থেকে কম জমিতে আমি মাছ করতে পারবো। তুলনামূলক চিত্রে গবেষকরা বলছেন ৫০ শতাংশ জমিতে শিং মাছ চাষে উৎপাদন চার হাজার কেজি। এ ক্ষেত্রে ৮ লাখ টাকা বিনিয়োগে মুনাফা দ্বিগুন। বিপরিতে আরএএস পদ্ধতিতে ৭ শতাংশ জমিতে ১২ হাজার কেজি মাছ উৎপাদন সম্ভব। ২৪ লাখ টাকা খরচ করলে মুনাফা প্রায় তিনগুন।
মৎস্য অধিদপ্তরের হিসাবে ২০০৮-৯ অর্থবছরে রপ্তানীকৃত মাছ ও মৎস্যজাত পণ্যের পরিমান ছিল ৭২ হাজার ৮০০ মেট্রিকটন। যা ২০১৪-১৫তে ৮৩ হাজার ৫০০ মেট্রিক টনে। তাই নতুন পদ্ধতিতে মাছের সম্ভাবনা ক্ষতিয়ে দেখার গবেষনা শুরু হয়েছে।
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনষ্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ বলেন, আমাদের এই বিষয় নিয়ে আরো বিস্তর গবেষনা প্রয়োজন রয়েছে। তবে উদ্যেক্তা পর্যায়ে যারা বাংলাদেশে এই বিষয়ে কাজ করতে চান তাদের জন্য এ বিষয়টি খুবই উপযোগি।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্য অনুযায়ী মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে চতুর্থ স্থানে রয়েছে। তবে দেশিয় চাহিদা পুরণ করে এই মাছ বিদেশে রপ্তানি করা এখনো সম্ভব হয়ে উঠেনি। বিষেশজ্ঞরা বলছেন এই আরএএস পদ্ধতিতে মাছ চাষ শুরু করা গেলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও মাছ রপ্তানি করা সম্ভব।
তথ্যসুত্র: যমুনা টেলিভিশন।