উদ্যোক্তার খোঁজে ডটকম তাদের নিয়মিত পাঠকদের কাছে ব্যার্থতার কারন জানতে চেয়ে একটি প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছিল। সেই সাথে জানতে চেয়েছিল তাদের ব্যার্থতার পেছনে লুকিয়ে থাকা প্রধান তিনটি কারন। সেখান থেকে উঠে আসা গুরুত্বপূর্ণ কারন গুলোকে আমরা এক নজরে দেথে নিব। সেই সাথে তাদের ব্যার্থতার কারণ গুলো পর্যালোচনা করে সাম্ভাব্য সমাধানের পথ দেখানোর চেষ্টা করা হল।
ব্যার্থতার পেছনে উঠে আসা প্রধান কারন গুলো:
– আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি।
– জীবনের লক্ষ ঠিক করতে না পারা।
– সঠিক সময়ে সিদ্ধান্ত নিতে না পারা।
– সঠিক ও বাস্তব সম্মত পরিকল্পনা করতে না পারা।
– শুরু করতে না পারা।
– সঠিক পার্টনার সিলেক্ট করতে না পারা।
– লেখাপড়ায় অমনোযোগী হয়ে শিক্ষাগত যোগ্যতা অর্জন না করা।
– অন্যের মতামতের অধিক গুরুত্ব প্রদান।
– মানুষকে যাচাই বাছাই না করে অতিরিক্ত বিশ্বাস করা।
– পরিশ্রম না করে অতিরিক্ত অলসতা করা।
– আয়ের সাথে ব্যয়ের সামঞ্জস্যতা করতে না পারা।
– সঠিক সময়ে ভাল গাইডলাইন না পাওয়া।
– প্রচুর পরিমানে ধৈয্যের অভাব। শর্টকাটে বড় হওয়ার রাস্তা খোঁজা।
– সঠিক সময়ে মানুষের সাথে সঠিক আচরন না করতে পারা।
– নিজেকে পজেটিভ রাখতে না পারা।
– পরিকল্পনা অনুযায়ী পুঁজির স্ংস্থান না থাকা।
– সাফল্য না আসায় হতাশাগ্রস্থ হয়ে হাল ছেড়ে দেওয়া।
– দেশ ছেড়ে বিদেশে কাজের সন্ধানে বিদেশে পাড়ি জমানো।
– সঠিক জীবনসঙ্গী ঠিক করতে না পারা।
– আবেগ সংবরন না করে অসময়ে প্রেম-ভালবাসায় জড়িয়ে পড়া।
ব্যার্থতার কারন তো খুব বেশী নয়। সমাধানের পথ কিন্তু সহজই মনে হয়। তবে এজন্য সর্ব প্রথমে নিজের মধ্যে আত্মবিশ্বাস তৈরী করতে হবে। জীবনের লক্ষ ঠিক করতে শুরুতেই। যে কাজটি করতে চান তার মধ্যে ভাললাগা থাকতে হবে। সঠিক ভাবে পরিকল্পনা করতে হবে। শিক্ষাগত যোগ্যতা অর্জনের পাশাপাশি যে কোন বিষয়ে শেখার প্রতি আগ্রহ তৈরী করতে হবে। এবং সর্বোচ্চটুকু অর্জনের জন্য শেখার ধারা অব্যাহত রাখতেই হবে। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার বাইরেও অনেক কিছু জানার আছে শেখার আছে। ব্যবসার ক্ষেত্রে তো আরও ব্যাপক। সুতরাং শিক্ষার কোন বিকল্প নাই।
পরিকল্পনা হাজার কিন্তু কোন কিছু শুরু করতে না পারলে সমস্ত পরিকল্পনাই বৃথা। তাই শুরু করতেই হবে। পথে নামলে পথ চেনা যায়। আর পথের সঙ্গী ব্যবসায়িক পার্টনার সঠিক ও যোগ্য সৎ মানুষটি নির্বাচন করতে হবে। যোগ্য ও সঠিক পার্টনার আপনার ব্যবসার সবচেয়ে বড় মুলধন। পরিকল্পনা তো বিশাল কিন্তু মুলধন বা পুজি সল্প। লক্ষ আপনার যত বড় ব্যবসার হোক না কেন সেটা দিয়েই শুরু করতে হবে এমন কোন কথা নাই। আপনার সাধ্যের মধ্যে যে ব্যবসায়টির পুঁজি আপনার কাছে আছে সেটা দিয়েই শুরু করুন। পর্যায়ক্রমে আপনার কাঙ্খিত ব্যবসার দিকে এগিয়ে যান। আর হ্যা ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে মিতব্যায়ী হোন। আয় বুঝে ব্যয় কিংবা অবস্থা বুুঝে ব্যয় সংকোচন নীতি গ্রহন করুন।
পরিশ্রমী হোন অধিক পরিমানে। প্রয়োজনে লক্ষে পৌঁছানোর আগ মুহুর্ত পর্যন্ত ছুুটি কে ছুুটিতে পাঠান। সফলতার দেখা না পেয়ে ধৈর্য্যহারা হয়ে হাল ছেড়ে না দিয়ে শেষ দেখার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হোন। সে সময়ে নিজেকে পজিটিভ রাখার জন্য যাদের কাছ থেকে কাজের প্রেরণা পান তাদের সাথে চলুন। নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস রেখে চলুন। মানুষ চেনার চেষ্টা করুন। যাদের দ্বারা আপনার ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা আছে তাদের থেকে দুরে থাকুন। সবাইকে আপনি হ্যা না বলে প্রয়োজনে না বলার চেষ্টা করুন। অন্যের কথায় কান না দিয়ে এগিয়ে চলুন নিজের পরিকল্পনামত।
সঠিক জীবন সঙ্গী যে আপনাকে বুুঝে, আপনার কাজের গুরুত্ব বুঝে, আপনাকে প্রেরণা দিতে পারে, আপনার দুর্দিনে সাহস যোগাতে পারে এমন মানুষকে জীবনসঙ্গী নির্বাচন করুন। আবেগকে জীবন থেকে দুরে রাখার চেষ্টা করুন। প্রেম ভালবাসার দরকার আছে তার মানে এই না যে, তার জন্য আপনার জীবন আপনার কাজ থেমে থাকবে। যদি এমনই হয় তবে আপনার জীবন থেকে ওই অংশটুকু বাদ দিয়ে দিন।
যারা বিদেশ পড়ি দিয়ে মনে করছেন লাইফের বড় একটা সময় নষ্ট করেছেন তাদের জন্য বলছি জীবনের শিক্ষা কাজে লাগান। বিদেশে যে পরিশ্রম করছেন তা দেশে বসে করলে আরও বেশী আয় করতে পারতেন। তবে বিদেশের টাকা দেশে ভোগ-বিলাসিতায় ব্যয় না করে দেশে কাজে লাগানোর সুযোগ খুঁজুন। নির্দিষ্ট একটা বয়স শেষে আপনি বিদেশে শ্রম দেওয়ার সামর্থ্য খাকবে না। সুতরাং সুযোগ কাজে লাগানোর চেষ্টা করুন।
লেখক:
মোঃ মাসুদুর রহমান মাসুদ
উদ্যোক্তার খোঁজে ডটকম।