প্রতিটি মানুষের জন্মই হয়েছে সফলতার জন্য, পাওয়ার জন্য, বিজয়ের জন্য। আর এই প্রাপ্তি, বিজয় বা সফলতা হচ্ছে ব্যক্তির অধিকার। এই সফলতা একজন মানুষ কখন পেতে পারে তা নির্ভর করে তার চেষ্টা ও কাজের উপর। তবে সফলতা কখনই রাতারাতি আসে না। হাজারো চেষ্টা, সাধনার পরই আসে এই কাঙ্খিত সাফল্য।
সকল সফল ব্যক্তির সফলতার ইতিহাস পর্যালোচনা করলে আমরা দেখতে পাই তাদের জীবনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য পাড়ি দিতে হয়েছে হাজারো বাঁধার পাহাড়। প্রতিনিয়ত তারা সংগ্রাম করেছেন নিজের সাথে। সেই সকল সফল ব্যক্তিদের কয়েকটি উদাহরন নিচে তুলে ধরলাম।
একবার টমাস আলভা এডিসনকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, বৈদ্যুতিক বাতি আবিস্কার করতে তিনি কি পরিমাণ চেষ্টা করেছিলেন। এডিসন বলেছিলেন, আমি প্রায় হাজার তিনেক বার চেষ্টার পর বাতির জন্য একটা উপযুক্ত ফিলামেন্ট তৈরি করতে সক্ষম হয়েছিলাম।
চীনের এক বালক আমেরিকার কোন এক মাল্টিন্যাশ্নাল কোম্পানিতে পরীক্ষা দিতে গিয়ে চরম ভাবে ফেল করে। তার ইংরেজি দক্ষতা নিয়ে রীতিমত হাসাহাসি হয়। বেচারা মনে খুব দুঃখ নিয়ে সেদিন ফিরে এলো। কিন্তু জেদও চেপে বসলো। পরবর্তীকালে এই ছেলেটা হয়েছিল ইংরেজির শিক্ষক। শুধু চীনেই তার ছাত্র সংখ্যা রয়েছে ১০ কোটির উপরে।
ডেল কার্নেগীকে বলা হয় সর্বকালের সেরা বক্তা! তার কাহিনীটা হয়তো অনেকেই জানেন। জীবনে প্রথমবারের মতো ডেল কার্নেগী যখন মঞ্চে উঠে সবার সামনে ভাষণ দিতে শুরু করলেন তখন অডিয়েন্স তার দিকে ডিম ছুড়ে মেরেছিল। সেদিন ২ মিনিটের বেশি মঞ্চে দাঁড়িয়ে থাকতে পারেন নি। ব্যাপারটা কার্নেগী মেনে নিতে পারেন নি।
এরপর থেকে তিনি ভাষণ দেয়ার অনুশীলন শুরু করলেন। যেখানে সেখানে গিয়ে ভাষণ দিতেন। রাতের বেলা নির্জন ল্যাম্প পোস্টের সামনে দাঁড়িয়ে ভাষণ দিতেন। ফাঁকা হল রুমে দাঁড়িয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা একা একা কথা বলে যেতেন । তার পরের গল্পে ডেল কার্নেগীকে আমরা সবাই চিনি।
সুতরাং সাফল্য পেতে হলে আপনাকে অবশ্যই কঠোর পরিশ্রম ও চেষ্টা করতে হবে। এর পাশাপাশি আরো যে সকল বিষয়ের উপর আপনার নজর রাখা প্রয়োজন তা হলো-
আত্মবিশ্বাস: জীবনে সফল হতে প্রয়োজন আত্মবিশ্বাস। আমি পারব। কেনই বা পারবো না? যারা জীবনে সফল হয়েছেন তারাও তো আমারই মতো রক্তে মাংসে গড়া মানুষ। এমন চিন্তা-ভাবনা মানুষকে সফল হতে বেশ সহায়তা করে।
ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি: দিন-রাতের ২৪ ঘণ্টা এক রকম থাকে না। কখনো নিজেকে সফলতার অগ্রনায়ক হিসেবে মনে হয়। কিন্তু পরক্ষণেই নেতিবাচক চিন্তা আসে হতাশার বাণী শোনাতে, বলতে থাকে এত মানুষের মাঝে তুমি কি করতে পারবে? এসব চিন্তার পরিবর্তে ইতিবাচক চিন্তা জীবনকে অনেকটা এগিয়ে নিতে পারে।
আলস্য পরিহার করা: জীবনে সফল হতে হলে অবশ্যই আপনাকে অলসতার অভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে। আজকে থাক কালকে করব, সময় তো আছেই- এই ধরনের কথা ও কাজ পুরোপুরি বর্জন করতে হবে।
অব্যাহত পরিশ্রম: জীবনের কোনো এক পর্যায়ে কারও কথা দ্বারা অনুপ্রাণিত হলে মনে হয় আজকেই জীবনকে বদলে দিব। পরের দিনই আবার আগের মতো হয়ে যায়। এমন সাময়িক পরিবর্তনের চিন্তা পরিহার করে নিরলস চেষ্টা চালিয়ে যান। আর মহান আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামীনের উপর ভরসা রেখে নিজের পরিশ্রমের ওপর আস্থা রাখুন। দেখবেন কাঙ্ক্ষিত সেই সাফল্য আপনার হাতে এসে ধরা দিবেই।