উদ্যোক্তা হয়ে সবাই জন্মগ্রহণ করেন না, কখনো ভাবেনও না যে তিনি ব্যবসা চালাবেন। তাই থাকে না কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতাও। তাছাড়া কর্মক্ষেত্রে প্রতিটি জায়গাতেই প্রতিযোগিতার সীমা নেই। যে কাজই করতে ইচ্ছুক হোন না কেনও আপনাকে সবার সাথে প্রতিযোগিতা করে ঠিকে থাকতে হবে। তবে সবার মাঝে টিকে থাকাটা অনেক কঠিন এবং সেটি সবার দ্বারা সম্ভবও হয়না। কারণ, প্রতিযোগিতার বাজারে যারা নিজেকে একটি ভিন্নভাবে উপস্থাপন করতে পারেন কেবল তারাই সফলতার সাথে টিকে থাকে। এখন কথা হচ্ছে কিভাবে আপনি নিজেকে, নিজের সেবাকে অন্য সকলের থেকে একটু ভিন্নভাবে উপস্থাপন করে ব্যবসায় আপনার সফলতাকে এগিয়ে নিবেন?
আই কনট্যাক্ট:
উদ্যোক্তা হিসেবে আপনি যখন কোনো কোম্পানির কাজে মিটিংয়ে যাচ্ছেন তখন আপনাকে মুখের ভাষার পাশাপাশি শারীরিক অঙ্গভঙ্গি প্রকাশ করতে হবে। যা আপনার বক্তব্য উপস্থাপনে বিশ্বাস ও সততা বাড়াবে। তবে এর অর্থ এই নয় যে আপনি মঞ্চে ওঠে অভিনয় করবেন। বরং অতিরিক্ত পরিমাণ আই কনট্যাক্ট আবার আক্রমণাত্মক ভাব প্রকাশ করতে পারে। তাই যতটুকু প্রয়োজন ততটুকুই আই কনট্যাক্ট করতে হবে। কথা বলার সময় কারও প্রতি অপলক নয়নে তাকিয়ে থেকে কথা বলা উচিত নয়। সব ধরনের দর্শক ও শ্রোতাদের প্রতি নজর দিতে হবে। তাহলে এদিক থেকে আপনার সফলতা আসবেই।
ধ্যান করা:
ব্যবসায়িক উন্নতির জন্য প্রচুর পরিমাণে নিজেকে ধ্যানে মগ্ন রাখুন। ব্যবসায়িক কাজে তড়িঘড়ি করে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার দরকার নেই। মেডিটেশন পদ্ধতি ব্যবহার করে একটি বিষয় বহু ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নিন।
কুশল বিনিময়ের ক্ষেত্রে সচেতন থাকুন:
ব্যবসায়িক সফলতা পেতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন যে জিনিসটা দরকার তা হলো- অন্যান্য ব্যবসায়িক কর্মকর্তাদের কুশল বিনিময়ের ক্ষেত্রে সচেতন থাকুন। যাতে তাদের মধ্যে আপনার সম্পর্কে কোনো ধরনের নেতিবাচক ধারণা জন্ম না নেয়। এজন্য হ্যান্ডশেক হতে পারে অন্যতম মাধ্যম। তবে এক্ষেত্রে সচেতন থাকতে হবে। কারণ এর মাধ্যমেই অন্যর সাথে পরিচয়টা বাড়ানো যায়।
কাজের ক্ষেত্র বৃদ্ধি করুন:
প্রতিষ্ঠানে আপনি যে স্থানে অবস্থান করছেন। কেউ যদি সেই স্থানে আপনার কাজে সাহায্য করার নাম করে আপনাকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে তবে আপনার অবস্থান হারাতে পারে। তাই এটিকে কখনই প্রশ্রয় দেবেন না। এটা না করে বরং তাদের সাহায্য নিয়ে আপনার কাজের ক্ষেত্র আপনিই প্রসার করুন। তাহলে দেখবেন সফলতা আসবে।
প্রতিষ্ঠানে কখনও অস্থির হবেন না:
অস্থিরতা কাজের প্রধান অন্তরায়। তাই কর্মরত অবস্থায় আপনার অস্থিরতা এড়িয়ে চলুন। এটা আপনার কাজের পরিবেশকে নষ্ট করতে পারে। এছাড়া কখনও টেবিলে আঙ্গুল বাজাবেন না, বসের সামনে মাথার চুল আচড়াবেন না, কোনো দুশ্চিতা করবেন না। সবসময় আত্মবিশ্বাসী থাকুন, তবেই দেখবেন সফলতা আপনার কাছে ধরা দেবে।
অতিরিক্ত হাসি বন্ধ করুন:
কর্মরত অবস্থায় আপনি হাসতেই পারেন। তবে সেটা যেন অন্যর বিরক্তির কারণ হয়ে না দাড়ায়। তাই হাসার আগে সেখানে নিজের অবস্থানটা তৈরি করে নিন। যাতে কোন অবস্থাতেই আপনার ওপর কেউ অখুশি না হয়।
সবকিছুই পরিচালনা করুন আত্মবিশ্বাসের সাথে:
যে কোনো প্রতিষ্ঠানে কাজের ক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাস একটি বড় জিনিস। যা আপনাকে কাজের শক্তি যোগায়। তাই সবকিছু পরিচালনার ক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাসী থাকুন। যাতে এটা ছাড়া অন্য কেউ আপনার সম্পর্কে দ্বিতীয় মন্তব্য না করতে পারেন। এমনকি যদি রাগান্বিত থাকেন তারপরেই নিজেকে স্বাভাবিক রাখূন। কখনও উত্তেজিত হবেন না।
নিজেকে সঠিকভাবে উপস্থাপন করুন:
যখন আপনি কারো সাথে যোগাযোগ করছেন তখন তার কাছ থেকে বেশি দুরে থাকবেন না বা অতিরিক্ত কাছে আসারও দরকার নাই। বাচনিক যোগাযোগের সাথে তার সাথে অবাচনিক যোগাযোগও রক্ষা করে চলুন। দেখবেন ওই কাজে আপনার সফলতা আসবে।
মুখের অভিব্যক্তি নিয়ন্ত্রণ করুন:
কোনো স্থানে যদি কিছু উপস্থাপন করেন তবে সাধারণত মানুষ আপনার মুখের দিকেই তাকিয়ে থাকে। তাই যদি যোগাযোগ করার সময় কোনো কারনে আপনার মুখের অভিব্যক্তি খারাপভাবে প্রকাশ করেন। তবে তার দর্শক ও শ্রোতার সাথে যোগাযোগের ওপর্ও বর্তায়। ফলে ফলপ্রসূ যোগাযোগ ব্যর্থ হতে পারে। তাই সর্বদা হাস্যউজ্জ্বল থাকুন। মুখের অভিব্যক্তিকে নিয়ন্ত্রন করুন।
যোগাযোগ করার সময় চোখ খোলা রাখুন:
কারো সাথে যোগাযোগ করার সময় নিজের চোখ খোলা রাখুন। কারণ আপনার চোখের অভিব্যক্তি তার সাথে যোগাযোগকে ফলপ্রসূ করে। কখনই নিচু হয়ে বা নিচের দিকে তাকিয়ে কথা বলবেন না।
তথ্যসুত্র: অর্থসূচক ডটকম।