1. editor@islaminews.com : editorpost :
  2. jashimsarkar@gmail.com : jassemadmin :

আমদানি ও রফতানিকারক ব্যবসায়ী হতে চাইলে!

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে আমদানি ও রফতানি ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। খাদ্যশস্য, কৃষি উপাদান, শিল্পের প্রয়োজনীয় কাঁচামাল ও যন্ত্রাংশ, জ্বালানি প্রভৃতি পণ্যের চাহিদা মেটানো হয় এ আমদানি ও রফতানির মাধ্যমে। কিন্তু নিয়ম ছাড়া আমদানি ও রফতানি করলে সেটা মূলত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।

তাই এ-সংক্রান্ত বিষয়ে সরকার বিভিন্ন নির্দেশনা এবং বিধিবিধান প্রণীত ও জারি করে থাকে। এক্ষেত্রে একজন আমদানিকারক আমদানি নিবন্ধন সনদপত্র (আইআরসি) ও রফতানিকারক রফতানি নিবন্ধন সনদপত্রের (ইআরসি) মাধ্যমে আমদানি ও রফতানি শুরু করতে পারেন। আমদানি ও রফতানিকারকদের যেসব নিয়ম ও পদ্ধতি মেনে চলতে হয়:

আইআরসি ও ইআরসি: ইমপোর্ট রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট (আইআরসি) ও এক্সপোর্ট রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট (ইআরসি) পেতে কিছু ধাপ অনুসরণ করতে হয়। ধাপগুলো হলো- আমদানি ও রফতানির জন্য চিফ কন্ট্রোলারের অফিস থেকে ইআরসি ও আইআরসির একটি ফরম সংগ্রহ করতে হবে। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংক বা সোনালী ব্যাংকের শাখায় শিডিউল ফি জমা দিতে হবে। অফিসের চাহিদানুযায়ী প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ আবেদন ফরম জমা দিতে হবে

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র: প্রতিষ্ঠানের মালিকের অথবা ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সত্যায়িত ছবি। ট্রেড লাইসেন্সের সত্যায়িত ফটোকপি। ট্রেজারি চালানের মূলকপি। টিআইএন নম্বর। চেম্বার অথবা স্বীকৃত ট্রেড অ্যাসোসিয়েশনের বৈধ সনদপত্র। ব্যাংকের প্রত্যয়নপত্র। লিমিটেড কোম্পানির ক্ষেত্রে সার্টিফিকেট অব ইনকরপোরেশন, মেমোরেন্ডাম অ্যান্ড আর্টিকেল অব অ্যাসোসিয়েশনের সত্যায়িত ফটোকপি।

বন্ডেড ওয়্যারহাউস লাইসেন্স: উৎপাদিত পণ্য রফতানির সঙ্গে জড়িতদের উদ্দেশে এক্সপোর্ট ওরিয়েন্টেড বন্ডেড ওয়্যারহাউজ লাইসেন্স দেওয়া হয়। তারা শুল্ক বিভাগ হতে বন্ডেড ওয়্যারহাউজ লাইসেন্সের সুবিধা নিয়ে শুল্কমুক্ত কাঁচামাল আমদানি করে খরচ কমাতে পারে। এক্ষেত্রে অবশ্যই শতভাগ রফতানিমুখী হতে হবে। এরপর ডিউটি ড্র ব্যাক বা বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী ২৫ শতাংশ বেনিফিট পাওয়া যাবে।

বন্ডেড ওয়্যারহাউস লাইসেন্স এর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র: রেভিনিউ স্ট্যাম্পসহ নির্ধারিত ফরমে আবেদন। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) অথবা বিসিক রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট। কোম্পানির টিআইএন ও ইনকাম ট্যাক্স ডিপার্টমেন্টের সব পরিচালক এবং উদ্যোক্তার সম্পত্তির হিসাবের সত্যায়িত কপি। হালনাগাদ ট্রেড ও ফায়ার লাইসেন্স। ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট।

৩০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে উদ্যোক্তাদের নাম, পদবি, বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা, স্বাক্ষর ও ছবি। যন্ত্রপাতি কেনার যাবতীয় কাগজপত্র। ফ্যাক্টরি লে-আউট প্ল্যানের দুই কপি। নোটারি পাবলিক কর্তৃক প্রত্যায়িত বাড়ি ভাড়ার চুক্তিপত্র। আবেদনকারীর জেনারেল বন্ড দাখিলের আর্থিক সামর্থ্য রয়েছে এ মর্মে ব্যাংক কর্তৃক একটি প্রত্যয়নপত্র। লাইসেন্স ফি দুই হাজার টাকা।

লেটার অব ক্রেডিট (এলসি): এলসির মাধ্যমে রফতানিকারক তার পণ্যের মূল্য প্রাপ্তি সম্পর্কে যেমন নিশ্চিত হতে পারে, তেমনি আমদানিকারকও এলসির বিপরীতে ব্যাংক থেকে ঋণসুবিধাসহ রফতানিকারককে পণ্যমূল্য ব্যাংকের মাধ্যমে পরিশোধ করতে পারবে।

এর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র: এলসি ও আইএমপির একটি আবেদন ফরম। চুক্তির ফরম। চার্জ ডকুমেন্ট। ইমপোর্ট রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট। মেম্বারশিপ সার্টিফিকেট। ইন্স্যুরেন্স কাভার নোট ও প্রিমিয়ামের রশিদ। টিআইএন সার্টিফিকেট। ট্রেড লাইসেন্স ও ভ্যাট সার্টিফিকেট।

ব্যাক টু ব্যাক এলসি: রফতানিকারকের জন্য প্রয়োজন ব্যাক টু ব্যাক এলসি। পণ্য সরবরাহের মতো প্রয়োজনীয় মূলধন না থাকলে ব্যাক টু ব্যাক এলসি সাহায্য করে থাকে। এর মাধ্যমে রফতানিকারক রফতানির উদ্দেশে পণ্য কেনা, প্রক্রিয়াজাতকরণ,
প্রস্তুতকরণ ও প্যাকেজিংয়ের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান করে।

এর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র: রফতানি এলসির মূল কপি। বৈধ বন্ডেড ওয়ারহাউস লাইসেন্স। বস্ত্র মন্ত্রণালয় থেকে ইস্যুকৃত টেক্সটাইল অনুমতিপত্র। লিমিটেড কোম্পানির ক্ষেত্রে যৌথ মূলধনী কোম্পানির ইনকরপোরেশন সার্টিফিকেট। এলসি আবেদন। টাকা জমার রশিদসহ ইন্স্যুরেন্ট কভার নোট। পূরণকৃত ও স্বাক্ষরিত এলসিএ ফরম। বৈধ আইআরসি ও ইআরসি প্রভৃতি।

সামুদ্রিক বিমা পলিসি
সামুদ্রিক ক্ষয়ক্ষতি যেমন আগুন, পানি, ঝড়-তুফান, জাহাজ আটকে পড়া, জাহাজে নোনা পানি প্রবেশের কারণে পণ্যের ক্ষতি অথবা জলদস্যুদের আক্রমণ থেকে রক্ষার নিশ্চয়তা দেয় এ বিমা পলিসি।

ইন্সপেকশন সার্টিফিকেট: ইন্সপেকশন কোম্পানি হতে এ ফরম সংগ্রহ করতে হবে। পণ্যের গুণ ও নির্দিষ্ট মান এবং অন্য বিষয়াদি এলসি মোতাবেক পালিত হচ্ছে কি না তা যাচাই করা হয়।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র: কমার্শিয়াল ইনভয়েসের এক কপি। প্যাকিং লিস্ট এক কপি। বিল এক কপি। ভিসা, লাইসেন্স, সিও’র প্রত্যেকটির এক কপি প্রভৃতি।

ফাইটো স্যানিটারি সার্টিফিকেট: ফাইটো স্যানিটারি সার্টিফিকেট সাধারণত চারাগাছ, ঔষধী গাছ, বীজ, টাটকা ফল ও শাকসবজি প্রভৃতি রফতানির জন্য প্রযোজ্য। বাংলাদেশে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে চারা গাছ সংরক্ষণ পরিদফতর এ সার্টিফিকেট দিয়ে থাকে। এর প্রধান কাজ রফতানিপণ্যে ক্ষতিকর পোকামাকড় ও জীবাণুমুক্ত রয়েছে কি না তা দেখা। সূত্র: এসএমই ফাউন্ডেশন

More News Of This Category