1. editor@islaminews.com : editorpost :
  2. jashimsarkar@gmail.com : jassemadmin :

কাজে উৎসাহ হারিয়ে ফেললে ফিরিয়ে আনার উপায়

সম্প্রতি আমেরিকায় এক রিসার্চে দেখা গিয়েছে,সাধারন মানুষের নিজেদের কাজের প্রতি ভালোলাগা ও উৎসাহের ক্রমশ অবনতি ঘটছে। রিসার্চের ফলাফলে আরো বলা হয়,মাত্র ৩০ ভাগ আমেরিকান তাদের কাজকে ভালোবাসে এবং সেটি করতে আগ্রহী থাকে। ৪৮ শতাংশ মানুষ সরাসরি বলেছে যে তারা তাদের কাজকে অপছন্দ করে।

বাকি ১৮ ভাগ মানুষের অভিব্যক্তি হলো, তারা তাদের কাজ শুধুমাত্র জীবিকা নিবার্হের তাগিদেই করে থাকে, কোনো ভালোলাগা থেকে নয়। এই পরিসংখ্যান দেখে আপনি হয়তো ভাবতে পারেন মানুষ কী কারণে তাহলে তাদের কাজ পরিবর্তন করছে না? করছে না কারণ এটি দীর্ঘ মেয়াদি কোনো সমাধান নয়।

আপনি যদি সত্যিই চান আপনার কাজের সাথে আরো বেশি সম্পৃক্ত হতে তাহলে আপনাকে সবার আগে জানতে হবে আপনি কেনো এখনই সেটি পারছেন না। সমস্যাগুলো খুজে বের করার পরে সেগুলোর সমাধান বের করার মাধ্যমেই আপনি আপনার কাজে আরো বেশী উৎসাহ পেতে পারেন। এই লেখার মাধ্যমে আমরা আপনাকে সাহায্য করবো ৪টি মূল সমস্যা এবং এবং সেগুলোর সমাধান বের করার জন্য। চলুন শুরু করা যাক-

১ম সমস্যা- “আপনি আপনার চাকরি নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছেন” “আমি আসলে ঠিক মতো আমার দায়িত্বগুলো পালন করতে পারছি না”,“বস মনে হয় আমার কাজে খুশি না”,“চাকরিটা থাকবে তো?” এই কথাগুলো কী আপনার মনে ঘুরপাক খাচ্ছে সবসময়? যদি তাই হয় তাহলে আপনি সন্দেহাতীত ভাবেই আপনার কাজ নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগছেন।

সমাধান- সরাসরি কথা বলুন আপনার বসের সাথে। বিনীতভাবে জানতে চান আপনার প্রতিষ্ঠান আপনার কাজ থেকে ঠিক কী রকম সার্ভিস আশা করে। আপনি যদি পরিষ্কার ভাবে জানতে পারেন আপনার দায়িত্ব কী,তখন কাজে মনোযোগী হয়ে দায়িত্বগুলো পালন করা আপনার জন্যে আরো সহজ হয়ে যাবে। দূর হবে অহেতুক দুশ্চিন্তা।

“আপনাকে আর কারো চেয়ে ভাল হতে হবে সেটি ভাবার দরকার নেই,বরং লক্ষ্য স্থির করুন আপনি বর্তমানে যেই অবস্থায় আছেন তা ছাপিয়ে আরো ভালো হবার” – কেন ভেনচুরি(আমেরিকান গলফার)

২য় সমস্যা- “আপনার ক্যারিয়ার নির্বাচনের কোনো সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নেই” আজকাল দেখা যায় যে, অধিকাংশ মানুষ তাদের ক্যারিয়ার নির্বাচনে মূল প্রাধান্য দেয় টাকা উপার্জনকে। ফলে একটা সময় পরে তারা আর কাজ করার কোনো অনুপ্রেরণা অনুভব করেনা। উল্টোদিকে যারা সফল তাদের দিকে তাকালে দেখা যায় যেহেতু তারা ক্যারিয়ার নির্বাচন করেছে তাদের আগ্রহ এবং প্যাশনের উপরের ভিত্তি করে,তাই তারা প্রতিনিয়ত একটি তাগিদ অনুভব করে ক্রমাগত পরিশ্রম করে যাওয়ার জন্যে।

সমাধান- কাজের শুরু করার আগে নিজের লক্ষ্য ঠিক করুন। সময় দিন নিজের চাওয়াগুলো বুঝে উঠতে। অর্জন করা সম্ভব এমন ছোটো ছোটো লক্ষ্যকে সামনে রেখে পথ চলা শুরু করুন। একেকটি করে লক্ষ্য অর্জনের ফলে যে ভালোলাগা ও উদ্দীপনার যোগান হবে আপনার মনে,সেই উদ্দীপনাই হয়ে দাঁড়াবে আপনার এগিয়ে যাওয়ার জ্বালানী।

৩য় সমস্যা- “আপনার বস এবং আপনার মধ্যকার বোঝাপড়া ভালো নয়” আপনি যখন মনে করবেন আপনি যার অধীনে কাজ করছেন তিনি যথেষ্ট যোগ্যতা সম্পন্ন নন,তখন আপনার কাজ করার স্পৃহা স্বয়ংক্রিয়ভাবেই কমে যাবে। যদি আপনার বস বা উর্ধতন কর্মকর্তাদের প্রতি পজিটিভ মনোভাব না থাকে তবে উৎসাহের সাথে কাজ করা আপনার জন্য আসলেই কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।

সমাধান- আপনার বস যদি আপনার কাছে নিজে থেকে পরামর্শ না চায় তবে আপনার কখনোই উচিত হবে না তাকে তার দক্ষতা বৃদ্ধি নিয়ে পরামর্শ দেওয়া। এই পরিস্থিতিতে আপনার উচিত সময় থাকতে আরো ভালো কোনো চাকরি খুজতে থাকা যেখানে আপনি আপনার সবচেয়ে ভালো ভাবে পারফর্ম করতে পারবেন।

৪র্থ সমস্যা- “আপনি আপনার সহকর্মীদের সাথে কাজ করে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না” আপনার কাজের পরিবেশ আপনার কাছে ভালো না খারাপ তা অনেকটাই নির্ভর করে আপনার সহকর্মীদের সাথে আপনার সম্পর্ক কী রকম তার উপরে। মাঝে মাঝে আপনার সহকর্মীরা আপনার চাকরির টাইপ এবং বেতনের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবক হিসেবে কাজ করে। আপনি যদি দূর্ভাগ্যবশত এমন কোনো পরিস্থিতিতে থাকেন যেখানে আপনার সহকর্মীদের আচরণ আপনার প্রত্যাশার বিপরীত, তাহলে কাজে উদ্দীপনা বজায় রাখা আপনার জন্যে আসলেই কঠিন হয়ে পড়বে।

সমাধান- আপনার সহকর্মীদের আচরন আপনার প্রত্যাশা মতো নয়,শুধুমাত্র এই কারণে চাকরি বদলানো ঠিক হবে না। বরং আপনার উচিত আপনার সহকর্মীদের সাথে পজিটিভ মনোভাব নিয়ে কথা বলা,তাদের খোজ খবর রাখা। কাজের বাহিরে ভালো সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করা। বিভিন্ন পারিবারিক অনুষ্ঠানে দাওয়াত আদান প্রদান করাও সম্পর্ক গড়ে তুলতে সাহায্য করবে। আপনি নিজেই পারেন কিছুটা চেষ্টার মাধ্যমে আপনার কর্মক্ষেত্রকে নিজের কাছে আকর্ষণীয় করে তুলতে। সুতরাং চেষ্টা করুন আজকে থেকে। তথ্যসূত্র: বিডি মোটিভেটর

More News Of This Category