1. editor@islaminews.com : editorpost :
  2. jashimsarkar@gmail.com : jassemadmin :

বসের চোখে ভাল কর্মী হতে

আমরা সবাই ই কারো না কারো অধীনে কাজ করি। বসের প্রিয়পাত্র হয়ে ওঠা সব কর্মীর মনের এক গোপন ইচ্ছা হয়ে বিরাজ করে। এর জন্য অনেক কাঠখড় পুড়িয়েও ব্যর্থ হন অনেকে। চাকরী করতে গিয়ে কখনো সহকর্মীদের ক্ষোভের ও হিংসার পাত্র হতে হয়। কঠোর পরিশ্রম করেও যারা বসের সুনজরে আসতে পারছেন না বা কী করে বসের চোখে ভালো কর্মী হয়ে ওঠবেন বুঝতে পারছেন না, তারা মিলিয়ে দেখুন নীচের কাজগুলো। এই কাজগুলো এখনও শুরু না করে থাকলে শুরু করে দিন।

১. সময় মত কাজে উপস্থিত থাকুন: প্রতিদিন সময় মত কাজে উপস্থিত থাকুন। বস যত শক্ত মানুষই হোক না কেন, সময় মত কাজে আসে এমন কর্মচারীকে তাঁরা ভালোবাসেন সবসময়। সম্ভব হলে ৫/১০ মিনিট আগেই পৌঁছে যান অফিসে। কারণ বস সবসময়েই খেয়াল রাখেন কে সময় মত আসছে আর কে দেরি করছে।

২. আপনার বসের উর্ধ্বতন কারো কাছে অভিযোগ করবেন না: বসের কোন ব্যবহারে আপনি কষ্ট পেলে কিংবা কোন জটিলতার সৃষ্টি হলে আপনার বসের চেয়ে উর্ধ্বতন কারো কাছে অভিযোগ করবেন না। অভিযোগ করলে আপনার প্রতি বসের নেতিবাচক ধারণা তৈরি হবে। তার চেয়ে বরং সরাসরি তার সাথেই কথা বলুন। সরাসরি কথা বললে সমস্যা সমাধান হবার সুযোগ তৈরি হয়।

৩.কাজটা মন দিয়ে চটজলদি করুন: ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে একই কাজ নিয়ে বসে থাকা কোনও কাজের কথা নয়। চটপটে হতে না পারলে সাফল্যে পৌঁছানোর সিঁড়িটার ধাপ পেরুনো সহজ হবে না। নির্ধারিত সময়ে দক্ষতার সঙ্গে চটজলদি কাজটি কী করে করবেন সে ব্যাপারে আগে থেকেই পরিকল্পনা করে নিন। মাঝে মাঝে অন্যদেরও সাহায্য করুন। বসের সুনজরে আসতে মাঝে মাঝে একটু বেশি সময় অফিসে থাকুন। বস যদি কাজ পাগল হন তাহলে অত কিছু না ভেবে নিজের কাজটা মন দিয়ে করুন। কিন্তু যদি দেখেন বস চোখের দেখায় বিশ্বাসী তাহলে কৌশলী হতে হবে।

৪.বুদ্ধিদীপ্ত পরামর্শ: অফিসে যখন কোনো জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় এবং সবার কাছ থেকে পরামর্শ নেয়া হয়, তখন আপনিও অংশগ্রহন করুন। তবে সেটা হওয়া উচিত বুদ্ধিদীপ্ত পরামর্শ। অফিসের বিভিন্ন সমস্যায় বুদ্ধিদীপ্ত পরামর্শ দিলে অফিসের বসের সুদৃষ্টিতে থাকতে পারবেন সবসময়।

৫.দায়িত্ব: যখন কোনো কাজের দায়িত্ব নেয়ার ব্যাপার আসে তখন অন্যদের জন্য অপেক্ষা না করে নিজেই নিয়ে নিন কাজের ভারটি। কে করবে এই আশায় বসে থাকা কর্মচারীদেরকে বস পছন্দ করেন না। নিজে থেকেই দায়িত্ব নিতে পারে এমন মানুষকেই বসরা পছন্দ করেন সাধারণত।

৬. ভদ্র আচরণ ও হাসি: অফিসে এসে বা যখনই বসের সঙ্গে দেখা হবে তখনই হাসি দিয়ে কুশল বিনিময় করুন। দেখা না হলে প্রতিদিন একবার করে গিয়ে দেখা করুন। আচরণগত দিক থেকে বসের সঙ্গ সুসম্পর্ক গড়ার দারুণ উপায় এটি। মুখের আন্তরিক হাসি আপনাকে বসের অনেক কাছে নিতে পারে।অফিসের বসের সাথে সব সময় ভদ্র আচরণ করার চেষ্টা করুন। কারণ অভদ্র কিংবা অবাধ্য কর্মীকে বস পছন্দ করেন না। উচ্চ স্বরে কিংবা অভদ্র ভাবে কিছু বলা থেকে বিরত থাকুন।

৭.অফিস পলিটিক্স এড়িয়ে চলুন: চেষ্টা করুন অফিস পলিটিক্স এড়িয়ে চলুন। অফিস পলিটিক্সে একবার নিজেকে জড়িয়ে ফেললে এর থেকে সহজে বের হতে পারবেন না। তখন বসের নজরে আপনার ভাবমূর্তি নষ্ট হবে এবং কর্মক্ষেত্রে নানান রকম অসুবিধা হবে। যদি মনে করেন অন্যর ভুল খুঁজে বের করাটাই আপনার কাজ, আর বসের কাছে অন্যের নামে নালিশ করলেই বস খুশি হয়ে যাবে, তা হলে আপনি ভুল করছেন। বস তো খুশি হবেই না। উল্টে অফিসে কেউই আপনার বন্ধু হতে চাইবেন না।

৮.সবার জন্য অনুকরণীয় হোন: কর্মীদের ওপর একগাদা কাজ চাপিয়ে নিজে যদি গায়ে হাওয়া লাগিয়ে বেড়ান তাহলে এমন বস কর্মীরা চায় না।কর্মীদের আপনি নির্দেশনা, উপদেশ ঠিকই দেবেন তবে বারবার তা মনে করিয়ে দেবেন না। আপনি দক্ষতার সাথে কাজ করে গেলে আপনার কর্মীরাও তা দেখে অনুপ্রাণিত হবে। তাদের জন্য অনুকরণীয় হবে এমন উদাহরণ রাখুন।

৯.নেতৃত্বসুলভ আচরণ করুন: নেতৃত্ব এমন একটি বিষয় যা কারো মধ্যে সহজাতভাবে থাকে। আপনার দলের সদস্যরা যখন কোন সমস্যায় পরবে অথবা দাপ্তরিক কোন কাজের সমাধান পাচ্ছেন তখন আপনি এগিয়ে আসুন। চেয়ার ছেড়ে উঠে এসে প্রয়োজনের কর্মীর ডেস্কে এসে তার সাথে আলাপ করুন। দুই জনে ক্যান্টিনে গিয়ে চাও খেয়ে আসতে পারেন। আপনার এমন পদক্ষেপ কর্মীর মধ্যে আত্মবিশ্বাস বাড়াবে।বিভিন্ন কাজে কৃতিত্ব দেখিয়ে বসের কাছে নিজেকে অপরিহার্য করে তুলুন। তাহলে আপনার সাথে বসের ব্যবহার সহজ, স্বাভাবিক হয়ে আসবে।

১০.নিজেকে বসের জায়গায় নিয়ে ভাবুন: নিজেকে বসের জায়গায় নিয়ে ভাবলে বিষয়টা বোঝা যাবে ভালো। কেননা ইচ্ছা করেই কিংবা অকারণে কেউ সবার সাথে খারাপ ব্যবহার করাটা এক ধরনের দূর্বলতা। আবার অনেকেই নিজের দূর্বলতা ঢাকার জন্য সবসময় রাগের মুখোশ পরে থাকেন। এসব ক্ষেত্রে আপনি বসের জায়গায় নিজেকে রেখে ভাবুন, ফলে কর্মক্ষেত্রে কাজ করা অনেক সহজ হয়ে যাবে। এবং আপনি তার রাগের কারণগুলো বুঝতে পারলে সেসব এড়িয়ে যেতে পারলেই সমস্যা অনেকাংশে সমাধান হয়ে যাবে।

১১.বসের আগে বের হবেন না: কর্মদিবসে একই সময় ধরে কাজ করলে অফিস থেকে বসের আগে বেরিয়ে যাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। বসকে খুশী করতে তিনি বেরিয়ে যাওয়ার পর আপনি বের হবেন। এতে করে বস আপনাকে দায়িত্বশীল বলে মনে করবেন।

১২.বসে আগ্রহে আগ্রহ দেখান: বস যে বিষয়ে আগ্রহী আপনিও সে বিষয়ে আগ্রহী হয়ে উঠুন। বসের পছন্দ-অপছন্দ জানুন। সেগুলো সম্পর্কে জেনে নিন। যখন আপনি বসের পছন্দের বিষয়ে আগ্রহ দেখাবেন, তখন তিনি আপনার ওপর খুশী হয়ে উঠবেন। সহকর্মীদের সঙ্গে আড্ডায় সতর্ক থাকুন। বসকে খুশি করতে গিয়ে অনেক সময় হিতে বিপরীতও হয়ে যায় অনেক সময়। চুপচাপ বসে আছেন কিন্তু মিটিং চলছে, এমনটা কখনোই করবেন না। জটিল বিষয়ে অবশ্যই মতামত দিন তবে বুঝে-শুনে। নিজের অস্তিত্ব জানান দিন।

More News Of This Category