1. editor@islaminews.com : editorpost :
  2. jashimsarkar@gmail.com : jassemadmin :

সফল ব্যক্তিরা সন্ধ্যার সময়টা যেভাবে কাটান

আপনি যদি গুগলে “সকালের রুটিন” লিখে সার্চ দেন, তবে আপনি ৬২ সেকেন্ডে ২০ লাখেরও বেশি রেজাল্ট পাবেন। সকালের রুটিন কার্যক্ষম দিন ও সুখী মানুষ তৈরি করে। একজন ব্যস্ত মা অথবা একজন সিইও তাদের দিনের রুটিন রাতে খাবারের টেবিলে বসেই তৈরি করে ফেলেন।

কিন্তু একটি দারুন সকালের রুটিন থাকা মানে অর্ধেকটা পূরণ হওয়া। একটি সঠিক সকালের রুটিন তৈরি হয় মূলত একটি সঠিক সন্ধ্যার রুটিনের মধ্য দিয়ে। একটি শক্তিশালী সন্ধ্যা তৈরি করে দেয় একটি সুন্দর সকালকে: বেনজামিন ফ্রাঙ্কলিন উৎসুকভাবে নিজের মনে নিজেকে প্রতিদিন সন্ধ্যায় প্রশ্ন করতেন, “আমি আজ কোন ভাল কাজ করেছি? আমি আজকের দিনে কি ভাল কাজ করতে পারি?”

নিজেকে এই দুটি প্রশ্ন করে তিনি ভেবে রাখতেন কি করতে হবে এবং কি করতে হবে না। তিনি দিন শেষে তার প্রতিদিনের কাজ পর্যালোচনা করতেন এবং এরপর নিজেকে তৈরি করতেন পরের দিনের সকালের প্রথম কাজের জন্য।

কার্যত, ২ টি সঠিক নিয়ম অনুসরণ করতে হবে সন্ধ্যার সঠিক একটি রুটিনের জন্য। দিনের সমস্ত কাজের একটি প্রতিফলন, আগামীকালের জন্য একটি ফলো-আপ প্ল্যান তৈরি করা। একটি সন্ধ্যার রুটিন আপনাকে সাহায্য করবে ভাল ফলাফল অর্জনে। আপনি যখন সঠিক ভাবে জানবেন যে আগামীকাল আপনি কি করছেন এবং আপনার অবচেতন মন দায়িত্ব নিবে সমস্যার সমাধান করতে যখন আপনি ঘুমিয়ে পরবেন।

সাফল্যবান মানুষের সন্ধ্যার রুটিন: যখন আমরা সফল মানুষের দিকে তাকাই, যেমন বেনজামিন ফ্রাঙ্কলিন, অরিয়ান্না হাফিনটন এমনকি লুদবিগ ভ্যান বীতহভেন,আমরা দেখতে পাই তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যাওয়া এবং তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠা সফলতার মূল চাবিকাঠি। তারা সচেতন ছিলেন এবং তারা অন্য সবার আগেই তাদের কাজ শুরু করে দিতেন। ফলে তাদের লক্ষ্য অর্জনের সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছিলেন।

সঠিক রুটিনই তাদের সাফল্যের শীর্ষে পৌঁছে দিয়েছে: অরিয়ান্না হাফিনটন রাতে চা খেতেন, গোসল করতেন এবং ইলেক্ট্রনিক কোন যন্ত্র ঘরে রাখতেন না। তিনি খুব সচেতন ছিলেন তার রুটিনের ব্যাপারে। এই নিয়ম মেনে চলার কারনেই তিনি সুন্দর একটি ঘুম দিতে পারতেন। তিনি তার লেখা বই “দ্যা স্লিপ রেভোলুশন”-এ সে কথা বলেছেনও। লুদবিগ ভ্যান বীতহভেন রাত ১০ টার মধ্যে বিছানায় থাকতেন এবং সঠিক সময়ে ঘুম থেকে উঠে শিল্পচর্চা করতেন।

ছোট পরিবর্তনই গুরুত্বপূর্ণ ফলাফল এনে দিতে পারে: সন্ধ্যার রুটিন তৈরি করা মানেই হল অভ্যাস পরিবর্তনঃ যখন আমি সন্ধ্যার রুটিন শুরু করি, আমি দেরিতে (১১ টা) ঘুমাতে যাওয়া পরিহার করি এবং কিছু পরিমান আইসক্রিম খাই, কারন আমার বাচ্চারা ৯ টার মধ্যেই ঘুমিয়ে যায়। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন ছিল যা রাতারাতিই পরিবর্তন হয়নি। আসলে আমি শুরু করেছিলাম একটি ছোট সাধারণ পরিবর্তন দিয়ে এবং এরপরে আরও বেশি সময় যুক্ত করেছিলাম।

প্রায়শই আমরা যেটুকু খেতে পারি তার চেয়ে বেশি মুখে নিতে চাই, আর তার জন্য আমরা উদ্দেশ্যে পৌছাতে পারিনা। আমি জানতাম যে পরিবর্তনের মাধ্যমে আমি একটি ভাল রুটিন তৈরি করতে পারব এবং সফলতার দ্বার প্রান্তে পৌছাতে পারব।

আমি আগে ঘুমাতে যাওয়া অভ্যাস শুরু করেছিলাম। এর মাধ্যমে আমি দ্রুত নিজেকে ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস থেকে সরিয়ে নিয়ে বইয়ের দিকে মনোযোগ দিতে পেরেছিলাম। এর পর আমি স্বাভাবিকভাবেই আমার খাবারের সময়সূচী এগিয়ে আনতে পারলাম। এমনকি আমার রোজ রাতে (১১ টা) ক্যাফইন নেয়ার অভ্যাসও পরিবর্তন করতে পারলাম।

এটি প্রাকৃতিক ভাবেই খুব ভাল প্রভাব ফেলেছিল। সন্ধ্যার রুটিন থাকা একজনের সারাদিনের গঠন পরিবর্তন করতে সক্ষম। এটি আপনাকে নিজের জন্য অনেক সময় দেওয়ার সুযোগ করে দেয় এবং যেকোনো পরিস্থিতিতে ভাল সিদ্ধান্ত দেওয়ার অভ্যাস তৈরি করে।

আমি যখন আমার পুরনো অভ্যাসে ফিরে যেতে চাইতাম,তখন আমি পরিবর্তনের উপকারিতা এবং অন্যের সফলতা দেখে নিজেকে মনে করিয়ে দিতাম যে তাদের রুটিনই তাদেরকে সুযোগ করে দিয়েছে বিশ্ব পরিবর্তনে। যদি আপনি নিজেকে খারাপ অভ্যাসে নিয়ে যাওয়া থেকে বিরত রাখতে চান, এগুলো খেয়াল করুন।

ছোট ও সাধারন অভ্যাস থেকে শুরু করুন: আপনার সন্ধ্যার রুটিন জটিলতা এবং ঝামেলা মুক্ত হতে হবে। সঠিক পথে প্রতিটি পদক্ষেপ আপনাকে সফলতার কাছাকাছি নিয়ে যাবে। রাতের পেঁচা হওয়ার মাঝে কিন্তু কল্পনাবিলাসী ব্যাপার আছে, কিন্তু গবেষণায় এটাই প্রমানিত হয়েছে যে সফলতা তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যাওয়ার মাধ্যমেই কিন্তু আসে।

আপনি সন্ধ্যা কিভাবে কাটান সেটাই হল বড় ব্যাপার। উদাহরণসরূপ আপনি সন্ধ্যার সময়টা ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস থেকে দূরে চলে এসে বই পড়া অথবা আন্তরিক ভাবে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে পারেন। এর থেকেও যদি আপনি বেশি করতে প্রস্তুত থাকেন এবং আপনি সফলতার মুখ দেখতে চান তাহলে সন্ধ্যার রুটিনে এই পদক্ষেপগুলো অনুসরণ করুন।

১) প্রতিদিন তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যাবেন এবং ঘুম থেকে উঠবেন। ২) ঘুমাতে যাওয়ার ১ ঘণ্টা আগে ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস থেকে দূরে থাকুন এবং পরিবারের সাথে সময় কাটান। ৩) দিন শেষে আপনার কোন কাজটা ঠিক হয়েছে আর কোনটি হয়নি তা পর্যালোচনা করা। ৪) পরেরদিন সকালের জন্য পরিকল্পনা করা। ৫) প্রতিদিন ঘুমানোর নির্দিষ্ট সময় মেনে চলা।

এই পাঁচটি পদক্ষেপ আপনাকে চিন্তা মুক্ত করে এবং সঠিক সময়ে ঘুমাতে যেতে সাহায্য করে। যখন আপনি ঘুমাতে যান তখন আপনার অবচেতন মন পরদিন সকালের কাজের পরিকল্পনা করে ঘুমাবে। আপনি যদি সন্ধ্যার রুটিন মেনে চলেন তাহলে তা আপনার ভাল অভ্যাস গঠন করে সফলতার শিখরে পৌছে দিবে।

More News Of This Category